ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

রামু গর্জনিয়ায় ভ্রুণ হত্যা মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ

mamla.এম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন ॥

কক্সবাজারের রামু ইউনিয়নের মাঝিরকাটা দীপপাড়া গ্রামে এক শিশুর সাথে দৈহিক সম্পর্ক ও অবৈধ গর্ভপাতের পর ৬ মাসের ভ্রুণ মাটিচাপা দেয়ার অভিযোগে মামলা করে বিপাকে পড়েছে শিশুটির পরিবার। মামলা তুলে না নিলে ধর্ষিতা শিশু ও তার মাকে উল্টো মামলায় জড়ানোর হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। গত ১ মার্চ ওই শিশু (১২) নিজেই বাদী হয়ে রামু থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার বিরণে প্রকাশ, ২০১৫ সালের ২৭ আগস্ট ওই শিশুর বাড়িতে কলেমা পড়ে বিয়ের প্রলোভনে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে স্থানীয় আলী আকবর নামের এক লম্পট। ফলে শিশুটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে। পরে গর্ভপাতের পর ৬ মাসের ভ্রুণ মাটিচাপা দেয়া হয়। নেক্কার জনক ঘটনাটি এলাকায় প্রকাশ হলে তোলপাড় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসি।

বিরণে আরো প্রকাশ, দীর্ঘদিন মায়ের অনুপস্থিতির সুযোগে আলী আকবর তাকে ( ধর্ষিত শিশু) বিয়ে করবে বলে প্রথমে অবৈধ মেলামেশা করতে চায়। সে বাঁধা দিলে কলেমা পড়ে তাকে বিয়ে করেছে বলে জোরপূর্বক অবৈধ কাজ করে বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য বলেন। ধর্ষিতাও লোক লজ্জার ভয়ে এ কথা কাউকে বলেনি। পরে গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর কক্সবাজার কাজী অফিসে নিয়ে গিয়ে আলীর সঙ্গে বিয়ে করাবে বলে ঘর থেকে তাকে বের করেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আলী আকবরের বড় ভাই হানিফ ওই শিশুকে বাড়ি থেকে বের করে প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, এর পর রামু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও সর্বশেষ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। অতপর সেখানে ডা: রেশমা ইনজেকশন পুশ করে তাকে অজ্ঞান করে ফেলেন। জ্ঞান ফেরার পর তাকে আরও একটি ইনজেকশন পুশ করেন। শেষে কয়েকটি ট্যাবলেট দেয়। যেগুলো না খেলে শিশুটি মারা যাবো বলে জানালে দুটি ট্যাবলেট সে খান। ওই দিন রাতে শিশুর তীব্র ব্যথা ওঠে। হাসপাতালেই রাত ১টায় ভ্রুণমোচন হয় তার। জন্ম নেয়া ৬ মাসের মৃত শিশুটিকে নিকটবর্তী জায়গায় তারা মাটি চাপা দেয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

এঘটনায় রামু থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় আসামী করা হয়েছে, রামু ইউনিয়নের মাঝিরকাটা দীপপাড়া এলাকার মৃত ফজল আহমদের ছেলে আলী আকবর (৩০) ও তার ভাই মোহাম্মদ হানিফকে।

ধর্ষিত শিশুটির অসহায় মা জানিয়েছেন, মামলার আসামি ও তাদের স্বজনরা ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন মহলে তদ্বির চালাচ্ছে এবং মামলা তুলে নিতে হুমকি অব্যাহত রেখেছে। এ নিয়ে বর্তমানে আমরা নানা শঙ্কায় রয়েছি।

এ ঘটনায় জেলা নারী-শিশু পাচার ও নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এইচএম এরশাদ ও সাধারণ সম্পাদক মো: আবুল কাশেম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা যৌথ বিবৃতিতে জানান, বর্তমান সমযে সরকার নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ ঘটনা সমাজে ভয় ও পশ্চাদপসারণের মনোভাব সৃষ্টি করে। এধরনের নেক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আইন অনুযায়ী শাস্তি, সুষ্ঠ তদন্ত এবং অবিলম্বে আসামীদের গ্রেফতারের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানায়। আসামীরা যেন আইনের ফাঁক থেকে বের হয়ে যেতে না পারে সেই ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের সুনজর কামনা করেন।

রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি ) প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান, এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। এ ধরণের পৈশাচিক ঘটনা মেনে নেয়া যায়না। অপরাধীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে এবং গ্রেফতারের চেষ্ঠা চলছে।

—–

চকরিয়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জন্য দোয়া চাওয়ায় মুসল্লিদের উপর হামলা

বিশেষ প্রতিবেদক ॥

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা সদরের চিরিঙ্গা আসন্ন ইউপি নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জন্য জুমার মোনাজাতে দোয়া চাওয়ার ঘটনা নিয়ে দুবৃত্ত হামলায় ৭ মুসল্লি আহত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর মধ্যম বুড়িপুকুর জামে মসজিদ এলাকায় এঘটনা ঘটেছে।

অভিযোগে জানা গেছে, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মধ্যম বুড়িপুকুর জামে মসজিদের পেশ ঈমাম স্থানীয় চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সকল চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জন্য মোনাজাতে দোয়া করা হয়। ওই ঈমাম কতৃক সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জন্য দোয়া চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় একদল দুবৃত্ত। তারা মুসল্লিদের উপর হামলা চালিয়ে সাত জনকে গুরুতর আহত করেছে। আহতদের তাৎক্ষনিক নাম জানা যায়নি।

এদিকে, মসজিদের মুসল্লিদের উপর হামলার খবর পেয়ে চকরিয়া থানার এসআই আলমগীরসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় অজ্ঞাত দৃবৃত্তরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে পালিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুড়িপুকুর এলাকায় উত্তেজনা পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: