ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

আলীকদম উপজেলা পিআইওর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

আলীকদম প্রতিনিধি  ::  বান্দরবান আলীকদম উপজেলা ১নং আলীকদম সদর ইউনিয়নের “আলীকদম ফাঁসিয়াখালী পাকা সড়ক হইতে আনোয়ার হোসেন পাড়ার ভিতর দিয়ে কৃষি অফিস হইতে মুক্তিযোদ্ধা মহসিন সর্দারের বাড়ীর সামনে উপজেলা মেইন রোড পর্যন্ত ১০০০ মিটার গ্রামীণ মাটির রাস্তা সমূহ টেকসই করণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ” কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের আওতায় প্রায় ৪৩,০০,০০০/- লক্ষ টাকা ব্যয়ে করা এই কাজে কোন রকম সিডিউল মানা হয়নি। উক্ত কাজটি করেন মেসার্স ফরিদুল আলম,চকরিয়া, কক্সবাজার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী অভিযোগ করলেও মো: মনসুর রহমান, উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তাসহ কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে নাই বলে অভিযোগ রয়েছে।

সিডিউল অনুযায়ী যা করার কথা : মাটি ভরাট, ঘাসের চাপড়া লাগানো, বেড প্রস্তুতকরণ, বক্স কাটিং, ক্যাম্বারিং, বালু ভরটিকরণ,Edging, ব্রিক ফ্লাট সংলিং (Brick Flat Soling), হেরিং বোন বন্ড(SHBB), Post Cast (প্যালাসাইডিং), Bitumen drum sheet (প্যালাসাইডিং), RCC Name Stand with Marble Stone, সাইবোর্ড ইত্যাদি সিডিউল অনুযায়ী থাকার কথা থাকলেও তাহা মানা হয়নি।

৩নং অনুচ্ছেদ উল্লেখিত শর্তানুযায়ী প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী (ইট) পলিটেকনিক / ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ/প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়/প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হতে গুনগতমান পরীক্ষা করে রাস্তার কাজে ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রকল্প এলাকায় মজুদকৃত ইট হতে ঠিকাদারের উপস্থিতিতে নমুনা সংগ্রহ করবেন। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নথিতে সংরক্ষণ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নাই।

এলাকাবাসীর কয়েকজন জানান – রাস্তায় বক্স করে ৬ ইঞ্চি বালু দিয়ে ফিলিং করার কথা থাকলেও তা না করে পাহাড়ী মাটি দিয়ে তা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া এসব মাটিতে ওয়াটারিং করা ও দুরমুস করা হয় নাই।

ব্যবহৃত ইটগুলো অত্যন্ত নিম্নমানের। এলাকাবসীর দাবী ২ ও ৩ নং ইট রাস্তায় দেয়া হয়েছে । তাহা ছাড়াও উক্ত রাস্তায় আগের পুরাতন ৫০,০০০/- হাজার ইট ছিল সে গুলো ব্যবহার করেছেন। আরো জানান উক্ত পুরাতন ইট পিআইও ঠিকাদার কাছে বিক্রি করেন এবং উক্ত পুরাতন ইট রাস্তায় ব্যবহার করা হয়েছে। যা আমরা এলাকাবাসী লেখিত অভিযোগ পত্র ইউএনও, অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন জায়গায় দিয়েছি। কিন্তু লাভ হয় নাই। কাজের মান এতটাই খারাপ তিন মাস যেতে না যেতে রাস্তাটি এখনই উচুনিচু বড় বড় গর্ত সহ রাস্তার দুই পাশের বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে পড়েছে।

ইজিপিপি প্রজেক্ট থেকে আত্নীকরণ হয়ে আসা মো: মনসুর রহমান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনিয়মের বিষয়ে জানালে পিআইও ঘটনাস্থলে এলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পুরাতন ইট ও ২নং এবং ৩নং ইট দিয়ে নিম্ন মানের কাজ করানো হয়েছে। রাস্তার দুই পাশে বিভিন্ন অংশে প্যালাসাইটিং করার কথা থাকলেও তা না করিয়ে ফাইনাল বিল প্রদান করা হয়েছে। মূলত: পিআইও’র যোগসাজসেই এধরনের দূর্নীতি ও অনিয়ম করা হচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। আরো অভিযোগ উঠেছে পিআইও অফিসে কোন কাজ করতে এলে টাকা ছাড়া কোন ফাইল স্বাক্ষর হয়না।

এদিকে ঠিকাদার ফরিদুল আলমকে মুঠোফোনে পুরাতন ইট পিআইও হতে কিনেছেন এবং ২নং ৩নং ইট ও প্যালাসাইটিং না দিয়ে নিম্ন মানের কাজ করা হয়েছে। তিন মাস যেতে না যেতে রাস্তা বিভিন্ন অংশ ভেংঙ্গে পড়েছে আপনি জানেন। তিনি জানান, আমি কোন জবাব দিতে পারবোনা। এটা পিআইও’র বিষয় তিনিই কথা বলবেন।

এ ব্যাপারে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো: মনসুর রহমান এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, সিডিউল মোতাবেক কাজ হয়েছে। পুরাতন ইটের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।

এলাকাবাসীর দাবী পিআইও বদলীসহ দ্রুত তদন্ত করে এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং পূর্ণরায় প্যালাসাইটিং সহ ১নং ইট দিয়ে সিডিউল অনুযায়ী রাস্তার কাজ ভালোভাবে করার অনুরোধ।

পাঠকের মতামত: