ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর আজ থেকে

নিউজ ডেস্ক ::  সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তি বা নিহতের উত্তরাধিকারীরা আর্থিক সহায়তা তহবিল থেকে নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ বা চিকিৎসার খরচ পাবেন। এ জন্য গঠন করা হবে আলাদা ট্রাস্টি বোর্ড। ট্রাস্টি বোর্ড গাড়ি মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় ও বিভিন্ন অভিযানে জরিমানা বাবদ আদায় করা অর্থ দিয়ে এই তহবিল গঠন করবে।

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ আজ শুক্রবার থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে। নতুন আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তার উত্তরাধিকারীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার এ বিধান রাখা হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ মিলবে না।

তবে পরিবহন শ্রমিকদের বড় ফেডারেশন-বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন বলছে, নতুন আইনে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে যে জরিমানা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অতিরিক্ত। অতিরিক্ত পণ্য বহন করলে ওয়েটস্কেলে ধরা পড়লেই জরিমানা আদায় করা হবে। কিন্তু মালামাল তোলার সময় ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির কাছ থেকে এ জরিমানা আদায় করা উচিত। অতিরিক্ত ওজনবাহী গাড়ির জরিমানা চালকের কাছ থেকে আদায় করা উচিত নয়।

নতুন আইনে বেপরোয়া বা অবহেলা করে গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনায় কেউ গুরুতর আহত বা কারো প্রাণহানি হলে অপরাধীর সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তবে তদন্তে যদি দেখা যায়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে চালকের বেপরোয়া গাড়ি চালানোতে মৃত্যু হয়েছে তবে তা হত্যাকাণ্ড বলে বিবেচিত হবে।

আর এতে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী ওই চালকের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে প্রাণদণ্ড। এটা তদন্তসাপেক্ষ এবং তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্ধারণ করবে। এ মামলাটি অজামিনযোগ্য ধারার। আগের আইনে মামলার ক্ষেত্রে তিন বছরের কারাদণ্ড ছিল ও তা ছিল জামিনযোগ্য। অতিরিক্ত ওজন বহন করে গাড়ি চালালে চালকের এক বছরের জেল বা অনধিক এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

নতুন আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বা নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য গঠন করা হবে ‘আর্থিক সহায়তা তহবিল’। কর্তৃপক্ষ বিধি দ্বারা নির্ধারিত হারে ও পদ্ধতিতে গাড়ির মালিক ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে গাড়ির শ্রেণি অনুসারে বার্ষিক বা এককালীন চাঁদা আদায় করবে। এই চাঁদা দিয়েই তহবিল সংগ্রহ হবে এবং এ চাঁদা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর্থিক সহায়তা তহবিল ও ট্রাস্টি বোর্ডের কার্যক্রম পরিচালনায় ট্রাস্টি বোর্ডে সরকার অনুমোদিত কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হবে।

আর্থিক সহায়তা তহবিল পরিচালনার জন্য একজন চেয়ারম্যানের অধীনে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হবে। তাতে মহাসড়ক পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার ১১ জন প্রতিনিধি থাকবেন। এটি স্বশাসিত সংস্থা হবে। সংস্থাটি মামলা করতে পারবে। এই বোর্ডের কার্যালয় থাকবে ঢাকায়। তবে অন্যত্র শাখা থাকতে পারে। ট্রাস্টি বোর্ড সড়ক দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত বা নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীকে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ নির্ধারণ ও তা মঞ্জুর করবে। আর এ পুরে প্রক্রিয়াটি তদারক করবে বোর্ড। এ তহবিল জরিমানা ও চাঁদা আদায় ছাড়াও সরকারি অনুদান, মালিক সমিতির অনুদান, মোটর শ্রমিক সংগঠনের অনুদান বা অন্য কোনো বৈধ উৎস থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে গঠন করা হবে।

পাঠকের মতামত: