ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়া সুন্দরবন রেঞ্জের সাত পয়েন্টে চোরাই কাঠ দিয়ে বোট তৈরীর হিড়িক

চকরিয়া সুন্দরবন রেঞ্জের উজানটিয়া বনবিটের অধীন বদরখালী সেতুর পাশে বর্তমানে ফিশিং বোট তৈরী চলছে।

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

চকরিয়া সুন্দরবন রেঞ্জের উজানটিয়া বনবিটের অধীন সাত পয়েন্টে সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের চোরাই কাঠ দিয়ে দেদারছে চলছে ফিশিং বোট তৈরীর হিড়িক। বনবিভাগের কোন ধরণের অনুমতি ছাড়াই কতিপয় লোকজন বদরখালী সেতুর পাশে এবং মাতামুহুরী নদীরজুড়ে অন্তত সাতটি পয়েন্টে বর্তমানে ফিশিং বোট তৈরীতে নেমেছে।

অভিযোগ রয়েছে, বোট তৈরীতে জড়িতদের সাথে বনকর্মীদের অলিখিত সমঝোতা রয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে বদরখালী সেতুর পাশে এবং মাতামুহুরী নদীর তীরে বোট তৈরীর কাজ অব্যাহত থাকলেও তা বন্ধে বনকর্মীরা পালন করছে নীরব ভুমিকা।

পরিবেশ সচেতন মহলের অভিযোগ, অবৈধ ফিশিং বোট তৈরীতে বেসুমার বিশাল আকৃতির গর্জন, তেলসুল ও চাপালিশ গাছ ব্যবহার হওয়ার কারনে কক্সবাজার উত্তর, চট্টগ্রাম দক্ষিন ও লামা বনবিভাগের মুল্যবান বনজসম্পদ দিন দিন উজার হতে চলছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতিবছর শুস্ক মৌসুমে চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীতে জেগে উঠা চরে কতিপয় চক্র বনাঞ্চলের মাদার ট্রি নিধন করে একাধিক ফিশিং বোট তৈরীর কাজ শুরু করেন। অন্যবছরের মতো এবছরও নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বর্তমান মৌসুমে চলছে ফিশিং বোট তৈরীর কার্যক্রম।

সম্প্রতি সময়ে একসঙ্গে ৮টি অবৈধ ফিশিং বোট তৈরী করা হচ্ছে চকরিয়া উপজেলার উপকুলীয় জনপদের বদরখালী সেতুর পাশে। এসব বোট তৈরীতে বনবিভাগের কোন অনুমতি নেই।

অভিযোগ উঠেছে, কয়েকমাস আগে বদরখালী সেতুর পাশে নির্মানাধীণ এসব ফিশিং বোট মালিকদের সঙ্গে গোপন আতাঁত করেছেন উজানটিয়া বনবিট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি চক্র। ফলে বদরখালী সেতুর পাশে ফিশিং বোট তৈরী অব্যাহত থাকলেও বনকর্মীরা রয়েছেন দর্শকের ভুমিকায়।

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উজানটিয়া বনবিট কর্মকর্তা সাইফুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের অস্থায়ী অফিস কার্যক্রম চলছে বদরখালীতে ভাড়া করা একটি ঘরে। আমি সেখানে যাইনা। আদালতে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। সেই কারণে একজন বনকর্মী এসব দেখভাল করছেন। তিনি বিশ^ময় প্রকাশ করে বলেন, ফিশিং বোট তৈরীতে জড়িতদের সঙ্গে আমাদের কোন ধরণের সম্পৃক্তা নেই। তারপরও আমার অফিসের কোন লোক এ ধরণের কাজে জড়িত থাকলে এব্যাপারে ব্যবস্থা নেবো।

জানতে চাইলে চকরিয়া সুন্দরবন রেঞ্জের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রেঞ্জ কর্মকর্তা (মুল দায়িত্ব ভোমারিয়াঘোনা রেঞ্জ) কেএম হাফিজুর রহমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, চকরিয়া সুন্দরবন রেঞ্জের অধীন বদরখালী সেতুর পাশে এত পরিমাণ ফিশিং বোট তৈরীর করার বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনি বলেছেন, সেইসুবাদে জানলাম। তবে বিষয়টি আমাকে বিট কর্মকর্তাও কোনদিন জানাইনি।

তিনি বলেন, আমার জানামতে যেসব ফিশিং বোট তৈরী হচ্ছে তাঁর কোনটি বনবিভাগ থেকে অনুমতি নেয়নি। তবে বোট তৈরীতে ব্যবহৃত কাঠ সমুহ সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে অবৈধভাবে সংগ্রহ করা না কী নিলামের কাঠ তা দেখে বলতে হবে। তারপরও বিষয়টি যেহেতু এখন অবগত হলাম, এখন এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: