ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

লামার ফাইতংয়ে পাচঁ কিলোমিটারে ৩০ অবৈধ ইটভাটা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: বান্দরবানের লামা উপজেলায় একটি ইউনিয়নের ৫ কি:মিটার এলাকা জুড়ে এখন ধুলা আর ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে। অবৈধ ৩০টি ইটভাটার কারনে এসব এলাকায় পরিবেশ হুমকির মধ্যে রয়েছে। জনবসতি গ্রাম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠারে পাশে এই ইটভাটা করা হয়েছে। আশপাশের বনাঞ্চল ধ্বংস করে কাঠ এনে সেসব ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে ইট।

পরিবেশ ছাড়পত্র বা জেলা প্রশাসনের ছাড়পত্র ছাড়া গড়ে উঠা ইটভাটার ধোঁয়া আর ধুলাবালির কারনে এলাকায় বসবাস করা কঠিন হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।

পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবানের সহকারী পরিচালক এ কে এম সামিউল আলম চকরিয়া নিউজকে জানান, পাহাড়ের আধা কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন নিষেধ। কিন্তু ফাইতংয়ের ইটভাটাগুলোর বেশির ভাগ পাহাড়ের ওপর করা হয়েছে। কাঠ পোড়ানো নিষেধ। কিন্তু এগুলোতে বনের কাঠ পোড়ানো হয়। সব কটিকে সম্প্রতি জরিমানা করা হয়। আবার অভিযান চালানো হবে। তারা উচ্চ আদালতে রিট করে এসব ভাটা চালু রেখেছে। এসব ভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র বা জেলা প্রশাসনের ছাড়পত্র কোনোটির নেই।

ফাইতং ইউনিয়নে অবৈধভাবে গড়ে উঠা ইটভাটা গুলো অধিকাংশ ড্রাম চিমনি ও পাকা চিমনির মাধ্যমে ইটপুড়ানো কার্যক্রম চালাচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, ইট ভাটায় ইট তৈরি করতে চুল্লিতে ভরছে বনের গাছ। জ্বালানি হিসাবে বনের গাছ কেটে সারিবদ্ধভাবে স্তুপ করে রাখা হয়েছে চুল্লির পাশে। ইটভাটার পাশ থেইে প্রতিনিয়ত স্ক্যাভেটর দিয়ে কেটে আনা হচ্ছে পাহাড়ের মাটি।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ অনুযায়ী কোনো পাহাড় বা টিলার উপরিভাগে, ঢালে বা তৎসংলগ্ন আধা কিলোমিটারের মধ্যে সমতলে ইটভাটা স্থাপন অবৈধ। এ ছাড়া আবাসিক এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক কিলোমিটারের মধ্যে এবং বনাঞ্চলের দুই কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না।

এই প্রসঙ্গে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরে-জান্নাত রুমি চকরিয়া নিউজকে বলেন, ফাইতংয়ের ইটভাটাগুলো শুধু স্থানীয়দের দুর্দশা নয়, প্রশাসনেরও গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্ধ করলে মালিকরা আদালতে যেতে পারেন। এ জন্য নানাভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে, যাতে মালিকরা নিজেরাই ইটভাটাগুলো বন্ধ করতে বাধ্য হন।

ফাইতং ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি কবির আহম্মদ চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘লাখ লাখ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে ইটভাটা মালিকরা ইটের ব্যবসা করছে। আমরা সকলের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রতিবছর ইটভাটা করে থাকি।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. মোয়াজ্জম হোসাইন চকরিয়া নিউজকে বলেন, ফাইতংয়ে ৩০টির মতো ইটভাটা রয়েছে। সব কটিই অবৈধ। কিছুদিন আগে এগুলোকে জরিমানা করা হয়েছিল। তারপরও বন্ধ হয়নি।

ফাইতংয়ের ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন চকরিয়া নিউজকে বলেন, ইটভাটাগুলো সব অবৈধ। তারপরও এলাকায় কিছু কাজকর্ম হচ্ছে। আর ইটভাটার গাড়ি চললে তো রাস্তা ভাঙবে। তাদের জন্য নতুন একটি রাস্তা করা হচ্ছে।’

পাঠকের মতামত: