ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী পরাজয়ের নেপথ্যে

up elmail.google.comএম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার ॥

কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় উপজেলার উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে নির্বানোত্তর সহিংসতা বেড়েই চলছে। গত কাল বুধবার সকালেও হামলার শিকার হয়েছে আ.লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াহিয়া খান কুতুবীর ২ সমর্থক। এদের মধ্যে একজনের দুটি দাঁত উপড়ে ফেলা হয়েছে। জনগণ আতংকের মধ্যে রয়েছে। এই ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী পরাজয়ের পেছনে সাবেক শহর জামায়াতের সাবেক আমীর নামধারী আওয়ামী লীগ নেতা সিরাদৌল্লাহ ও জামায়াত নেতা শাহরিয়ার চৌধুরী । তারা দুই বন্ধু মিলে যৌথ ভাবে ভোট ডাকাতি, কেন্দ্র দখল ও হামলা চালিয়ে আ.লীগের প্রার্থী ইয়াহিয়ার নিশ্চিত বিজয় জামায়াত ছিনিয়ে নিয়েছে বলে দাবী করেছেন তিনি। এঘটনায় থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে।

নামধারী আওয়ামী লীগ নেতা সিরাদৌল্লাহ আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দাবী করে তলে তলে জামায়াত প্রার্থীর সাথে সমঝোতা ও ৪টি হত্যাসহ জ্বালাও পোড়াও মামলার আসামী জামায়াত নেতা শাহরিয়াকে সহযোগীতা করেন।

তিনি আরো জানান, ২২ মার্চ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে জামায়াত সর্মথিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহরিয়ার চৌধুরীর সমর্থক কর্মীদের হামলায় আওয়ামী আমার ভাইসহ ১০ জন আহত হয়েছে। ৪টি কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি করায় এ কেন্দ্র গুলোর ফলাফল স্থগিত রাখার জন্য রির্টানিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগও দেয়া হয়।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইয়াহিয়া খান কুতুবী অভিযোগ করেন, উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে জামায়াতের সেক্রেটারী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আসম শাহরিয়া চৌধুরী সমর্থকরা গুলিবর্ষণ করে ও ইয়াহিয়া খান কুতুবীর কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা চালিয়ে দুপুর ১২টার দিকে ইউনিয়নের ৪ টি কেন্দ্র দখল করে নেয়। এরপর তারা ব্যালটে মোটরসাইকেল প্রতীকে সীল মারেন।

তিনি বলেন, ভোট ডাকাতির ঘটনায় প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিবাজ আমলা সহযোগীতা করেন। এসআই জুয়েল মিয়া মোবাইল টীমে ডিউটি ১নং ওয়ার্ডের আজগরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, ২নং ওয়ার্ডের আফাজ উদ্দিন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে অবস্থান করে ৩নং ওয়ার্ডের বাঁশখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ও ৫নং ওয়ার্ড ফয়জানি বাপেরপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে । এসব কেন্দ্রে জামায়াত নেতা শাহরিয়ার চৌধুরী ও সিরাজদৌল্লাহ ভোট লুট করে ও আমার কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা করে। ভোট জালিয়াতিতে সহযোগীতা করেন তিনি। এমন কি চরধুরুং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমাকে চরম ভাবে নাজেহাল করেন এবং জামায়াত নেতাকে প্রত্যক্ষ ভাবে সহযোগীতা করেন। তাকে অবিলম্বে কুতুবদিয়া থেকে প্রত্যাহার করা হোক। জামায়াত নেতাকে সহযোগীতা করলেও বিদ্রোহী প্রার্থী সিরাজদৌল্লাহ মাত্র ২১৪৯ ভোট পেয়ে ৪নং হন।

তিনি আরো জানান, হামলার ঘটনায় আমিও আহত হয়েছি। এসময় আমার ছোট ভাই সরকারী মৎস্য অফিসের কর্মচারী একে খাঁন, চাচা লিয়াকত আলী, লাল মিয়াসহ ১০ জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে কুতুবদিয়া সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগে তারা কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতির ঘটনা সংগঠিত করেছে। আহত একে খানের অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভাইঙ্গাকাটা এলাকার সিরাজদৌল্লাহর বাড়ি সামনে রাস্তা দিয়ে উপজেলায় যাওয়ার পথে আমার দুই কর্মী মনজুর আলম ও বদি আলমকে বেদম মারধর করে সিরাজদৌল্লাহ। এরা দুই জনই গুরুতর আহন হন এবং বদি আলমের দুটি দাঁত উপড়ে যায়। তার কর্মী সমর্থকরা এমনকি আমি নিজেও স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারছি না। প্রশাসন নিরব রয়েছে। এঘটনায় আসম শাহরিয়া চৌধুরী, সিরাজ দৌল্লাহসহ আরো ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২‘শ জনের বিরুদ্ধে ২৩ মার্চ কুতুবদিয়া থানায় এজাহার দায়ের করেছে ইয়াহিয়া খান কুতুবীর পিতা ছৈয়দ নুর।

উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের ৪টি কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত রেখে নতুন করে নির্বাচনের দিন ঘোষণা অথবা ২৮৩৫ ভোট পেয়ে ২য় স্থান অধিকারী ইয়াহিয়া খান কুতুবীকে বিজয়ী ঘোষণা করা সহ র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করে উত্তর ধুরুং এর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবী জানান এলাকাবাসি।

পাঠকের মতামত: