ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

লামায় ১০ দিনের ব্যবধানে আরেক বুনো হাতির হত্যা না মৃত্যু !

লামা প্রতিনিধি ::  মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে বান্দরবানের লামা উপজেলায় আরো একটি বাচ্চা বুনো হাতির মৃত দেহ পাওয়া গেছে। উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কুমারী এলাকার দুর্গম পাহাড়ি চাককাটার ঝিরিতে হাতিটির মৃত দেহ পাওয়া যায়। মৃত হাতির বয়স আনুমানিক আড়াই থেকে তিন বছর হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। খবর পেয়ে বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন খান, ইউনিয়ন পরিষদ চেযারম্যান মো. জাকের হোসেন মজুমদার, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুয়েল মজুমদার ও সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এদিকে কেউ বলছেন রোগাক্রান্ত হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে, আবার কেউ কেউ বলছেন বিদ্যুতের ফাঁদে পড়ে মারা যায় হাতিটি। একের পর এক হাতির মৃত্যু নিয়ে সর্ব মহলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে একই এলাকার রহমত উল্যাহর রাবার বাগানে ১টি, ২০১৫ সালের ফেব্রæয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে গজালিয়া ইউনিয়নের হাইমারা ঝিরিতে ১টি, ইয়াংছা এলাকার সেলিমুল হক চৌধুরীর বাগানে ২০০৪ সালে ১টি ও সবশেষ গত ৬ নভেম্বর আরো ১টিসহ মোট ৫টি বুনো হাতির মৃতদেহ পাওয়া যায়।

সূত্র জানায়, শনিবার সকালে কুমারী চাককাটার ঝিরিতে একটি বন্য হাতির মৃতদেহ দেখে অধিবাসিরা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. আলমগীর চৌধুরী ও বন বিভাগ কর্তৃপক্ষকে খবর দেন স্থানীয়রা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন অধিবাসী জানান, বিভিন্ন সময় গভীর জঙ্গল থেকে খাবারের সন্ধ্যানে লোকালয়ে নেমে হাতির পাল ওই এলাকায় হানা দিয়ে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, মানুষ ও বাগানের ক্ষয়ক্ষতি করে থাকে। এ থেকে রক্ষা পেতে বাগান ও ফসলি জমির চার পাশে প্রায় সময় বিদ্যুতের ফাঁদ পেতে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করতেন স্থানীয়রা। এক পর্যায়ে গত রাতে বুনো হাতির পাল খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নামলে বাচ্চা হাতিটি পাতানো বিদ্যুতের তারের সাথে স্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকার অধিবাসিরা বলেন, সম্ভবত হাতির বাচ্চাটি রোগাক্রান্ত ছিল। এতে করে তার মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া সেখানে কখনো বিদ্যুতের ফাঁদ পাতানো হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুয়েল মজুমদার বলেন, মৃত হাতিটির শুঁড়ে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এটির প্রাথমিক সুরতহাল ও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য সেগুলো চট্টগ্রাম পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে হাতিটিকে হত্যা করা হয়েছে নাকি, স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।

বুনোহাতির মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে লামা বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন খান জানায়, প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: