ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

‘স্ট্রোক হওয়ার আগেই প্রতিরোধ করুন’ স্ট্রোক দিবসে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ::  ‘প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের স্ট্রোক হতে পারে, সেই একজন যেন আপনি না হন’ স্লোগানে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে (চমেক) ‘বিশ্ব স্ট্রোক দিবস’ পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে কলেজের নতুন একাডেমিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া চমেক হাসপাতাল ক্যাম্পাসে শোভাযাত্রা বের করা হয়। চমেক শিক্ষক সমিতির সহায়তায় নিউরোলজি ও নিউরোসার্জারি বিভাগ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে ‘স্ট্রোক হওয়ার আগেই প্রতিরোধ করুন’ শীর্ষক মূল বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রোকের রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের নিউরোলজি ওয়ার্ডের রোগী ভর্তির পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই সেটি স্পষ্ট হয়ে উঠে। মূলত আমাদের জীবনযাপনের পরিবর্তন এবং অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের কারণে স্ট্রোক বাড়ছে। স্ট্রোকের চিকিৎসা শতভাগ নিরাময়যোগ্য না হলেও নিয়মতান্ত্রিক চলাফেরা করে সুস্থ থাকা সম্ভব।’

নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী বলেন, ‘স্ট্রোক দুই ধরনের একটি হল-ইস্কেমিক এবং হেমোরজিক। ইস্কেমিক স্ট্রোক তখন হয় যখন মস্তিষ্কের রক্তনালীতে জমাট বেঁধে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। আবার হেমোরজিক স্ট্রোক হল-যখন মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। স্ট্রোক রোগীর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। কারণ স্ট্রোকের চিকিৎসা খুবই দীর্ঘমেয়াদি।’

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘নানা ধরনের সংকটের মাঝেও চিকিৎসকরা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের পুরো হাসপাতালের জন্য মাত্র ১২টি আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) শয্যা আছে। এর মধ্যে আবার দু’একটির ভেন্টিলেটর নষ্ট থাকে। আবার আইসিইউ শয্যার জন্য বিভিন্ন মহলের অনুরোধও থাকে। আমরা সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ সেবাটুকু দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে আমার একটাই অনুরোধ গণমাধ্যমে যেন বিষয়গুলো ওঠে আসে। আমাদের প্রতিটি ওয়ার্ডেই শয্যার অতিরিক্ত রোগী।’

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খান বলেন, ‘স্ট্রোক সচেতনতার বিষয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে বেশি বেশি প্রচার করতে হবে। তাহলে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা সম্ভব হবে।’

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘নিউরোলজি বিভাগে চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। এই বিভাগে একজন মাত্র রেজিস্ট্রার আছে। কোনো সহকারী রেজিস্ট্রার নেই।’

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মসিহুজ্জামান আলফার সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন নিউরোলজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. খোকন কান্তি দাশ এবং মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. অশোক কুমার দত্ত।

পাঠকের মতামত: