ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় চাচার সাথে মায়ের পরকিয়ার প্রতিবাদ করায় প্রেমিক চাচার নেতৃত্বে সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা?

নিজস্ব প্রতিবেদক ::  চকরিয়ায় চাচার সাথে মায়ের পরকিয়ার প্রতিবাদ করায় চাচার নেতৃত্বে নুরুল ইসলাম (২২) নামের এক সন্তানকে শ্বাসরোধ করে নির্মম ভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে? এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে তড়িগড়ি করে স্থানীয় এক মেম্বারের নির্দেশনায় লাশ দাফন করা হয়েছে। ৯ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সকালে উপজেলার ডুলাহজারা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের রিংভং ছগিরশাহকাটা সোয়াজানিয়া গ্রামে ঘটেছে এ ঘটনা। এনিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ছগিরশাহকাটা গ্রামের আবদুল জলিল থাকেন প্রবাসে। স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে জড়িয়ে পড়েন দেবর জসিম উদ্দিনের সাথে পরকিয়া প্রেমে। বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা খরচ করতো পরকিয়া প্রেমিক দেবরের সাথে। পরকিয়া প্রেমিক জসিম উদ্দিন স্থানীয় ছগিরশাহকাটা দক্ষিণপাহাড় এলাকার আবুল কাসেমের পুত্র। মায়ের পরকিয়া প্রেমের বিষয়টি ধরা পড়ে যায় সন্ত্রান নুরুল ইসলামের হাতে। মা ও চাচাকে একাধিকবার বাধা দেওয়ায় দিন দিন ক্ষিপ্ত হয়ে সন্তানের উপর উভয়ের। এমনকি বিদেশে থাকা পিতাও রেগে যান। সর্বশেষ দেশে ফিরেন পিতা। বিষয়টি অনেকটা নিষ্পত্তির কাছাকাছি চলে যান। কিন্তু পরকিয়া প্রেমিক চাচার রাগ থেকে যায় সন্তানের (ভাতিজার) উপর। এদিকে ২মাস ধরে মা অবস্থান করছেন পিতৃালয় (সন্তানের নানার বাড়ি) ঢেমুশিয়ায়। বিষয়টিকে ভিন্নভাবে প্রবাবিত করে পরকিয়া প্রেমিক চাচার নেতৃত্বে ৯এপ্রিল ভোরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন সন্তান (ভাতিজা) নুরুল ইসলাম (২২) কে। পরে তাকে চকরিয়া জমজম হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কিন্তু স্থানীয় এক মেম্বারের যোগসাজসে তড়িগড়ি করে লাশ দাফনের জন্য ছগিরশাহকাটা স্কুল মাঠে আনা হলে জানাজার নামাজে আশার পথে পিতা আবদুল জলিল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে?। তাকে যে কারণে হত্যা করা হয়েছে, সে ততো বড় অপরাধ করেনি বলে দাবী করেন। এদিন বেলা ২টায় জানাজার নামাজ শেষে ছগিরশাহকাটা সোয়াজানিয়া মসজিদ কবরস্থানে শরীয়াহ মতে দাফন করা হয়েছে। কিন্তু লাশ দাফনের পূর্বমুহুর্ত পর্যন্ত নিহতের মুখে, চোখে ও নাক দিয়ে ফেনা (পানি) বের হচ্ছিল। তবে মৃত যুবকের একমাত্র ভাই আনোয়ার হোসেনের দাবী করেছেন, তার ভাই অসুস্থ ছিল। তিনি স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যু বরণ করেছেন। অপরদিকে স্থানীয় ১নং ওয়ার্ড এমইউপি রফিক উদ্দিনের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি নিহত নুরুল ইসলামকে টাইফয়েড রোগে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবী করলেও, ইতিপূর্বে তার চিকিৎসায় নিয়োজিত চকরিয়া সদরের রয়েল ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের চিকিৎসক আতাউর রহমান জানিয়েছেন, কোন ধরণের টাইফয়েড কিংবা টিভি রোগ নিহতের ছিলনা। তবে হার্ট ও পেটের একটু সমস্যা ছিল।
চকরিয়া জমজম হাসপাতালের এমডি মো: গোলাম কবির জানিয়েছেন, মধ্যরাতে একজন যুবককে চিকিৎসার জন্য এনেছিলেন। তবে হাসপাতালে আনার পূর্বেই মারা গেছে।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, নুরুল ইসলাম নামে এক যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে মৌখিকভাবে শুনেছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: