ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

ভাঙ্গা রাস্তা নিয়ে সর্বত্র সমালোচনা

মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার :: কক্সবাজারের ভাঙ্গা রাস্তা নিয়ে চরম বিরক্ত সাধারণ মানুষ। শুধু প্রধান সড়ক নয় পৌর এলাকার বেশির ভাগ উপ সড়ক এবং টেকনাফ প্রধান সড়ক রেকর্ড পরিমান ভাঙ্গা। স্থানীয়দের দাবী অতীতে কোন সময় এত ভাঙ্গা সড়ক দেখেনি তারা। এতে ভেস্তে যাচ্ছে কক্সবাজারে চলমান সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম। তাই সরকারের ইমেজ ধরে রাখতে দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবী জানান সচেতন মহল।
কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিন বলেন,কক্সবাজারের সড়কের এত বেহাল অবস্থা আমি আগে কখনো দেখিনি। মানুষ রাস্তায় বের হলেই সরকারের সমালোচনা করে। নারী পুরুষ সবাই শুধু ভাঙ্গা রাস্তা নিয়ে কথা বলে কারণ মানুষ সত্যিকার অর্থে রাস্তায় চলতে চরম অসুবিধায় পড়ছে। অথচ আমার জানা মতে সারা দেশের সব জেলার মধ্যে কক্সবাজারেই সরকারের বেশি উন্নয়ন কর্মকান্ড চলছে। মানুষ কিন্তু সে গুলো নিয়ে কথা বলে না, শুধু রাস্তার সমালোচনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ সভাপতি রতন দাশ বলেন,মানুষ দৃশ্যমান কাজে বিশ্বাসি বর্তমানে কক্সবাজারে বিপুল উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে এটা সত্য কিন্তু সেই উন্নয়ন থেকে মানুষ এখনো সুবিধা পায়নি বরং মানুষ রাস্তা ঘাটে চলাচল করতে চরম অসুবিধায় পড়ছে সেটাই বেশি দেখছে। তাই সাধারণ জনগণ যে সমালোচনা করবে সেটাই বাস্তবতা। আমি মনে করি শহরের প্রধান সড়ক যদি সড়ক বিভাগ কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষকে হস্তান্তরও করে তাহলে উন্নয়ন কতৃপক্ষের দায়িত্ব ছিল সড়কটি সচল রাখা। আর সব রাস্তাতো কউকের না তাহলে বাকি সড়ক গুলোর বেহাল অবস্থা কেন? সেটার কি জবাব দেবে সড়ক বিভাগ। আমার মতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে। মোট কথা সরকার যতই উন্নয়ন কর্মকান্ড করুক না কেন মানুষ কিন্তু রাস্তাঘাট নিয়ে খুব বিরক্ত।
টেকপাড়া এলাকার মোহাম্মদ হোসেন বলেন,আমার বয়স (৫২) আমাদের সামনের সড়ক এক সময় মাটির ছিল পরে ইট বিছিয়ে গাড়ি চলতো এরপরে পাকা রাস্তা হয়েছে অনেক কিছুই দেখেছি তবে রাস্তার এরকম করুণ অবস্থা আগে কখনো দেখিনি। জানিনা কর্তৃপক্ষ কি করে। তিনি বলেন,পৌর এলাকার বেশির ভাগ উপ সড়ক এতই নাজুক মানুষ রাস্তায় বের হলেই মন্দ কথা বলে।
এদিকে উখিয়া প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন,আমার দীর্ঘ জীবনে কক্সবাজার-টেকনাফ প্রধান সড়কের এত ভাঙ্গা অবস্থা আর দেখিনি। প্রত্যেক মানুষ গাড়ি চড়লেই সরকারের সমালোচনা করে নারী হউক আর পুরুষ হউক রাস্তা দিয়ে চলতেই সরকারকে নিয়ে ব্যাপক আজে বাজে কথা বলে। আর বলারই কথা কারণ যদি ১০ মিনিটের রাস্তা পার হতে ১ ঘন্টা লাগে তখন মানুষের শরীরের অবস্থা নাজুক হয়ে যায়। রোহিঙ্গা নিয়ে সরকার বা বিদেশী সংস্থা হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে কিন্তু স্থানীয় জনগনের রাস্তাঘাট নিয়ে কষ্ট পাচ্ছে সেটা দেখার যেন কেউ নেই। এতে বর্তমান সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে হলেও জানান তিনি।
উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হাদিুল হক চৌধুরী বলেন, হুয়াংহু নদী চীনের দুঃখ ছিল এখন আরাকান সড়ক উখিয়া-টেকনাফবাসীর দুঃখ। এই প্রধান সড়ক সংস্কারের জন্য সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বহু দেনদরবার করেছি আশ^াস পেয়েছি তবে সেটা মানুষকে কিভাবে বুঝাবো। মানুষ চায় কাজ সেই কাজ দেখাতে পারছিনা এটাই আমাদের বড় ব্যর্থতা। তবে সড়কের এমন নাজুক পরিস্থিতির জন্য সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের গাফেলতীকে বেশি দায়ি করেন তিনি। কারণ তারা সঠিক সময়ে পরিকল্পনা নিলে আজকের এই অবস্থা দেখতো হতো না।
টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজী মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, সত্য কথা বলা কঠিন, কোন বাজেট নাই বরাদ্ধ নাই কিভাবে রাস্তার কাজ করবো। আমি নিজেই ঘর থেকে বের হতে পারিনা মানুষের সমালোচনার কারনে। তবে আশা করছি খুব দ্রুত একটি বরাদ্ধ পাব। তিনি বলেন, কক্সবাজার টেকনাফ সড়ক নিয়ে মানুষের মধ্যে বিরক্তির শেষ নেই যে একবার এই রাস্তা দিয়ে আসে সে আর যেতে চায়না এবং পরে চায়ের দোকানে বসে ইচ্ছামত সরকারের সমালোচনা করে।

পাঠকের মতামত: