ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

রামুতে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

আবদুল মালেক সিকদার, রামু ::
রামু টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিউট এর অফিস সহকারী উৎপল কুমার দাশ কতৃক নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ২৫ জুলাই সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টা ক্লাস বর্জন করে দফায় দফায় আন্দোলন করে ছাত্র ছাত্রীরা,এদিকে খবর পেয়ে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা ও রামু থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের শান্তনা দে, এবং অভিযুক্ত অফিস সহকারী উৎপল কুমার দাশের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। উৎপল কুমার দাশ চট্টগ্রাম রাউজান উপজেলার কদমতলী খোন্দকার পাড়া এলাকার সুনীল কুমার দাশের ছেলে।
২৪ ই জুলাই উৎপল কুমার দাসের বিরুদ্ধে মহাপরিচালক বস্ত্র অধিদপ্তর ও উপ-পরিচালক এবং পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। লিখিত অভিযোগে শিক্ষার্থী জানান উৎপল স্যার আমাকে একদিন বলছে আমার সাথে দেখা করিও, আমি স্যারের রুমে গেলাম তখন স্যার আমাকে দরজা বন্ধ করতে বলে, দরজা বন্ধ করার পর স্যার আমাকে বলে তোমাকে আমার অনেক ভালো লাগে, তোমার কোন অসুবিধা আছে ,এরপর আমি স্যার কে বলি আপনি আমার বাবার মতন, স্যার উল্টো আমাকে বলে না তুমি আমাকে নাম ধরে বলবা, আর তুমি করে বলবা, এতগুলো মেয়ে থাকতে আমার তোমাকে ভালো লাগছে, তোমাকে আমি যা বলি করবা, পরীক্ষার আগে সব প্রশ্ন আমি দিবো তোমাকে, এ কথাগুলো কাউকে বললে স্কুল থেকে বের করে দিব, আমি কাউকে কোন কিছু বলেনি কারণ আমি লেখাপড়া করতেছি অনেক কষ্ট করে, আমার একটা স্বপ্ন আমি লেখাপড়া করি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে কিছু করবো, স্যার আমাকে ভয় দেখাইয়েবলে সুপার স্যার কে বললে আমাকে স্কুল থেকে বের করে দিবে, এ কথাগুলো স্যার আমাকে বললে আমি কাউকে বলতাম না, আরেকদিন আমাকে উপরের লাইব্রেরীতে ডেকে বলে কল করো নাই কেন কাল সকাল সাতটায় ৭ টাই স্কুলে আসতে পারবা তোমার সাথে কিছু কথা আছে, আরো বলে( কনডম আনব)
আমি স্যার কে এটা কি বললে,
স্যার আমাকে একটা কাগজে লিখে দেখায়, স্যার আমাকে বলে চিনে ও না চেনার মতন করতেছ কেন। আমি স্কুলে আর আসিনি, পরের দিন স্কুলে আসলে আমাকে জিজ্ঞেস করে স্কুলে আসোনি কেন স্কুল ছুটির পর আমার সাথে দেখা করিও,
এরপর আমি স্কুলে বসে কান্না করছিলাম, স্কুলের ম্যাডাম ও স্যারদের আমি কথাগুলো বললাম, তখন স্কুলের সুপার স্যার এবং সকল স্যার ও ম্যাডাম দের সহযোগিতায় লেখিত অভিযোগ দিলাম।
২৩ জুলাই আমাকে ও আবারো স্কুলের ছুটির পর দেখা করতে বলে এবং রুমে ডাকে, খারাপ কথা বলে, এবং উপরে যেতে বলে সবাইকে ফাঁকি দিয়ে আমি দূরে এসে আবারো ম্যাডাম কে ঘটনাগুলো খুলে বলি ।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান আমি প্রশাসনের সহযোগিতা চাই আমার নিরাপত্তা চাই উৎপল দাশের এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
ভিকটিমের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট সুপারেন্টেন প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ দাস জানান উক্ত বিষয়ে সঠিক তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর একটি লিখিত প্রতিবেদন পাঠিয়েছি, উৎপল দাস আমাকে ও আমার স্ত্রীকে হুমকি দিচ্ছে।
সহকারী শিক্ষক আবু ইউসুফ মোহাম্মদ হানিফ ও নিউচং মঘ জানান উৎপল দাশ মোবাইল এর মাধ্যমে আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের কেও হুমকি দিচ্ছে, যদি আমরা তার বিরুদ্ধে কথা বলি ৪ টি লাশ পড়াবে বলে হুমকি দিয়ে জানান। টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট এর ছাত্র ছাত্রীরা জানান আজ সকাল থেকে উক্ত উৎপল কুমার দাসের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তির প্রদানের লক্ষ্যে আমরা সকাল থেকে ক্লাস বর্জন করেছি, আমরা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্ষক উৎপল কুমার দাসের এর যথাযথ শাস্তি কামনা করছি, এ ব্যাপারে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমা জানান খবর পেয়ে আমি টেক্সটাইল ভোকেশনাল এ পরিদর্শনে গিয়েছিলাম, গিয়ে দেখলাম অভিযুক্ত অফিস সহকারি উৎপল দাসের পক্ষে বিপক্ষে অনেক কথা শুনলাম,
অধিকাংশ শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক উৎপল দাস এর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে আমরা পেয়েছি, এ ব্যাপারে আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়ে দিয়েছি,তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত টেক্সটাইল ভোকেশনাল এর অফিস সহকারি উৎপল কুমার দাশ নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে বলেন এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আমার সুনাম নষ্ট করার জন্য এবং প্রতিষ্ঠানে থেকে আমাকে বের করার জন্য মূলত ভিকটিমকে ব্যবহার করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: