ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

উখিয়ার কামারদের ব্যস্ততা বেড়েছে 

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া ::

ঈদে ব্যস্থতা বেড়েছে উখিয়ার কামারদের। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন উখিয়ার কামারেরা। হাতুরির টুংটাং সবসময় লেগেই আছে তাদের দোকানে। প্রতিদিন তৈরি করছেন নতুন নতুন ছুরি, চাপাতি, দা, বটিসহ গরুর মাংস কাটা ও চামড়া ছড়ানোর কাজে ব্যবহৃত নানা সরঞ্জাম। ঈদের কারণে এসব দোকানগুলোতেও বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় দুই শতাধিক দোকানে এই কাজ করছেন কামাররা। ঈদের সময়ে এক থেকে দেড়-দুই ও আড়াই কেজি ওজনের চাপাতির বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায় বলে জানান তারা।

কামাররা জানান, ওজনভেদে এসব চাপাতি তৈরিতে প্রায় ২থশ টাকা থেকে ৬থশ টাকা খরচ হয় তবে এগুলো বিক্রি হয় সর্বনি¤œ ৭থশ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে চামড়া ছাড়ানো ও মাংস কাটার জন্যে বানানো ছোটবড় ছুরিগুলো ১শ টাকা থেকে ৫-৬থশ টাকার মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে গরু জবাইয়ের জন্য তৈরি হচ্ছে বিশেষ রকমের লম্বা ছুরি। এসব ছুরি কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হবে ১-২ হাজার টাকা।

এদিকে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবছর নতুন ছুরি-চাপাতি কেনার জন্যে দোকানগুলোতে যেমন ভিড় বাড়ে তেমনি পুরান ছুরি-চাপাতি ধার দেবার জন্যেও কামারপট্টিতে ভিড় করেন লোকজন। বছরের এই সময়টাতে তাই দোকানগুলোতে পশু জবাই ও চামড়া ছাড়ানোর কাজে ব্যাবহৃত নানা ধরনের ছুরি, চাপাতি, দা, বঁটি ও চায়নিজ কুড়াল সাজিয়ে রাখেন দোকানিরা। কথা হল উখিয়া বাজারের ছুরি-চাপাতি বিক্রেতা লক্ষীন্দ্র কর্মকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, সারাবছর টুকটাক ব্যবসা হলেও বছরের এই সময়টাতে বিক্রি বেড়ে যায়, বিক্রি বাড়ায় দোকানে এই সময়টাতে দুইজন বেশি বিক্রেতা নিয়োগ করতে হয়েছে, সকাল থেকে রাত অব্দি দুইজন কামার নতুন ছুরি চাপাতি বানানোর কাজ করে, আর দুইজন বিক্রি করে।

লক্ষীন্দ্র কর্মকার বলেন, উখিয়া বাজার ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে আমাদের দোকান আছে, এসব দোকানে ঈদের দিন পর্যন্ত চলবে ছুরি-চাপাতি তৈরি ও বিক্রির ধুম। বাজারে কথা হল রাজাপালং ইউনিয়নের ডেইলপাড়া গ্রাম থেকে ছুরি কিনতে আসা কামাল উদ্দিনের সঙ্গে। সে বলেন, এবছর ১টি গরু কোরবানি দেয়া হচ্ছে। গত বছরের যেসব ছুরি চাপাতি আছে সেসব মরিচা ধরায় নতুন করে ধার করাতে হবে, সাথে আর আরো কিছু নতুন ছুরি চাপাতিও কিনতে হবে। কামাল উদ্দিন বললেন, বছরে শুধু এই সময়টাতেই ছুরি চাপাতি ব্যবহার করি, বাকিসময় ঘরে ফেলে রাখায় মরিচা ধরে যায়, কোরবানির ঈদ এলেই তাই ছুরিগুলো ধার করার প্রয়োজন পড়ে, আর এজন্যে উখিয়ার কামারপট্টির দোকানগুলোতেই প্রতিবছর আসি।

উখিয়ার ডাকবাংলার সামনের সজীব কর্মকার বলেন, ছোটবেলা থেকে কামারের কাজ করেই সংসার চালাচ্ছি, সারাবছর কাস্তে, দা বানানোর কাজই বেশি করি, তবে কোরবানির ঈদের আগে পুরোটা সময় আগে থেকেই অর্ডারে পাওয়া চাপাতি, ছুরি বানানোর কাজ শুরু করে দেই, সাথে বাজারে বিক্রির জন্যেও সরঞ্জামাদি বানাই। তিনি বলেন, বর্তমানে কোরবানিতে বেশি পশু জবাই করা হচ্ছে। এই কারণে বেশি বেশি ছুরি চাপাতিও বিক্রি হচ্ছে। ফলে আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে গিয়েছে। এবছর সবমিলিয়ে হাজার খানেক ছুরি-চাপাতি বিক্রি হবে বলে আশা করছি। ফলে আমাদের কর্মকাররা সেভাবেই দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।

পাঠকের মতামত: