ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় নিরাপত্তা বলয়ে দুর্গোৎসব: ৪৬টি পুঁজামন্ডপে পুলিশের নজরদারিতে ৩১৬ পুলিশ ও আনসার বাহিনী

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::  চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৪৬টি পুঁজামন্ডপে ইতোমধ্যে উৎসবের আমেজে শুরু হয়েছে শারদীয়া দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হয়েছে দেবী পক্ষের আগমন। চন্ডীপাঠ, বিভিন্ন অনুষ্টানের মধ্যদিয়ে মা দূর্গাকে মর্ত্যলোকে আহবান করেন ভক্তকুল। গতকাল শুক্রবার ষষ্ঠী পুজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে মায়ের অর্চনা। মঙ্গলবার দশমীর পুজার মাধ্যমে মাকে বিদায় জানাবেন ভক্তরা।

দূর্গোৎসবকে ঘিরে প্রতিটি মন্দিরে চলছে সাজসাজ রব। সবাই যার মতো ব্যস্ত। কেউ ব্যস্ত লাইটিংয়ের কাজে, কেউ ব্যস্ত প্রতিমা তৈরীর কাজে আবার কেউ ব্যস্ত সাজসজ্জায়। মা দূর্গাকে মাঝখানে রেখে এর দু’পাশে বসানো হয়েছে স্বরস্বতী, লক্ষী, গণেশ ও কার্তিককে। এদের দু’পাশে বসানো হয়েছে পানির ফোয়ারা। এছাড়াও ব্রক্ষা, বিষ্ণু ও শিব এবং বেশ কয়েকটি অসুর বানানো হয়েছে। স্টেইজের মাঝে মাঝে বসানো হয়েছে বিভিন্ন কালারের লাইট। পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিটি পরিবারে চলছে উৎসবের আমেজ। প্রতিটি পরিবার পুঁজা উপলক্ষে বিপনী বিতান গুলোতে কেনাকাটায় ব্যবস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

এদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দুর্গাপুজা উপলক্ষে নাশকতাসহ সবধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ইতোমধ্যে প্রতিটি মন্দিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরী করা হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষথেকে। পুঁজারীদের মাঝে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে শান্তিপুর্ণ পরিবেশে উৎসব উদযাপন সমাপ্তির জন্য শুক্রবার চকরিয়া থানা পুলিশের পক্ষথেকে প্রতিটি মন্ডপে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের বিশেষ প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে। তাঁরআগে থানা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্যারেড ব্রিফিং।

অনুষ্ঠিত প্যারেড ব্রিফিংয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন চকরিয়া সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) কাজী মো. মতিউল ইসলাম।

প্যারেড ব্রিফিংয়ে চকরিয়া থানা পুলিশের পক্ষথেকে জানানো হয়েছে, থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভার ৪৬টি পুজা মন্ডপে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে ২৫০ জন আনসার ও ৬৬ জন পুলিশ সদস্য। প্যারেড ব্রিফিংয়ে এসময় উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান, থানার ওসি (তদন্ত) একেএম সফিকুল আলম চৌধুরী, থানার অপারেশন অফিসার (এস আই) রুহুল আমিন প্রমূখ।

প্যারেড ব্রিফিংয়ে এএসপি কাজী মো. মতিউল ইসলাম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্যেশে বলেন, পূজা মন্ডপে ইভটিজিং, মাদক রোধ ও আইন শৃংখলা রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল পুলিশ এবং আনসার সদস্যদের সজাগ থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। পুঁজমন্ডপে কোন ধরণের অপরাধ ও বিশৃঙ্খলা দেখা গেলে সাথে সাথে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এইক্ষেতে কোন ধরণের শৈতিল্য বরদাস্ত করা যাবেনা।

চকরিয়া পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তপন কান্তি দাশ ও সাধারণ সম্পাদক বাবলা দেবনাথ বলেন, গতবছর চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৪৪টি মন্ডপে দূর্গা পুজা হলেও এবার দুটি পুজা মন্ডব বেড়েছে। এছাড়া ৪০টি ঘটপুজা অনুষ্টিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে এসব মন্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজও শেষ পর্যায়ে। আশা করি সবার সহযোগিতায় এবছরও আমরা উপজেলায় একটি সুন্দর পুজা উপহার দিতে পারবো।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, দুর্গোৎসব এখন বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে। দুর্গোৎসব বাঙ্গালীর উৎসব। উৎসব যাতে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে পারি আমাদের পক্ষ থেকে প্রস্ততি রয়েছে। পুজা মন্ডপগুলোতে যাতে শৃঙ্খলা বজায় থাকে সেজন্য সকলধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ##

পাঠকের মতামত: