ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় পুরাতন মহাসড়কের ছিকলঘাট সেতু যানবাহন উঠলেই কেঁপে উঠে…

জহিরুল আলম সাগর, চকরিয়া ::  একের পর এক নাট-বল্টু খুলে পড়ছে সেতুর। এতে নড়বড়ে হয়ে পড়েছে সেতুর রেলিং ও পাঠাতন। কোনো যানবাহন উঠলেই কেঁপে উঠে। পাঠাতনের মাঝখানে বড় বড় গর্ত। অনেক সময় সেতুর ওপরই যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে আটকে থাকে যানবাহন।

এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রী ও চালকদের। এই চিত্র কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের ছিকলঘাট সেতুর।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ, চকরিয়ার কার্যালয় সূত্র জানায়, ছিকলঘাট স্টেশন এলাকায় বইশ্যার ছড়ার ওপর একসময় পাকা সেতু ছিল। ২৫ বছর আগে ওই পাকা সেতু ধসে পড়ে। এরপর চলাচলের জন্য ৬০ ফুটের একটি বেইলি সেতু নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে সেতুটি নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এটি দিয়ে চলাচল এখন ঝুঁকিপূর্ণ।

গত শুক্রবার বিকেল তিনটার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, হেলেদুলে সেতু পার হচ্ছে যাত্রীবাহি বিভিন্ন গাড়ি। সেতুর পাটাতনের ফুটো সারাতে ওপরে পিচঢালাই করা হয়েছে। সেতুর এক পাশে পিচ ঢালাই উঠে গেছে। এ কারণে উচুঁ-নিচু হয়ে গেছে সেতু।

এছাড়াও পিচঢালাই অংশে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। পাঠাতনের ওপর পিচঢালাই দেয়ার কারণে পাটাতনের ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে। এমন বেহাল অবস্থায়ও ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশা। তবে ভারী যানবাহন চলাচল করছে না।

লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা সরওয়ার উদ্দিন চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘অন্তত পাঁচ বছর ধরে শিকলঘাট সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। খুব বিপদজ্জনক অবস্থায় গাড়ি পার হচ্ছে। যে কোনো মুহুর্তে ধসে পড়তে পারে সেতুটি।’

সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক হেমায়েত উদ্দিন চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘লক্ষ্যারচর ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নের বাসিন্দারা উপজেলা সদরে যেতে এই সেতুটি ব্যবহার করে থাকেন। গাড়ি নিয়ে সেতুতে উঠলে বুক কেঁপে উঠে, কখন জানি ধসে পড়ে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে সেতুর মাঝখানে গর্তের মধ্যে পানি জমে থাকলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।’

লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কাইছার চকরিয়া নিউজকে বলেন, স্থানীয় সাংসদ সেতুটি পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া সড়ক বিভাগকে লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে কয়েকবার লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু কেন নতুন সেতু নির্মিত হচ্ছে না তা কারও জানা নেই।’

জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের চকরিয়া কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী আবু এহেছান মুহাম্মদ আজিজুল মোস্তফা চকরিয়া নিউজকে বলেন, পুরোনো হওয়ায় সেতুটি সংস্কার করেও ঝুঁকিমুক্ত করা যাচ্ছে না। এই সেতুটি নির্মাণে কয়েকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু প্রকল্প তৈরি করতে দেরি হচ্ছে।

চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাংসদ জাফর আলম সড়ক বিভাগের কাছে শিকলঘাট সেতুটি নিয়ে চাহিদাপত্র দেবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘শিকলঘাট সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্তত ৫-৮ বছর ধরে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে আছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতু যাতে নির্মিত হয়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

পাঠকের মতামত: