ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

আলোর মুখ দেখেনি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার ::  আলোর মুখ দেখেনি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ২০০৮ সালে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের যাত্রা শুরু হলেও প্রথম থেকেই দাবী ছিল মেডিকেল কলেজের সাথে সংযুক্ত ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল করার। সেই অনুসারে ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারের একটি সমাবেশ থেকে এই ৫০০ শয্যা হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।
সংশ্লিষ্টদের দাবী, বর্তমান কক্সবাজারের বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী কক্সবাজারে জেলা সদর হাসপাতালের উপর চাপ কমাতে এবং জনগনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে দ্রুত নতুন ৫০০ সয্য হাসপাতাল নির্মাণে সংসদ সদস্য সহ সকলের আন্তরিক হওয়া দরকার।
কক্সবাজার বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মাহাবুবুর রহমান জানান, কক্সবাজারের মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল। ২৫০ সয্যর এই হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ৭ রোগী চিকিৎসা নেয়। ফলে ডাক্তার নার্সদের আন্তরিকতা থাকা সত্বেও অনেকে আশানুরুপ সেবা পাচ্ছেনা। ২০০৮ সালে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর আমরা এক বুক আশা নিয়ে ছিলাম এখানে একটি ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হবে। সেই হাসপাতাল দ্রুত বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজারের মানুষকে চিকিৎসা সেবা পাওয়ার জন্য আর ঢাকা চট্টগ্রাম যেতে হবে না। তাই দ্রুত হাসপাতালটির কাজ শুরু করার জন্য আমরা যথেস্ট তদবির বা কাজ করেছি। এর ধারাবাহিকতায় সরকারের আন্তরিকতায় ২০১৭ সালে কক্সবাজারে একটি সমাবেশ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প পরিচালকও নিয়োগ হয়েছে। সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এই হাসপাতালের কাজ শুরু করার জন্য অনেকটা প্রক্রিয়া করেছেন। কিন্তু কোথায় জানি একটি অদৃশ্য কারনে হাসপাতালের কাজ এখনো বাস্তবে রুপ পায় নি। অথচ আমাদের প্রয়োজনীয় লোকবল আছে। ডাক্তার সহ সব কিছু আছে। কিন্তু আমরা তাদের কাজে লাগাতে পারছিনা। কক্সবাজারবাসীর দাবী দ্রুত ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাজ শুরু করা হোক।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও সুজন সভাপতি প্রফেসর এম এ বারী বলেন, ‘আমার জানা মতে, প্রত্যেকটি মেডিকেল কলেজের সাথে একটি হাসপাতাল থাকে। এখানে যখন শুরুর দিকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হওয়া নিয়ে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তখন জেলার সর্বস্তরের মানুষ মেডিকেল কলেজের দাবীতে নানান কর্মসূচী পালন করেছে। সরকারের কাছে বার্তা পাঠিয়েছিলাম, আমরা কক্সবাজারের মানুষ একটি মেডিকেল কলেজ চাই। এখন মেডিকেল কলেজ হয়েছে। তবে হাসপাতাল এতদিনেও কোন কাজ হয়নি । সেটা আমি আগে জানতাম না। আমাদের ধারনা ছিল, অবকাঠামোগত কাজ চলছে। আমি মনে করি এখানে একটি ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল দ্রুত গড়ে তোলা কক্সবাজারের মানুষের দাবী। প্রয়োজনে এ বিষয়ে বিস্তর জন সচেতনতা মূলক কার্যক্রম হাতে নিয়ে দাবী আদায়ের জন্য যা করার দরকার সেটা করতে হবে।
এ ব্যপারে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ নুরুল আলম বলেন, কক্সবাজারের বর্তমান জনসংখ্যা এবং সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে এখনে নতুন ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা বাস্তবায়ন হলে জেলার মানুষের সীমাহীন উপকার হবে। এছাড়া মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য উপকারে আসবে।
কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ সুভাষ চন্দ্র সাহা চকরিয়া নিউজকে বলেন, বর্তমানে মেডিকেল কলেজের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের প্র্যাকটিক্যল ক্লাস করার জন্য শহরের ভেতরে জেলা সদর হাসপাতালে যেতে হয়। এতে অনেক ধরনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের আসা যাওয়া করতে হয়। এছাড়া জেলা সদর হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা রোগীদের জন্য কতটুকু অনূকূল সেটা সবাই জানে। তাই বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় নতুন ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল গড়ে তুলতে পারলে সাধারণ মানুষের ব্যপক উপকারে আসবে। আর আমাদের পক্ষ থেকে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য মন্ত্রনালয় সহ উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে সব সময় লেখালেখি করছি। সরকারও এ বিষয়ে আন্তরিক। আশা করছি খুব দ্রুত একটি সফলতা আসবে।

পাঠকের মতামত: