ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ওসির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক ::

ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ঢাকায় সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

বাদীর জবানবন্দি নিয়ে মামলাটি গ্রহণ করেন সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস শামস জগলুল হোসেন। একই সঙ্গে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) বিষয়টি তদন্ত করে আগামী ৩০ এপ্রিল প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় মামলাটি করা হয়।

দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগের মুখে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে আগেই প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার পর রাফির পরিবারকে সহযোগিতা না করার অভিযোগও আছে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে।

মামলা করার পর ব্যারিস্টার সুমন সাংবাদিকদের বলেন, ‘অসৎ উদ্দেশ্যে নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া এবং আপত্তিকর প্রশ্ন করায় সোনাগাজীর সাবেক ওসির বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছি।’

আরজিতে বলা হয়েছে, গত ২৭ মার্চ সকাল ১০টার দিকে মাদরাসার অধ্যক্ষ তাঁর অফিসের পিয়ন নূরুল আমিনের মাধ্যমে ছাত্রী রাফিকে ডেকে নেন। পরীক্ষার আধাঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে যৌন হয়রানি করেন অধ্যক্ষ। পরে রাফির পরিবারের করা মামলায় গ্রেপ্তার হন তিনি।

আরজিতে আরো বলা হয়, যৌন হয়রানির অভিযোগ করতে গিয়ে সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসির কক্ষে আরেক দফা হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল নুসরাতকে। ওসি নিয়ম না মেনে জেরা করতে করতেই নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ নেওয়ার সময় দুজন পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী ছিল না। নানা রকম কুরুচিপূর্ণ প্রশ্ন করা হয় তাকে। এরপর ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন ওসি। রাফিকে মানসিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ভিডিও করা এবং তা ছেড়ে দেওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের লঙ্ঘন ও বিচার্য।

মাদরাসার অধ্যক্ষ গ্রেপ্তার হওয়ার পর ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে মাদরাসায় যায় রাফি। সেখানে রাফির সহপাঠী নিশাতকে ছাদে কেউ মারধর করছে বলে সংবাদ দেয় এক ছাত্রী। রাফি ভবনের তিনতলায় গেলে তাকে মামলা তুলে নিতে চাপ দেওয়া হয়। রাজি না হওয়ায় দুর্বৃত্তরা তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রাফি মারা যায়। ওই ঘটনায়ও হত্যা মামলা হয়েছে।

আগুনে দগ্ধ করার পরও রাফির পরিবারকে সহযোগিতা করেননি ওসি মোয়াজ্জেম। এমনকি হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করেন। ‘পাঁচ অপরাধে বিচারযোগ্য ওসি মোয়াজ্জেম’ শিরোনামে গত কিছুদিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

পাঠকের মতামত: