ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

ফাইতং এ পাহাড় কেটে মাটি বিক্রীর ধুম: প্রশাসনের রহস্যজনক নিরবতা

মনির আহমদ, চকরিয়া ::: কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিরিংগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির মাঠ ভরাটের বাহানা দিয়ে পাহাড় নিধন চলছে। পুলিশ ও সরকারী দলের প্রভাব খাটিয়ে বন ও পরিবেশ দপ্তরকে ম্যানেজ করে গত ১ মাস ধরে প্রভাবশালীদের কাছে মাটি বিক্রী অব্যাহত রয়েছে।

দিবালোকে প্রকাশ্য স্থানে দিবারাত্রী ২৫-৩০ টি ট্রাককে ২টি স্কেভেটরে মাটি কেটে বিক্রী করছেন জামিনে আসা ফাইতং এর ইয়াবা কারবারী সাবেক জামাত কর্মী ও বর্তমান ফাইতংয়ের এক আওয়ামীলীগ নেতা । ইয়াবা কারবারের পর এবার পাহাড় কেটে মাটি বিক্রীতে নেমেছেন তিনি।

কক্সবাজার মহাসড়ক সংলগ্ন চকরিয়া থেকে ৫০০ গজ দুরত্বে ফাইতং এর মহেশখালীয়া পাড়া পাহাড়ে ২ টি স্কেভেটর দিয়ে এ পাহাড় নিধন চলছে । দুইটি পাহাড় কেটে মাটি বিক্রী অব্যাহত রাখলেও প্রশাসন বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন ঘুর্নাক্ষরে টের পাননি তারা। সংশ্লিষ্ট লামার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম কাইসার বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার দ্বায়ীত্ব বন বিভাগের নয় পরিবেশ অধিদপ্তরের। তাই এ ব্যাপারে পরিবেশের লোকজনের সাথে কথা বলুন।

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বান্দরবানের কথা আমাকে কেন? বান্দরবানের কর্মকর্তাকে জানান। বান্দরবানের দ্বায়ীত্বে কে আছে জানতে চাইলে তিনি নাম-ঠিকানা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে ফোনের লাইন কেটে দিয়ে দায়ীত্ব শেষ করেন।

সর্বশেষ লামার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর এ জান্নাত রুমী বলেন, “লামার ফাইতং এ পাহাড়কাটার জন্য কোন ধরনের অনুমতি কাউকে দেয়া হয় নি। আমি এখন ই শুনলাম পাহাড় কাটার খবর।” তিনি এ ব্যাপারে খবরাখবর নিয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বস্থ করেন।

সরেজমিনে জানা যায়, চকরিয়া মহাসড়ক সংলগ্ন চিরিঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির মাঠ ভরাটের মাটি সরবরাহের দ্বায়ীত্ব নেন নিকটস্থ লামা ফাইতং এর বাসিন্দা হাবিবুর রহমানের পুত্র এইচ এম আহসান উল্লাহ। তিনি চকরিয়া থানার ইয়াবা মামলার জেল ফেরত ইয়াবা কারবারী।

লামা বনবিভাগের ফাইতং এ তার বাড়ী সংলগ্ন ধুইল্লাছড়ি সরকারী প্রাইমারী স্কুল লাগোয়া দুইটি পাহাড়ে ২টি স্কেভটর ব্যবহার করে দিবা-রাত্রী ১ মাস ধরে পুলিশ ফাঁড়ী সহ এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছে মাটি বিক্রী করে যাচ্ছে।

পাহাড় কাটার ফলে পাহাড়ের উপরের কয়েকটি বাড়ী ভেঙ্গে পড়লে তাদের ক্ষতি পুরন দিয়ে মাটি বিক্রী অব্যাহত রেখেছে। এতে হুমকীর মুখে পড়েছে পরিবেশ ও প্রতিবেশ।

সর্বশেষ সংশ্লিষ্ট এলাকার রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ তোসাদ্দেক হোসেন বলেন, পাহাড়গুলো এইচ এম আহসান উল্লাহর খতিয়ান ভুক্ত জমি। তাই তারা এ ব্যাপারে আপাতত কিছু করতে পারছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, আহসান উল্লাহ একজন প্রভাবশালী ক্ষমতাধর ব্যক্তি। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তিনি পাহাড় কাটছেন। না হয় এসব করেন কি ভাবে? রেঞ্জ কর্মকর্তা তোসাদ্দেক বরং উল্টো আহসানকে ফোন করে কোন সমস্যা নাই বলে জানিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। তাই প্রশাসন নিরব।এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতন মহল।

পাঠকের মতামত: