ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

মিয়ানমারের রিপোর্টেই মিলেছে রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রমাণ

অনলাইন ডেস্ক : রাখাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতন তদন্তে মিয়ানমার সরকারের স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে গণহত্যার কথা অস্বীকার করা হলেও উঠে এসেছে নির্মম অত্যাচার নির্যাতনের চিত্র।

প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম জানায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর হামলার মুখে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।

তবে একাধিক আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেলেও গণধর্ষণসহ বেশ কিছু বিষয়ে ব্যাপক মিথ্যাচার করা হয় মিয়ানমার সরকার সমর্থিত ওই প্রতিবেদনে।

এদিকে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের আদেশ পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন।

রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশের আগেই গত সোমবার মিয়ানমার সরকার গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশন ‘আইসিওই’র প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার উদ্দেশ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তবে শুক্রবার মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতিতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের সারমর্মে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা চৌকিতে সশস্ত্রগোষ্ঠী আরসার হামলার জেরে রোহিঙ্গাদের ওপর পাশবিক নির্যাতনে মেতে ওঠে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

এতে বলা হয়, ২৫ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর যে অভিযান চালায় তাতে যুদ্ধাপরাধসহ মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

রাখাইনের বেশ কয়েকটি গ্রামে হামলা চালানোর পাশাপাশি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে দেশটির সামরিক বাহিনী। ধ্বংস করা করা ৪০ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি। সেনাবাহিনীর অভিযানে ৩৭৬ জন আরসা সদস্য ছাড়াও ১৩৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহতের দাবি করা হলেও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক তদন্ত প্রতিবেদন বলছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হামলায় কয়েক হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।


তবে রোহিঙ্গা নারীদের গণধর্ষণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছে স্বাধীন তদন্ত কমিশন। হামলার জেরে ৪ লাখ ১০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। রাখাইন ছাড়ার কারণ হিসেবে মিয়ানমারের আভ্যন্তরীণ সংঘাতকে দায়ী করে মিথ্যাচার করা হয় ওই প্রতিবেদনে। এটিকে ‘স্বাধীন তদন্ত কমিশন’ বলা হলেও বাস্তবে তা কতোটা স্বাধীন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এদিকে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের আদেশকে স্বাগত জানিয়ে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মুখপাত্র লিজ থ্রোসেল বলেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের আইন ও দলিল অনুযায়ী আদালতের আদেশ মানতে বাধ্য মিয়ানমার। কোন ধরণের শর্ত ছাড়া খুব দ্রুত আদালতের রায় পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।

গত বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসের হেগে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ ও তাদের সুরক্ষারবিষয়ে ৪ মাসের মধ্যে অগ্রগতি জানাতে মিয়ানমারকে নির্দেশ দন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত।

পাঠকের মতামত: