ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজার বিমান বন্দরে দুগ্ধজাত শিশুর বিড়ম্বনা : ‘ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার’ স্থাপনে হাইকোর্টের রুল

অনলাইন ডেস্ক ::  সরকারি অথবা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, কর্মস্থল, হাসপাতাল, শপিং মল, বিমানবন্দর, বাস ও রেলওয়ে স্টেশনের মতো জনসমাগমস্থলে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। কক্সবাজার বিমান বন্দরে দুগ্ধজাত শিশুকে মায়ের দুধপানে বিড়ম্বনার অভিযোগে তার মায়ের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার (২৭ অক্টোবর) এ রুল জারি করেন।

একইসঙ্গে সরকারি অথবা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, কর্মস্থল, হাসপাতাল, শপিং মল, বিমানবন্দর, বাস ও রেলওয়ে স্টেশনের মতো জনসমাগমস্থলে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শপিংমলে ব্রেস্ট ফিডিং ও বেবি কেয়ার কর্নার স্থাপনে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক সচিবকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, গণপূর্ত সচিব, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব এবং বেসামরিক কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী আব্দুল হালিম।

এর আগে ৯ মাস বয়সী এক শিশু ও তার মা এ রিট করেন। তবে শিশুর পক্ষে হলফনামা করেছেন তার বাবা। শিশুটির মা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে আদালতের অনুমতি নিয়ে রিটটি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মায়েরা দুধ পান করা শিশুদের নিয়ে জনসমাগমস্থলে প্রায়ই বিড়ম্বনায় পড়েন। তাই এমন পরিবেশে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপন করতে হবে, যেখানে কোনো মা সন্তানকে বুকের দুধ পান করাতে যেন কোনো অস্বস্তি বোধ না করেন। এ কারণে রিট করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ইসরাত জাহান তার ৯ মাসের শিশু সন্তান উমাইর বিন সাদীকে নিয়ে বেড়াতে এসেছিলেন সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে বেড়ানো শেষে ঢাকায় ফেরার পথে কক্সবাজার বিমানবন্দরে হাজির হয়। কিন্তু সেখানেই বিপদে পড়ে সে। প্রচন্ড ক্ষিধায় কান্না জুড়ে দেয়। শিশুটির কান্না থামাতে মা বুকের দুধ খাওয়ানোর উদ্যোগ নেন। কিন্তু তার মা এই ছেলে শিশুটিকে দুধ খাওয়ানোর কোনো পরিবেশই পাচ্ছিলেন না। শিশুটির কান্না বেড়েই যাচ্ছিল। এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করেও শিশুটিকে দুধ খাওয়াতে পারছিলেন না অসহায় মা। শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দরে নারী যাত্রীদের চেকিং-এ দায়িত্বরত এক কর্মীকে রাজি করিয়ে সেখানে দুধ খাওয়ানো হয় শিশুটিকে। দুধ খাওয়ার পর শিশুটির কান্না থামে।

এরকম বিড়ম্বনার শিকার শিশুটি নিজের নিরাপদে দুধ খাওয়ার পরিবেশ চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিল। শিশুটি অবুঝ হওয়ায় তার মা এই রিট আবেদনে বাদি হয়েছেন। রিট আবেদনে কর্মজীবী নারীর কর্মক্ষেত্র, শপিংমল, বিমানবন্দর, বাস স্টেশন, রেলওয়ে স্টেশনসহ জনসমাগম স্থানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের সংবিধানের ১০২ নম্বর অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে এই রিট আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিশুটির আইনজীবী মা। রিট আবেদন করার আগে হাইকোর্টের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়েছে। ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এ রিট আবদেন করা হয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে আজ রোববার হাইকোর্ট ওই রুল জারি করেন। তথ্য সূত্র বিভিন্ন গণমাধ্যমের।

পাঠকের মতামত: