ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

ফোর মার্ডারে জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুত বিচারের দাবী, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা পরিবারের

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::  কক্সবাজারের উখিয়া পূর্ব রত্নাপালং বড়ুয়া পাড়ায় একই পরিবারের চারজনকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় জড়িত প্রকৃত আপরাধীদের শনাক্ত ও দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার কার্য সমাপ্ত করার দাবী জানিয়েছে বৌদ্ধরা। এ দাবীতে আগামী ১৫ নভেম্বর উখিয়া কোটবাজার স্টেশনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে। একই দাবী নিয়ে ২৪ নভেম্বর কক্সবাজার আদালত প্রাঙ্গনে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেবে বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব ঘোষণা দেয়া হয়।
কক্সবাজার জেলা বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষুর লিখিত বক্তব্য সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে পাঠ করেন সংগঠনটির উখিয়া উপজেলা শাখার যুগ্মসম্পাদক শিশু বড়ুয়া।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও উখিয়ায় একই পরিবারে চারজনকে হত্যার মতো এমন নৃশংস ঘটনা কোথাও ঘটেছে বলে আমাদের জানা নেই। ঘটনার পর থেকে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মাঝে আতঙ্ক ও ভীতি সঞ্চার হয়েছে। দেশের প্রতিটি মানুষ, বিবেকবান সমাজ নারকীয় ঘটনায় অত্যন্ত ব্যথিত। ঘটনার প্রকৃত রহস্য জানতে মুখিয়ে আছে বৌদ্ধ সমাজসহ স্থানীয় সব শ্রেনী পেশার মানুষ। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।

ঘটনায় নির্দোষ কোন ব্যক্তিকে জড়ানো হলে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যাবে। পার পেয়ে যাবে প্রকৃত অপরাধীরা। নিরপরাধ কাউকে যাতে ঘটনায় জড়ানো না হয়, সে বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তাসহ সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক বিপক বড়ুয়া, উখিয়া উপজেলা সভাপতি রনজিত বড়ুয়া, চকরিয়া উপজেলার সাধারণ সম্পাদক সুজিত বড়ুয়া, নিহত শ্রীমতি সখি বড়ুয়ার ছেলে রোকন বড়ুয়াসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে নিহতদের পরিবারের পক্ষে রোকন বড়ুয়া বলেন, আমার মা শ্রীমতি সখি বড়ুয়া (৬৫), স্ত্রী শ্রীমতি মিলা বড়ুয়া (২৫), ছেলে রবিন বড়ুয়া (৫) ও ভাতিজি সনি বড়ুয়া (৫)কে কি কারণে, কারা হত্যা করেছে? জানিনা। ঘটনার প্রায় দেড় মাসেও আসল রহস্য উদঘাটন হয়নি। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত।

তিনি বলেন, ঘটনা পরবর্তী প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা রাখলেও প্রকৃত অপরাধী সনাক্ত করা নিয়ে আমরা সন্দিহান। আমরা মনে করি, ঘটনার মূল হোতা কিংবা অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে দীর্ঘ সময় লেগে গেলে স্বজনদের হতাশ করবে, খুনিরা আত্মগোপনের সুযোগ পাবে। ঘটনায় নিরপরাধ কোন ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয়, আবার দোষিরাও যাতে পার পেয়ে না যায়, সে বিষয়ে প্রশাসনকে আরো সজাগ থাকতে হবে। আমার পরিবারে মতো আর কোন পরিবার যাতে ঘটনার শিকার না হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়া পূর্ব রত্নাপালং বড়ুয়া পাড়ায় অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হাতে একই পরিবারের চারজন নির্মমভাবে নিহত হয়। তারা হলো- শ্রীমতি সখি বড়ুয়া (৬৫), স্ত্রী শ্রীমতি মিলা বড়ুয়া (২৫), ছেলে রবিন বড়ুয়া (৫) ও ভাতিজি সনি বড়ুয়া (৫)। এ ঘটনায় নিহত শ্রীমতি মিলা বড়ুয়ার পিতা বাবু শশাং বড়ুয়া বাদি হয়ে পরের দিন ২৬ সেপ্টেম্বর উখিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং-৪৭/২-১৯। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে।

পাঠকের মতামত: