ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

মিয়ানমার থেকে আসছে গবাদিপশু

জসিম মাহমুদ, টেকনাফ ::  কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে মিয়ানমার থেকে টেকনাফ শাহ পরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে পশু আমদানি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। বৈরি আবহাওয়া কারণে কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর গত ৫ দিনের ৩২টি ট্রলারে ৫ হাজার ২১৮টি গবাদি পশু আমদানি করা হয়েছে। এর মাঝে ৩ হাজার ৮৪৮টি গরু ও ১ হাজার ৩৭০টি মহিষ।
টেকনাফ শুল্ক বিভাগ সূত্র জানায়, ২০০৩ সালের ২৫ মে টেকনাফের সাবরাংয়ের শাহপরীর দ্বীপ নাফ নদীর পার্শ্বে একটি ক্যাডল করিডোর চালু করে। প্রতি গরু-মহিষ থেকে ৫শ ও ছাগল ২শ টাকা হারে রাজস্ব আদায় করা হয়। গত ৫ দিনের ৩২টি ট্রলারে প্রায় ৫ হাজার ২১৮টি গবাদি পশু আমদানি করা হয়েছে। এর মাঝে ৩ হাজার ৮৪৮টি গরু ও ১ হাজার ৩৭০টি মহিষ। এতে রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ২৬ লাখ ৯ হাজার টাকা।
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বাঁধা সৃষ্টি না করলে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে চাহিদা মেটাতে এবারও মিয়ানমার থেকে বিপুল পরিমাণ গবাদিপশু আমদানির পরিকল্পনা নেয়ার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শহীদুল ইসলাম, আবু ছৈয়দ মেম্বার , আবুদু শুকুর, মো. সোহেল, নুরুল আলম ,সোহেল,জুবাইরসহ আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ২০-২৫ হাজার গবাদিপশু মিয়ানমার থেকে আমদানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
করিডরের ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম জানান, বৈরি আবহাওয়া কারণে কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর গত ৪দিনে প্রায় এক হাজার ৭০টি গবাদিপশু মিয়ানমার থেকে আমদানি করেছি। ঈদে গরু চাহিদা থাকায় দামও ভাল পেয়েছি। গত কাল ২৮০ টি বড় গরু বিক্রি করি ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা দামে। এখন লক্ষ্য কোরবানির ঈদের চাহিদা পূরণ করা। তবে গবাদি পশু আমদানি এবং ক্রয়-বিক্রয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছি এবং কোথাও কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে না। এই ভাবে আমদানি অব্যাহত থাকলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাজারে এবারের কোরবানে পশুর সংকট হবে না বলে মনে করি।
কুমিল্লার গরু ব্যবসায়ী জলিল হাওলাদা বলেন, শাহ পরীর দ্বীপ করিডরে তিন মণ ওজনের একটি গরুর দাম পড়ছে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। চার মণ ওজনের গর ৮৫-৯৫ হাজার ও পাঁচ মণের বেশি ওজনের গরু ১ লাখ ২০-১ লাখ ৪০ হাজার টাকা তার চেয়ে বেশি। এসব গরু চট্টগ্রাম, নোয়াখালি, কুমিল্লার,ঢাকার বিভিন্ন হাটে বিক্রি হচ্ছে ৮৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় বিক্রয় করা হবে। তিনি বলেন, মিয়ানমারের পশু মোটাতাজা হওয়ায় ব্যবসায়ীরা চড়া দামে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।
টেকনাফের ব্যবসায়ী আবু ছৈয়দ মেম্বার চকরিয়া নিউজকে বলেন, প্রতিবারের মতো স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কোরবানির পশুর জন্য ঝুঁকেছেন মিয়ানমারের দিকে। মিয়ানমার থেকে প্রচুর পশু আসছে শাহপরীর দ্বীপ করিডরে। এসব পশু নিয়ে টেকনাফ  সদরের গরু বাজারে , টেকনাফ মিঠাপানির চড়া, সাবরাং ইউনিয়ন কমপ্লেক্স, শাহপরীর দ্বীপের নাফনদীর বেড়িবাধ ও পুরাতন বাজারের বেশ কয়েকটি স্থানে পশুর হাট জমে উঠেছে।
টেকনাফের শুল্ক কর্মকর্তা মোঃ ময়েজ উদ্দীন বলেন, মিয়ানমারের পশু আমদানী করে এই করিডোর রাজস্বে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। বৈরি হাওয়ায় গত কয়েকদিন পশু আমদানি বন্ধের পর সোমবার থেকে পশু আসা শুরু হয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র করিডর শাহপরীর দ্বীপ দিয়ে মিয়ানমার থেকে গত মাসে ৬ হাজার ৭৪৪টি গরু ও ৩ হাজার ৩৫১টি মহিষ আমদানি করে ৫০লাখ ৪৭হাজার ৫০০ টাকার রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়। এ স্থলবন্দর থেকে সদ্যসমাপ্ত জুলাই মাসে প্রায় ১৫ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করা সম্ভব হয়েছে। তবে পশু আমদানি অব্যাহত থাকলে রাজস্ব আয়ও বাড়বে। পশু আমদানী বাড়াতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: