ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি লামার যে গ্রামে!

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ::

“আমাদের গ্রামখানি ছবির মতন, মাটির তলায় এর ছড়ানো রতন”। হরিতে-হিরণে, সবুজে-শ্যামলে, সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা একটি গ্রাম লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ‘চাংগ্য কারবারী পাড়া’। উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার পূর্বে রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে গ্রামটি অবস্থিত।

এই গ্রামের শতভাগ মানুষ কৃষি নির্ভর। পাড়াবাসির উৎপাদিত শস্য, শাক-সবজি, ফলমূল স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হচ্ছে। এমন সম্ভাবনাময়ী একটি গ্রামে এখনো কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। গত দশ বছরে বর্তমান সরকার এ ইউনিয়নে শত কোটি টাকার উন্নয়ন করলেও এই উপজাতি পাড়াটি ও তার আশপাশের এলাকায় কোন ধরনের উন্নয়ন হয়নি।

লামা- রুপসীপাড়া সড়ক থেকে মাত্র পাঁচশত গজ দুরত্বে এ পাড়ার একমাত্র চলাচলের কাঁচা রাস্তাটি খানাখন্দে হয়ে বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তাটি উন্নয়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বেশ কয়েকবার প্রতিশ্রুতি দিলে এখনো পর্যন্ত রাস্তাটি নির্মাণ করেনি বলে জানিয়েছে পাড়াবাসী। রাস্তাটি নির্মাণে পাড়াবাসী সহ আশপাশের প্রায় ৭০ পরিবারের ৩ শতাধিক লোকজন উপকৃত হত।

সরজমিনে গেলে পাড়াবাসীরা জানিয়েছেন, ১৯৯৭ সালে বান্দরবানের সংসদ সদস্য বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এ পাড়ায় আসেন। রাস্তাটির বেহাল অবস্থা দেখে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে রাস্তাটি সংস্কার করার নির্দেশ দেন। এর পর থেকে অদ্যাবধি ২২ বছর পেরিয়ে গেলেও রাস্তাটি উন্নয়নে কোন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কয়েক বছর আগে রাস্তাটি উন্নয়নে এডিপি খাত হতে বরাদ্দ দেয়া হলেও তার কেটে নিয়ে ইউনিয়নের অন্য ওয়ার্ডে কাজ করা হয়।

এছাড়া পাড়ার মাত্র ৫০০ গজ উত্তর পাশ দিয়ে রুপসীপাড়ায় বিদ্যুৎ গেলেও এই পাড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি। অপরদিকে বিদ্যুৎ সংযোগের আশ্বাস দিয়ে দুই বছর আগে দরিদ্র পাড়াবাসী কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিলো। সরকার বিদ্যুৎ বিহীন এলাকায় সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করলে এই পাড়ার লোকজন সোলার পায়নি।

পাড়ার মহিলারা আরো জানিয়েছেন, বৃষ্টি দিলে মাটির রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে অনেক কষ্ট হয়। পাড়ার স্কুল কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করতে ভীষণ কষ্ট হয়। এলাকাবাসীর দাবী, আসন্ন বর্ষা মৌসুমের পূর্বে চলাচলের এ রাস্তাটি ব্রিক সলিংয়ের মাধ্যমে উন্নয়ন করা হোক।

ওয়ার্ড মেম্বার সুধাংশু বড়–য়া বলেন, একবার বরাদ্দ দেয়া হলেও তা কেটে নিয়ে অন্য ওয়ার্ডে কাজ করা হয়। বর্ষার পূর্বে রাস্তাটি মেরামত প্রয়োজন। বিষয়টি দুঃখজনক উল্লেখ করে ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা বলেন, শীঘ্রই রাস্তাটি উন্নয়ন পদক্ষেপ নেয়া হবে।

পাঠকের মতামত: