ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

ভোটের মাঠে সক্রিয় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা : খুটাখালীতে জমে উঠেছে ইউপি নির্বাচন

image_152081_0সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও, কক্সবাজার :::

আগামী ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় প্রার্থীদের সমান্তরালে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও। ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাশীল আ’লীগের ১ জন, জাতীয় পার্টির ২ জন, বিএনপি’র ১ জন, ও স্বতন্ত্র প্রতীকে ৩ জন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। এদিকে নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই ভোটের মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠছে ¯তন্ত্র প্রার্থীরা। ফলে দলীয় প্রার্থীদের চোখে ঘুম নেই।

জানা যায়, খুটাখালী ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন এ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান। তার রয়েছে ইউনিয়নে বিশাল ভোট ব্যাংক। অপরদিকে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক তিন বারের সফল মেম্বার আলহাজ্ব জয়নাল আবদীন ও খুটাখালীর সাবেক স্বর্ণপদক প্রাপ্ত চার বারের চেয়ারম্যান আকতার কামাল চৌধুরীর কনিষ্ট পুত্র আরফাত কামাল জিকু। তাদের মধ্যে আলহাজ্ব জয়নাল আবদীনের ব্যক্তি ইমেজের কারনে ভোটারদের মাঝে তার গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে বেশি। আরফাত কামাল জিকু, যিনি খুটাখালী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও সংগঠক। বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও সব দলে তার গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে। এবার তার পক্ষে নিজ এলাকায় গনজোয়ার উঠেছে। অন্যদিকে সাধারণ ভোটারদের নজরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান। তার কারনে নির্বাচনী মাঠ বদলে গেছে। এ ইউনিয়নে আরেক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জয়নাল আবদীন। তিনি আ’লীগের প্রতীকের মনোনয়ন চাইলেও দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি। ফলে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছে তিনি। তার পক্ষে আ’লীগের একটি অংশ কাজ করছে।

এ ইউনিয়নে জাতীয় পার্টি লাঙ্গল মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রহমান। আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী সাংবাদিক আরমান চৌধুরী । তিনি জাতীয় পার্টি (জেপি) মনোনীত একক প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন।

অন্যদিকে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন জয়নাল আবদীন। তার প্রতি আঞ্চলিক টান থাকায় এবারের নির্বাচনে ভোটাররা তাকে নিয়েও হিসাব নিকাশ করছেন। ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাহাদুর হক, যিনি আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি ইউনিয়নের বিশাল ভোট ব্যাংকের মালিক বলে পরিচিত আর্শীবাদ নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবেই ভোট চাইছেন। ইউনিয়নের ভোটের হাওয়া যতই বইছে ততই প্রার্থীদের নিকট থেকে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নিতে ফাঁদ পেতে বসে আছেন প্রত্যেক এলাকায় কিছু কৌশলী লোক।

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এসব কৌশলীরা নিজের অধীনে নিদ্দিষ্ট সংখ্যক লোক তার হাতে থাকার কথা জানিয়ে প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। আর এক ধরনের কৌশলী আছেন, যারা প্রার্থীদের কাছে এসে জানায়, কিছু লোক আপনার ডাকের অপেক্ষায় আছে, তাদের জন্য কিছু সম্মানীর ব্যবস্থা করা গেলে লোকগুলো আমাদের পক্ষে কাজ করবে। আর কিছু কৌশলী আছেন, তারা প্রার্থীদের কাছে গিয়ে বলেন, যথাযথভাবে মূল্যায়িত না হওয়ার কারণে আপনার পক্ষের বেশ কিছু লোক অমুক প্রার্থীর সাথে গোপনে যোগাযোগ শুরু করেছে তাদের ধরে রাখা দরকার। অনিচ্ছাসত্বেও এমতবস্থায়, প্রার্থীরা বাধ্য হচ্ছেন, এসব পাতানো ফাঁদে পা দিতে। কারন, কিচ্ছু করার নেই। কোন অবস্থাতেই প্রার্থীরা না বলতে পারছেনা এসব ফাঁদ কৌশলীদের। অন্যদিকে পুরো খুটাখালী জুড়ে এখন ক্লাব ব্যবসা রমরমা হয়ে উঠেছে। ২০/৩০ জন উঠতি বয়সের কিশোর কিংবা যুবকদের নিয়ে এসব ক্লাব গঠিত। বেশীর ভাগ ক্লাবের সদস্যরাই ভোটার নন। তা সত্বেও আমার ভাই তোমার ভাই বলার জন্য কিংবা মিটিংয়ে জনসমাগম বৃদ্ধি ও প্রতিপক্ষ কিংবা প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীর গোপন খবরা খবর সংগ্রহ করতে এসব ক্লাবের সদস্যদের রয়েছে বিপুল চাহিদা। সুযোগ বুঝে নামসর্বস্ব ও ব্যাঙ্গের ছাতার মত রাতারাতি গজে উঠা এসব ক্লাবের সদস্যরা প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জিতিয়ে দেয়ার আশ্বাসে মেরে দিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। অত্যন্ত সক্রিয় এসব ধান্ধাবাজদের কবলে পড়ে প্রার্থীদের যেন ত্রাহি অবস্থা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে, খুটাখালীর প্রায় অর্ধশতাধিক প্রার্থী অত্যন্ত মিনতিভরা কন্ঠে তাদের এ দুরাবস্থার কথা জানিয়েছেন। কোন কোন প্রার্থী এ ধরনের দুরাবস্থা থেকে কিভাবে পরিত্রান পাওয়া যায় তার উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন বলেও জানান।

পাঠকের মতামত: