ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা,রামু চৌমুহনী’র করুণ দশা

কামাল হোসেন, রামু ::  কক্সবাজারের সবচেয়ে আলোচিত ও নান্দনিক উপজেলা হচ্ছে রামু।রামুকে বিশ্বখ্যাত সৈকতনন্দিনি কক্সবাজারের সতীন রুপসিও বলা হয়।আর চৌমুহনীকে বলা হয় রামু’র প্রাণকেন্দ্র।অপরিকল্পিতভাবে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা রাখায় আজ করুণ দশায় পরিনত হয়েছে রামু সদরের এই গুরুত্বপূর্ণ স্থান চৌমুহনী চত্বরটি। সরজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়,রামু’র চৌমুহনীতে রয়েছে ছোট বড় প্রয় ৩ শতাধিক দোকান।এসব দোকানের ময়লা আবর্জনা গুলো বাস ষ্টেশনের পাশে ফুটপাতের উপরে যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলেরাখা হয়।অথচ সেখানে রয়েছে ময়লা ফেলার একটি ডাষ্টবিন।সেটিও অনেক আগেই ভরপুর হয়ে গেছে।এই ডাষ্টবিনটি পুনরাই ব্যবহার উপযোগী না করে তার পাশেই যত্রতত্র ভাবে ময়লা রাখা হচ্ছে।কোন যাত্রী বাস থেকে নামলেই প্রথমে চোখে পড়ে এই আবর্জনার স্তুপটি।অনেক সময় ময়লার স্তুপটি বড় হলে এটি সরিয়ে না পেলে এতে আগুন লাগিয়ে পুড়ে ফেলতেও দেখা যায়।ময়লাগুলো আপসারন করা হয় দির্ঘদিন পর পর।তাই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে।যেখানে ময়লা রাখা হয় সেখানে রয়েছে একটি প্রস্রাবখানা ও একটি টিউবওয়েল।ময়লা ফেলার কারনে প্রস্রাবখানা ও টিউবওয়েল দুটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।যার কারনে ব্যবসায়ি ও দোকানের কর্মচারীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।চৌমুহনী ভিআইপি মেডিকো’র মালিক ডাঃ ওসমান গনি জানান,আমাদের দোকানের সামনের জায়গাটি আমারা কর্মচারীদের দিয়ে পরিষ্কার করিয়ে ফেলি।আর ময়লাগুলোও তারা নিদৃষ্ট পয়েন্টে রেখে আসে।চৌমুহনীর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বর্জ্য সংগ্রহকারী কর্মী না থাকায় এবং ষ্টেশনের পাশে ডাম্পিং পয়েন্ট রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেক ব্যাবসায়ী।দোকানের কর্মচারীদের ময়লা পরিষ্কার কাজে অনিহা থাকলেও বাধ্য হয়ে চাকরির স্বার্থে তা করতে হয়।তাইতো অনেক দোকানের কর্মচারীরা ময়লাগুলো নিদৃষ্ট পয়েন্টে না ফেলে যেখানে সেখানে রেখে যেতেও দেখা যায়।
রামু বৌদ্ধ ঐতিহ্য,সংস্কৃতি ও পুরাকির্তী সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি ভদন্ত প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বলেন,রামুতে রয়েছে অনেক ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। এগুলো দেখতে আসা অনেক পর্যটক রামুর অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখে এখানকার বসবাসকারী মানুষের রুচি নিয়ে প্রশ্ন তুলেন।যা আমাদের জন্য খুবই লজ্জার।

রামুর বনিক সমিতির সভাপতি আধ্যাপক রফিকুল আলম অভিযোগের সত্যতা স্বিকার করে বলেন,আমরা সম্প্রতি রামু উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় বিষয়টি জোরালোভাবে উত্তাপন করেছি। আমরা চৌমুহনী ষ্টেশন থেকে একটু দুরে ময়লা রাখার একটি জায়গা বরাদ্দ সহ ময়লা নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি গাড়ি এবং বর্জ্য সংগ্রহ কর্মী নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব করেছি।আশা করছি দ্রুত পেয়ে যাবো।
রামু সদর ফতেঁখারকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম জানান,আমি চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদানের পর ব্যক্তিগত উদ্দ্যোগে চৌমুহনী চত্বর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে আশেপাশে অনেকগুলো ডাষ্টবিন স্থাপন করেছি।নিজের টাকায় প্রতিমাসে ২২ হাজার টাকা মজুরিতে ২ জন বর্জ্য অপশারন কর্মী নিয়োগ দিয়েছি।প্রায় দুই বছর চালিয়েছি।বনিক সমিতির পক্ষথেকে ২ জন কর্মী দেয়ার কথা থাকলেও তা এখনো পর্যন্ত দেয়া হয়নি।আমারও সীমাবদ্ধতা থাকায় পরবর্তিতে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।তবে উপজেলা সমন্বয় সভায় বারবার বিষয়টি উত্তাপন করে আসছি।সেখানেও সহায়তা পাইনি।সম্প্রতি নতুন ইউএনও র সাথে আমার কথা হয়েছে। খুব শিঘ্রই সমস্যাটি সমাধান করা হবে বলে তিঁনি আমাকে আস্বস্ত করেছেন।রামু ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী মিলনায়তনের গেইট সংলগ্ন টিউবওয়েলের পাশে প্রশ্নবিদ্ধ ডাষ্টবিন স্থাপনের বিষয়টি তিনি স্থাপন করেন নি বলে জানান এবং এটি সেখানে কে স্থাপান করেছে তাও তিনি জানেন না। রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা বলেন,আমি রামুতে নতুন যোগদান করেছি।চৌমুহনীর বর্তমান চিত্র দেখে আপনাদের মতো আমিও আহত হয়েছি।চৌমুহনীকে পরিচ্ছন্ন ও যানজট মুক্ত রাখতে যা যা করা দরকার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সবই করা হবে এবং তা যত দ্রুত সম্ভব।আমি ইতিমধ্যে বনিক সমিতির সভাপতি ও সদর ইউনিয়ের চেয়ারম্যানের সাথে এনিয়ে কথাও বলেছি।তবে আমাকে একটু সময় দিতে হবে এবং সহযোগীতা করতে হবে।

পাঠকের মতামত: