ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

১৮০০ এনআইডি দিয়েছেন জয়নাল আবেদীন, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ::  রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫০-৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার কাজ শুরু করেন নির্বাচন কমিশনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী। এর মধ্যে জয়নাল আবেদীন নিজেও এসব ভুয়া এনআইডি বাবদ টাকার ভাগ পেতেন। আর জয়নাল নিজেই এ পর্যন্ত এক হাজার ৮০০ এনআইডি কার্ড তৈরির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে স্বীকার করেছেন।

এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনের ঢাকার প্রধান কার্যালয় এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তা ফেঁসে যাচ্ছেন। সে সঙ্গে ফাঁসছেন বিভিন্ন পদে কর্মরত অফিস সহায়ক, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, সার্ভারে কর্মরত কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী।

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার চার আসামির মধ্যে জয়নাল আবেদীনই নির্বাচন কমিশনের স্থায়ী কর্মী। তিনি নগরীর ডবলমুরিং নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক পদে কর্মরত। তাঁর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলায়।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু ছালেম মো. নোমানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে এই তথ্য স্বীকার করেছেন জয়নাল। একই জবানবন্দিতে নির্বাচন কমিশনের একজন জেলা পর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তার নামসহ বেশ কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেছেন তিনি। ঢাকা ও চট্টগ্রামে তাঁর সঙ্গে যাঁরা এ কাজে জড়িত ছিলেন তাঁদের নামও প্রকাশ করেছেন।

জয়নাল আবেদীনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে নগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজেস বড়ুয়া তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছিলেন। রিমান্ড শেষে গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু ছালেম মো. নোমানের আদালতে তাঁকে সোপর্দ করা হয়। সেখানে আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

আসামি জয়নাল আবেদীনের আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজেস বড়ুয়া বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আসামি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।

নগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপকমিশনার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, একজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ওই জবানবন্দির কপি এখনো হাতে পাইনি। জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পাওয়ার পর কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে তৎপরতা শুরু করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। তবে এ বিষয়ে মুখ খোলেননি কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কোনো কর্মকর্তা।

পাঠকের মতামত: