ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

বিদ্যালয়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার হবেনা শিক্ষার্থীদের মাঝে শুদ্ধ বাংলা ভাষা চর্চা করতে হবে -চকরিয়ায় প্রশিক্ষন কর্মশালায় বক্তারা

এম. জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::  চকরিয়া উপজেলা পরিষদ আয়োজনে এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলার ৯০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসএমসি সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকগণের অংশগ্রহনে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মমালা গতকাল রোববার সমাপ্ত হয়েছে। কর্মশালায় চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভা এলাকার ৯০টি বিদ্যালয় সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকগন অংশনেন।

চকরিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চকরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তার। অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন চকরিয়া পেকুয়া আসনের (কক্সবাজার-১) আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমান।

প্রশিক্ষন কর্মশালায় প্রধান অতিথি এমপি জাফর আলম বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে বর্তমান সরকার শিক্ষাখাতের অগ্রগতি উন্নয়নে নানামুখী প্রদক্ষেপ নিয়েছেন। সরকারের পরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষাখাতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদেরকে মেধাবী ও দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে তৈরী করতে নিরলশভাবে কাজ করছেন সরকার। এখন প্রতিটি শিক্ষার্থীকে দেয়া হচ্ছে বিনাবেতনে লেখাপড়ার সুযোগ। মেধাধী ও দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন উপবৃত্তির সুবিধা।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে কল্যাণে সবধরণের কার্যকর প্রদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছেন সরকার। পাশাপাশি শিক্ষক সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নেও সমানভাবে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার। প্রতিটি বিদ্যালয়কে উন্নয়নের মাধ্যমে ঢেলে সাজাচ্ছেন সরকার। এইজন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে বরাদ্দ দিচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ। যেসব বিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত সংকট আছে সেখানে নতুন ভবন দেওয়া হচ্ছে।

এমপি জাফর আলম বলেছেন, সরকার শিক্ষার অগ্রউন্নয়নে এতসব প্রনোদনা দেয়ার পরও লেখাপড়ার মান্নোয়নে প্রশ্ন থেকে যায়। সেইজন্য শিক্ষা মন্ত্রাণালয় সরকারের নির্দেশনার আলোকে প্রতিটি জনপদে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। এই কর্মশালা থেকে অর্জিত জ্ঞান প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে এবং লেখাপড়ার মান্নোয়নে বিদ্যালয়ের এসএমসি সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকগণ যথাযথভাবে ভুমিকা পালন করবেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে চকরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তার বলেছেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার মান্নোয়ন নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে রিডিং জানতে হবে। ইংরেজী বিষয়ে পারদর্শী করে তুলতে হবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রত্যেক সপ্তাহে সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া, আবৃত্তি, খেলাধুলা, কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দক্ষতা বাড়াতে হবে। বিদ্যালয়ের উন্নয়নের নামে বরাদ্দ নিয়ে অনিয়মের আশ্রয় নেয়া যাবেনা। সব বরাদ্দ সুচারুভাবে ব্যয় করতে হবে। বিদ্যালয়ের সমস্যা চিহিৃত করতে হবে এবং তা নিরসনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি বলেন, লেখাপড়ার আগে বিদ্যালয়ের সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা ও খোলা মাঠে ফুল-ফলের বাগান সৃজন করতে হবে। এখন থেকে চকরিয়ার প্রতিটি বিদ্যালয়ে আঞ্চলিক ভাষার প্রচলণ বন্ধ করতে হবে। ক্লাস থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের প্রতিটি কাজের সময় শিক্ষকরা শুদ্ধ বাংলা ভাষা উচ্চারণ করবে শিক্ষার্থীদের সাথে। ক্লাস থেকে সবক্ষেত্রে শুদ্ধ বাংলা ভাষা চর্চা নিশ্চিত করতে হবে। কোনভাবেই আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা যাবেনা। বিষয়টি সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা আরও বলেন, পাঠ্যবইতে আঞ্চলিক ভাষার প্রচলণ নেই। কিন্তু শিক্ষকরা পাঠদান থেকে শুরু বিদ্যালয়ের প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে এই ভাষাটি ব্যবহার করেন। এটি শিষ্টচার বর্হিভুত। তাই আগামীতে এই ধরণের ভাষা ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। শিক্ষকরা এতে ব্যর্থতার পরিচয় দিলে উপজেলা শিক্ষা বিভাগ করো সঙ্গে আপোষ করবেনা।

পাঠকের মতামত: