ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাঁশখালীতে সেতু পারাপারে ভরসা বাঁশের সাঁকো

বাঁশখালী প্রতিনিধি ::  সেতুর এক পাশ ধসে ভেঙে পড়েছে। বন্ধ গাড়ি চলাচল। কোনো রকমে হাঁটার ব্যবস্থা হয়েছে ভাঙা অংশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে। সেই সাঁকোটি জোড়া দেওয়া হয়েছে সেতুর বাকি অংশের সঙ্গে। এভাবেই দুর্ভোগে সয়ে চলাচল চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পুঁইছড়ি ইউনিয়নের সাত গ্রামের মানুষের।

পুঁইছড়ি ইউনিয়নের পুঁইছড়ি-বন বিভাগ কার্যালয় সড়কের নাপিত বিল গ্রামে খালের ওপর নির্মিত ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের পাকা সেতুটির ২০ ফুট অংশ গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ধসে পড়ে। এরপর সেতুটি সংস্কারের আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনো কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় স্থানীয় লোকজন সাঁকো তৈরি করে সেতুটি ব্যবহার করছেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, সেতুটি সংস্কার না হওয়ায় নাপিত বিল, মালিপাড়া, অফিস টিলা, হাবিবের পাড়া, মাবিয়াপাড়া, বশিরা বাড় পাড়া ও জুমপাড়ার অন্তত তিন হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে।

শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর সংযোগ সড়কটিও ভেঙে খালে বিলীন হয়ে গেছে। বয়স্ক লোকজন থেকে শুরু করে শিশুরা সেতুটি ব্যবহার করছে সাঁকোর সাহায্যে। পাহাড় এবং খেত থেকে সবজি তুলে কাঁধে করে নিয়ে আসা কৃষকেরাও সাঁকো ব্যবহার করে সেতুটি পার হচ্ছেন।

কথা হয় জসিম উদ্দিন নামের এক কৃষকের সঙ্গে। তিনি কাঁধে ভারের সাহায্যে সবজি নিয়ে সেতুটি পার হচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘ঝুঁকি থাকলেও এভাবেই প্রতিদিন সাঁকো ব্যবহার করে সেতু পার হচ্ছি। কোলে বাচ্চা নিয়ে অনেক মা-বাবাও এভাবেই ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পার হচ্ছেন।’

স্থানীয় পুঁইছড়ি হাফেজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র মো. জোনাইদ বলে, ‘সাঁকোর সাহায্যে সেতুটি পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। সাঁকোটি পার হওয়ার সময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফৌজুল কবির বলেন, পাহাড়ি ঢলে খালের পানির স্রোতে সেতুর দক্ষিণ পাড়ের মাটি সরে যাওয়ায় এক পাশ ধসে গেছে। এ কারণে বিপাকে পড়েছে পূর্ব পুঁইছড়ির প্রায় তিন হাজার মানুষ।

সেতুর গায়ে লাগানো একটি নামফলকে লেখা রয়েছে, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সেতুটি ১৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকায় নির্মিত হয়েছে।

সেতুটি নির্মাণের দায়িত্বে থাকা মহিউদ্দিন অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মো. মহিউদ্দিন বলেন, সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬০ ফুট। মহিউদ্দিন অ্যান্ড ব্রাদার্স এবং ইলিয়াস ব্রাদার্স যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করেছিল। নিচ থেকে বালু তোলায় খালের পাড়ের মাটি সরে গিয়ে ঢলের পানিতে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জানতে চাইলে জেলা পরিষদের জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, সেতুটির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সংস্কারকাজ শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: