ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

রামুর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন আমাকে বিমুহিত করেছে  -ধর্ম প্রতিমন্ত্রী 

নীতিশ বড়ুয়া, রামু ::

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব এডভোকেট শেখ মোঃ আব্দুল্লাহ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বে বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের অসাম্প্রদাকি বাংলাদেশের চিত্র রামুতে না আসলে দেখতাম না। রামুতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন আমাকে বিমুহিত করেছে। এক সাথে বৌদ্ধ, হিন্দু ও ইসলাম ধর্মীয় গুরুদের অংশগ্রহন দেশের জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত। রামুতে প্রত্যেক ধর্মের প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ধর্ম মন্ত্রনালয়ের বড় একটি অংশ আপনাদের এমপি আমার প্রিয় ভাতিজা সাইমুম সরওয়ার কমলের হাতে ছেড়ে দিলাম। তিনি যখন যেটা চাইবে আমাদের মন্ত্রনালয় তাঁকে সেটাই দেবে। সে সাথে ধর্মমন্ত্রনালয়ের সকল কর্মকান্ডে আমরা এমপি কমলের সহযোগিতা নেব। কারণ আপনাদের প্রিয় এমপি কমল আমার অত্যন্ত আদরের। ছোট কাল থেকেই আমি তাকে চিনি, তাঁর পিতা মরহুম ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী ছিলেন আমার আপন ভাইয়ের মতো। যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান কমল এলাকার উন্নয়নে যেমন নিরলস পরিশ্রম করছেন, তেমনি সংসদেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছেন। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এমন সুন্দর জায়গায় আমরা নতুন কিছু করবো। এজন্য রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ জ্যোতিসেন থেরকে অন্যান্য ধর্মীয় নেতাদের সাথে নিয়ে ধর্মমন্ত্রনালয়ে যাওয়ারও দাওয়াত দেন তিনি। তিনি রামুসহ দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুন্ন থাকার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে আগামীতে রামুতে আরো কয়েকবার আসার কথা ঘোষনা দেন।

২১ এপ্রিল, রবিবার তিনি রামু রাংকুট বনাশ্রমে প্যাগোড়া ভিত্তিক প্রাক-প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শন ও রামকোট তীর্থধাম মন্দির পরিদর্শন কালে একথা বলেন।

এ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সম্প্রীতি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল বৌদ্ধ ও হিন্দু পুজারীর পাশাপাশি পর্যটকদের মন্দিরের পাহাড়ে উঠার সুবিধার্থে এসকেলেটর (চলন্ত সিঁড়ি) সংযোগের দাবি জানিয়ে তিনি তাঁর বরাদ্ধ থেকে ৫ লক্ষ করে ১০ লক্ষ টাকা দেয়ার ঘোষনা দেন।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব এডভোকেট শেখ মোঃ আব্দুল্লাহ রামুর রাংকুটে পৌঁছলে বৌদ্ধ, হিন্দু মন্দির ও ইসলামী ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এবং প্রত্যেক ধর্মীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছায় অভিনন্দিত করা হয়।

এসময় অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সহধর্মীনিসহ পরিবারের সদস্য, মহিলা সাংসদ বাসন্তি চাকমা, ধর্ম মন্ত্রনালয়ের সচিব, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাষ্টি এড. দীপংকর বড়–য়া পিন্টু, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাষ্টি অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা চন্দন, রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফর রহমান, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল মনসুর, আওয়ামীলীগ নেত্রী এডভোকেট লীনা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভুষন বড়–য়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্প্রীতি সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বৌদ্ধদের পক্ষে রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ জ্যোতিসেন থের, হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষে রামকোট তীর্থধাম পরিচালনা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি সুশান্ত পাল বাচ্চু ও ইসলামী ফাউন্ডেশন কক্সবাজার সদরের সুপারভাইজার মাওলানা হাফেজ মোঃ আবুল ফয়েজ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহার ও জগৎজ্যোতি শিশু সদনের সাধারণ সম্পাদক রাজু বড়–য়া। রাংকুট জগৎজ্যোতি শিশু সদনে অনুষ্ঠিত আয়োজনে সদনের শিক্ষার্থীদের ছাতা নৃত্য, থালা নৃত্য ও কারাতে প্রদর্শন ধর্ম প্রতিমন্ত্রীসহ সকল অতিথিদের মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানে রামু উপজেলার বৌদ্ধ, হিন্দু, ইসলাম ধর্মের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও প্রশাসনিক, সামাজিক, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মতামত: