ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

কুতুবদিয়ায় জোয়ারে বিলীন হচ্ছে ঝাউবাগান

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি ::
কুতুবদিয়া দ্বীপের সৃজিত ঝাউবাগান বিলীন হয়ে যাচ্ছে জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে। দ্বীপ রক্ষায় ঝাউবাগান সৃজন করা হলেও ঝাউবাগান রক্ষায় কোন প্রকল্প নাই। ফলে দিন  দিন .ফুরিয়ে যাচ্ছে গাছ। একই সাথে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তিরা রাতের আঁধারে কেটে নোর অভিযোগও রয়েছে। উপজেলার পশ্চিম প্রান্তে সৈকতজুড়ে ব্ধাঁ রক্ষায় উপক’লীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৫ কিলোমিটার জুড়ে ঝাউবাগান সৃজন করে স্থানীয় বনবিভাগ। উত্তর ধুরুং,দক্ষিণ ধূরুং,বাতিঘর পাড়া, কৈয়ারবিল ঘিলাছড়ি,বড়ঘোপ চানমিয়া পাড়া,মাতবর পাড়া ও আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের কিছু অংশে এসব ঝাউবাগান গড়ে তোলা হয়। সমুদ্রের অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি বৃদ্ধি,ছাগলের উপদ্রপ,জেলেদের অবাধ বিচরণ সহ নানা কারণে চারা অবস্থাতেই অনেকটা বিফলে যায়। বাকিটা বেড়ে ওঠার সাথে সাথে অসাধু চোর সিন্ডিকেটও ক্ষতি সাধন করে ঝাউবাগানের।
অপরদিকে নানা প্রতিকুলতার অজুহাতে সাবেক রেঞ্জার অসিত বরণ দে গত ৪ বছর ধরে নতুন বাগান তৈরিতে হাত দেননি। যে কারণে বাগান বৃদ্ধি দূরের কথা বরং সারা বছরই কমে যাচ্ছে।
গত ২২ জুন বড়ঘোপ মাতবর পাড়া এলাকায় সরেজমিন ঝাউবাগানে গেলে দেখা যায়, জোয়ারের আঘাতে অন্তত ২০টি গাছ উপড়ে পড়ে আছে। বনবিভাগের কাউকেই চোখে পড়েনি। স্থানীয়রা অনেকেই
এসব গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ওই এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা জানান, গাছের গোড়ায় জোয়ার এলেই প্রতিদিনই গাছ পড়ে যাচ্ছে। বন প্রহরীরা খোঁজ খুব কমই নেন। যে কারণে সুযোগ বুঝে রাতের আধাঁরে কেটে নিচ্ছে অনেকেই। এ ছাড়া কিছু দিন আগেও ওই সব ঝাউবাগানের পাশ থেকে বালি নেয়ার ফলে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে সহজেই গাছের গোড়া আলগা হওয়ায় সামান্য পানিতেই মাটিতে পড়ে যায় গাছগুলো। অবশ্য এখন বালি নেয়া হয়না বলেও জানান তিনি।
বৃক্ষবান্ধব নামে পরিচিত অবসর প্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিদর্শক ডা: অমুল্য রতন বলেন, দ্বীপ রক্ষা বেড়িবাঁধ দেয়া হয়েছে। প্রতিবছরই এ বেড়িবাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। কি›তু এটি রক্ষায় পর্যাপ্ত গাছ রোপন করা হয়নি। বেড়িবাঁধের বাইরে লবনাক্ততা সহনীয় ঝাউগাছ রোপন করা হলে গাছে ঢেউয়ের আঘাত ফেরাবে। একই সাথে পলিমাটি জমে উচুঁ হবে সৈকত এলাকা। পানির স্তর নীচে নেমে যাবে প্রতিবছর। এভাবেই দ্বীপরক্ষা করা সম্ভব বলে তিনি জানান।
স্থানীয় বনবিভাগের বর্তমান রেঞ্জার ইসমাইল হোসেন বলেন, জোয়ারের পানিতে বেশ কিছু জায়গায় ঝাউগাছ উপড়ে যাচ্ছে। এগুলো সংরক্ষণে একাধিক কর্মচারিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বাগানের ভেতরেই সংরক্ষণ করে পরে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে নিলাম দেয়া হবে। তবে সৃজিত বাগানগুলি যাতে রক্ষা হয় সে জন্য তিনি চারিদিকে আরো ঝাউবাগান তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। এজন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিন পরিদর্শনও করেছেন বলে জানান তিনি।

পাঠকের মতামত: