ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ, বসতঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্টান ভাংচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: চকরিয়া পৌরসদরের চিরিঙ্গা বাসষ্টেশনের বাইতুশ শরফ সড়কে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার প্রথম দফায় বেলা ২টা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সামনে এ পৃথক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে ২য় দফায় রাত ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পৌরশহরে নামার চিরিংগায় হামলা-ভাংচুরের এক পর্যায়ে সংঘর্ষের রুপ নেয়। এ সময় নুরুল হোছাইন (২৭) নামে এক ব্যবসায়ি আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষের সময় উত্তেজিত নেতাকর্মীরা বসতঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেশকিছু গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় ব্যবসায়ী ও পথচারীরা ভয়ে দ্বিকবিদ্বিক ছুটাছোটি করতে থাকে। মহুর্তের মধ্যেই পৌরশহরের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনার পর থেকে পৌর শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নেতাকর্মীরা জানান, বুধবার বিকালে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর সংবর্ধনাস্থল চকরিয়া সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে যাওয়ার জন্য চিরিঙ্গা ডাক বাংলোর সামনে প্রস্তুতি নেন দলীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় চকরিয়া পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন আমুর নেতৃত্বে সেখানে অবস্থান নেয়। এর আগে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে অপর একটি গ্রুপ চকরিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জড়ো হয়। পৃথকস্থানে নেতাকর্মীদের জড়ো করাকে কেন্দ্র করে চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন আমুর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুজিবুল হক মুজিব মুখে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে আহত হন। বিষয়টি নিয়ে এতে আবারো দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে সিনিয়র নেতারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করলে পরে দুইগ্রুপই সংবর্ধনাস্থলে চলে যায়।
চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুজিবুল হক মুজিব চকরিয়া নিউজকে বলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর সংবর্ধনাস্থলে যাওয়ার জন্য পৃথকস্থানে জড়ো হওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তাদের বিরোধটি মিমাংসা করে দেওয়া হয়। কিন্তু সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে রাত ৮টার দিকে পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী ও আওয়ামীলীগ নেতা আহমদ রেজার নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন নেতাকর্মী লাঠিসোটা নিয়ে আমার বসতঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এতে আমার লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়।এ সময় কাউন্সিলার মুজিব হামলার ভয়ে নিজে ও তার দলবল নিয়ে গা ঢাকা দেয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন ।

কাউন্সিলর মুজিবুল হক মুজিব আরও বলেন, আতিক উদ্দিন চৌধুরী ও আহমদ রেজার অনুসারীরা ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন আমুর ছোট ভাই ব্যবসায়ী নুরুল হোসেনের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। পরে পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী ও আওয়ামীলীগ নেতা আহমদ রেজার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় শ্লোগান দিয়ে মিছিল করে এবং মুজিব বাহিনীকে ধাওয়া দেয়।
চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী চকরিয়া নিউজকে বলেন, সংবর্ধনায় যাওয়ার বিষয় নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে সেখান থেকে নেতাকর্মীরা সংবর্ধনায় চলে যায়। রাত ৮টার দিকে কাউন্সিল মুজিবুল হকের অনুসারিরা তার বসতঘরে হামলা চালায় বলেও দাবী করেন তিনি।

পাঠকের মতামত: