ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

টেকনাফে মার্কেট গুলো ক্রেতা শুন্য !! ব্যবসায়ীরা বিপাকে

গিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ ::

আর মাত্র কয়েক দিন পর অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে খুশি আর আনন্দে ভরা ঈদুল ফিতর। কিন্ত টেকনাফে সাধারন মানুষের মধ্যে ঈদের কোন আমেজ   নেই। কারন দীর্ঘ ৮ মাস ধরে টেকনাফ উপজেলার আনাচে কানাছে চলছে মাদক বিরোধী সাঁড়াশী অভিযান। চলমান এই অভিযানে গত কয়েক মাসের ব্যবধানে এই পর্যন্ত আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে প্রায় শতাধিক অপরাধী নিহত হয়েছে। এতে সাধারন মানুষের মাঝেও বিরাজ করছে ভয় আর আতংক। অনুসন্ধানে দেখা যায়, অত্র উপজেলার এলাকার বেশ কয়েকজন চিহ্নিত মাদক কারবারীর জন্য টেকনাফের সাধারন মানুষ বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এই মাদক কারবারীদের জন্য বিগত কয়েক বছর ধরে নাফনদী নির্ভর প্রায় ১০ হাজার জেলে পরিবারের সদস্যরা নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। তাদের দুঃখের কথা লিখতে গেলে শেষ হবেনা । কারন এই নদীতে মাছ শিকার করা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। টেকনাফের সুশীল সমাজের ব্যাক্তিরা অভিমত প্রকাশ করে বলেন, দোষ করেছে একজন, আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দশ জন!

তারা প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করে বলেন,মাদক কারবারে সক্রিয় ভাবে যারা জড়িত সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতাই নিয়ে এসে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক। পাশিপাশি এই চলমান অভিযানে কোন নিরপরাধ মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

এদিকে টেকনাফ উপজেলার মানুষ ঈদের আনন্দ উপভোগ করার জন্য এবং জনগনের ঈদ কেনাকাটার চাহিদা মেঠাতে টেকনাফ পৌর শহরের আওতাদ্বীন বার্মিজ মার্কেট,শহিদ আলী উল্লাহ শপিং কমপ্লেক্স,টেকনাফ নিউ মার্কেট,গনি মার্কেট,মদিনা টাওয়ার,ফরিদ মার্কেট, এজার মিয়া কোম্পানী মার্কেট,আলী আহম্মদ মার্কেট,বার্মিজ মার্কেট গুলোর ব্যবসায়ীরা কিশোর,কিশোরী, ছোট বড়, যুবক,যুবতী ও শিশুদের জন্য হরেক রকমের নিত্য-নতুন কাপড় ও নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্যে ভরপুর করে দোকান গুলোকে সাজানো হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন রুপে। এদিকে ২৩ রমজান গত হয়ে গেল। কিন্তু শপিংমল গুলোতে কেনাকাটা এখনো জমে উঠেনি। ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই ক্রেতা শুন্য হয়ে যাচ্ছে এই মার্কেট গুলো। এতে ব্যবসায়ীরা পড়েছে বিপাকে। আর মাত্র কয়েকদিন পর ঈদুল ফিতর। কিন্তু টেকনাফে সেই ঈদের আনন্দ এখনো জমে উঠেনি! ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে শপিংমলের দোকান গুলোতে হরেক রকমের কাপড় ঝুলানো তা বিক্রি করার জন্য কোন ক্রেতা নেই।

ব্যবসায়ীরা জানান প্রতি বছরের ন্যায় অত্র এলাকার মানুষের চাহিদা পুরণ করার জন্য দোকান গুলোতে লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছি। কারন প্রতি বছর এ সময়ে প্রচুর কেনাকাটা হত এবং ক্রেতাদের ভিড়ে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠতো মার্কেট গুলোর চিত্র।

তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়, সরকারের কঠোর নির্দেশনা অনুযায়ী সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে যে সমস্ত অপরাধীরা মাদক কারবারে জড়িত তাদেরকে নির্মুল করার জন্য আইন শৃংখলা বাহিনীর চলমান সাঁড়াশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ,বিজিবি ও র‍্যাব সদস্যদের এই অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে প্রায় এক শতাধিক মাদক কারবারী নিহত হয়।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারী নিজের ভুল স্বীকার করে অন্ধকার জগৎ ছেড়ে আলোর পথে ফিরে আসার জন্য ১০২ জন মাদক কারবারী আত্বসমর্পন করে। এবং দ্বিতীয় বারের আত্বসমর্পন প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে প্রায় অর্ধ-শতাধিক মাদক কারবারী পুলিশ হেফাজতে রয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে মাদক বিরোধী চলমান যুদ্ধ অব্যাহত থাকায় অত্র এলাকার সাধারন মানুষের মধ্যেও বিরাজ করছে আতংক।

তথ্য সুত্রে আরে দেখা যায় এই এলাকা তরুন বয়সি অনেক যুবক এখন এলাকা ছাড়া কারন তারা মাদক পাচারসহ নানা অপরাধে জড়িত। ব্যবসায়ীরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এবারের ঈদের কেনাকাটা যদি এভাবেই চলতে থাকে এবার ঈদে ব্যবসায়ীদের প্রচুর টাকা ক্ষতি  হওয়ার আশংকা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিশ্চুক অনেক ব্যবসায়ী সুদের উপর টাকা হওলাদ নিয়ে দোকানে নতুন মালামাল তুলেছে।

পাঠকের মতামত: