ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়ায় এইচএসসি’তে ফলাফল বিপর্যয়, নেপথ্যে এনজিও’র চাকরি

নিউজ ডেস্ক ::  উখিয়ায় এইচএসসি পরীক্ষার এ বছরের ফলাফলে চরম বিপর্যয় ঘটেছে। দুটো কলেজ থেকে ১০৫০ জন এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করলেও বুধবার ১৭জুলাই প্রকাশিত ফলাফলে উত্তীর্ণ হয়েছে মাত্র ৩৬৬ জন। বিপর্যয়কর এ পরিণতির জন্য শিক্ষক ও অভিভাবকরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংশ্লিষ্ট এনজিও গুলোকে দায়ী করছেন। জিপিএ পাঁচ বা এ ধরণের উল্লেখযোগ্য কোন ফলাফল নেই।
প্রকাশিত এইচএসসি ফলাফল অনুযায়ী উখিয়া  ডিগ্রী কলেজ থেকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে মোট ৫৬৮ জন ছাত্র ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। তম্মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে মাত্র ১৫৪ জন। ফেল করেছে ৪১৪ জন। অর্থাৎ পাশের হার ২৩ শতাংশ। উখিয়া বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ থেকে এবার তিন শাখায় এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মোট ৪৮২ জন। তম্মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২১২ জন। ফেল করেছে ২৭০ জন। পাশের হার ৪৪ শতাংশ।
উখিয়ার বালুখালী এলাকার অভিভাবক হাজী নুরুল আলম বলেন, রোহিঙ্গারা আমাদের সব কিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। অন্যান্য কিছুর সাথে আমাদের মূল যেটি গুরুত্ব পূর্ণ শিক্ষা সেটিও চরম বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। উখিয়া সদরের হাজির পাড়ার অভিভাবক হারুনুর রশীদ বলেন, এখানকার অধিকাংশ অধ্যায়নরত ছাত্র ছাত্রীরা টাকার নেশায় জড়িত হয়ে পড়ছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে শতাধিক এনজিওতে কোন না কোন পদে শিক্ষার্থী ছেলে মেয়েরা চাকরি করছে। মাসিক বেতনও মোটামুটি। অনেক অসচ্ছল, দরিদ্র, গরীব পরিবারের পিছিয়ে থাকা অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েরা চাকরি করছে, ভাল বেতন পাচ্ছে তাতেই খুশী।
অনেক অভিভাবক জানান, প্রতিবেশী বা সমবয়সী বন্ধু বান্ধবীদের দেখায় দেখায় ও তাদের পাল্লায় পড়ে অনেক ছেলে মেয়ে পরিবার থেকে বকে যাচ্ছে। তারা এসএসসি বা এইচএসসি পাশ না করলেও কম্পিউটার থেকে জাল শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ দিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরি করছে। এসব ছেলে মেয়েরা পরিবারের চাপের মূখে পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাশ করতে পারছে না। কারণ তাদের মন মানষিকতা লেখাপড়ার দিকে নেই।
উখিয়া ডিগ্রী কলেজ অধ্যক্ষ ফজলুল করিম অভিভাবকদের উল্লেখিত অভিযোগ ও ক্ষোভ স্বীকার করে বলেন,গত দুই বছর ধরে কলেজের দৈনন্দিন শিক্ষার্থীর উপস্হিতি আশংকাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। ছাত্র ছাত্রীরা পড়লেখা না করলে পরীক্ষায় পাশ করবে কেমন করে। তিনি অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও স্হানীয়  নেতৃবৃন্দদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উখিয়া বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের প্রতিষ্টাতা অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন,বেশ কিছু দিন যাবৎ বিভিন্ন ফোরামে উখিয়ার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের লেখাপড়ার মান ও শিক্ষার্থীদের উপস্হিতি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সর্তক করে আসছি। এনজিও গুলোকে বলে আসছি যাতে কোন ভাবে স্কুল, কলেজের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের কোন পদে চাকরি দেয়া না হয়। আমার এ দাবীকে স্থানীয় ভাবে কিছু মহল অন্যভাবে নিয়ে ছাত্র ছাত্রী ও অভিভাবকদের উস্কিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা ও ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু আমি আমার বক্তব্যে অটল।কারণ লেখাপড়া না শিখে ভাল মানুষ হতে না পারলে টাকা দিয়ে কি হবে।

পাঠকের মতামত: