ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

গরুর সংকট নেই, শেষ মুহূর্তে জমজমাট পশুর হাট

নিজস্ব প্রতিবেদক ::  শেষ মুহূর্তে পছন্দের গবাদি পশু কিনতে নগরের হাটগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। আগামীকাল সোমবার পবিত্র কোরবানির ঈদ। তাই গতকাল শনিবার বৃষ্টি, ভ্যাপসা গরম ও আকাশে কালো মেঘ মাথায় নিয়ে নগরবাসী স্বাদ ও সাধ্যের মধ্যে গবাদি পশুটি কিনতে ব্যস্ত ছিলেন। কেউ কেউ নগরের হাট ফেলে শহরতলীর বিভিন্ন হাট থেকে গরু কিনে আনছেন ট্রাক ও পিকআপে করে।

ক্রেতারা জানান, শহরতলীর এসব হাটে প্রচুর দেশি গরু রয়েছে। এ ছাড়া এসব হাটে হাসিল নেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় দাম কম পড়ছে।

দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ স্থায়ী হাট চট্টগ্রামের সাগরিকাহাটের শনিবার ছিল ঈদের আগে শেষ হাটবার (সাপ্তাহিক বাজার)। তাই বিপুলসংখ্যক গরুর সমাগম ঘটেছিল এই হাটে।

সাগরিকা হাটে সরেজমিন দেখা গেছে, হাটের নির্দিষ্ট এলাকা ছাড়িয়ে সাগরিকা শিল্প এলাকা হয়ে এ কে খান মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় গরু উঠেছে রাস্তার দুই পাশে এবং বিভিন্ন শিল্প-কারখানার মাঠে। হাটে ক্রেতাদের ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর প্রতি আগ্রহ ছিল বেশি। ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা দামের গরুর ক্রেতা বেশি থাকায় বিক্রেতাও দাম ধরে রেখেছেন। তবে অপেক্ষাকৃত বড় গরু অর্থাৎ লাখ টাকার উপরের দিকে বড় গরুর ক্রেতা কম থাকায় বিক্রেতাদের হাঁকডাকও কম।

বাঁশখালী থেকে দুটি ষাঁড় নিয়ে সাগরিকা হাটে এসেছেন মজিদ বেপারি। সকাল ১১টায় লাল রংয়ের এই দুটি গরু নিয়ে হাটে আসার পর দুপুর ৩টার মধ্যেই একটি গরু বিক্রি করেছেন তিনি। অপেক্ষকৃত বড় গরুটি বিক্রি শেষে টাকা গুনতে গুনতে মজিদ বেপারি কালের কণ্ঠকে জানান, এবার হাটে গরু বেশি। তাই দাম ধরে না রেখে অল্প লাভে গরু বিক্রি করে দিলাম। দিনের আলো থাকতেই অন্যটি বিক্রি করে গ্রামে চলে যাব।

হাটে গরু কিনতে আসা এম এ লতিফ নামের এক ক্রেতা জানান, গত বছর ঈদের দুই দিন আগেই নগরের কিছু এলাকায় বেপারিরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করায় গরুর সরবরাহ কমে গিয়েছিল। তবে এবার এমন পরিস্থিতি নেই। কিন্তু গরুর দাম মনে হচ্ছে কিছুটা চড়া। ছোট গরুর দাম একটু বেশি চাইছে বেপারিরা।

কুষ্টিয়া থেকে ৮টি গরু নিয়ে চট্টগ্রামে এসেছেন বাবু শেখ নামের এক বেপারি। গত তিন দিনে পাঁচটি গরু বিক্রি করেছেন। বাকি তিনটি নিয়ে গতকালও দাম হাঁকাহাঁকি করছিলেন। এসময় বেপারি বাবু শেখ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘খরচসহ কিছু লাভ পেলেই গরুগুলো বিক্রি করে দেব।’

শহরে বেশি দাম পাওয়ার আশায় চট্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী বাঁশখালী, আনোয়ারা, দোহাজারী, পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, মিরসরাইসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রচুর গরু নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। সাগরিকা হাটের বিভিন্ন প্রান্তে গরু ও ক্রেতার ভিড় ঠেলে ফাঁকে ফাঁকে গরুবোঝাই ট্রাক ঢুকতে দেখা গেছে।

আজ রবিবার ঈদের আগের দিন নগরের নয়টি হাটে একযোগে গবাদি পশু বিকিকিনি চলবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

সাতকানিয়ার ব্যাংকার ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. আয়ুব চৌধুরী বলেন, ‘বাজারে পশুর সংকট নেই। সরবরাহ প্রচুর। তবে ছোট-মাঝারি গরুর দাম বেশি হাঁকছেন বিক্রেতারা।’

পাঠকের মতামত: