ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

নাইক্ষ্যংছড়ি-রামুর ৭ হাজার তামাক চুল্লিতে পুড়ছে কাঠ

SAMSUNG CAMERA PICTURES

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::   কক্সবাজারের রামু ও পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১৬ ইউনিয়নে প্রায় ৭ হাজার তামাক চুল্লিতে কাঠ পোড়ানোর ধুম পড়েছে। পাহাড়ি এ জনপদে তামাক চাষ হয়ে আসছে পাহাড়ের কাছাকাছি কৃষিজমি অথবা খাস ও বিএফ(পিএফ) জমিতে। তামাক কোম্পানী গুলোর কর্মীরা ভুলিয়ে-ভালিয়ে এ সব কৃষকের বাড়ির কাছের পাহাড়তলীতে তামাক চাষ দেয় কাঠ পোড়ানোর সুবিধার জন্যে। আর চাষ সামান্য দূরে হলে চাঁেদর গাড়ি ব্যবহার করে এসব তামাক চুল্লীতে কাঠ পোড়ানোর সুব্যবস্থা করে কোম্পানীগুলো। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রভাবশালীরা থাকেন নিশ্চুপ। এ সুযোগে সহজ সরল কৃষক গুলো যে যা পারে পাহাড় নিধন করে মূল্যবান কাঠ দিয়ে তামাক পোড়ায় রাত-দিন। এভাবে পাহাড় হয়ে যাচ্ছে ন্যাড়া্‌। আর চুল্লির কালো ধুয়াঁয় পরিবেশ হয়ে পড়ছে বিপন্ন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা) মামুন ইয়াকুব চকরিয়া নিউজকে জানান, তামাকের ভয়াবহতা সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে। সরকার নানাভাবে এ অবস্থার গতিরোধ করতে চেষ্টা করলেও তামাক কোম্পানী গুলোর কূটকৌশলের কাছে বারবার হচ্ছে ধরাশায়ী। এ সুযোগে কৃষি জমিতে তামাক চাষের দৌরাত্ম্য বাড়াতে কোম্পানী গুলো জোর প্রচেষ্টা খাটায় বরাবরই। এভাবে তামাক চাষ দিনদিন বাড়ছে কৃষি জমিতে।

রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুৎফর রহমান চকরিয়া নিউজকে জানান, আসলেই বিষয়টি দেখার। যদি তামাক পরিশোধনে কাঠ পুড়ানো হয়, তা হলে তো ব্যবস্থা নিতেই হবে। আর সে জন্যেই তিনি খোঁজ খবর নেবেন আজ-কালের মধ্যেই।
অপর দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন কচি চকরিয়া নিউজকে বলেন,তামাক চাষীদের নিরুৎসাহিত করতে চাষের শুরুতেই চিঠি দেয়া হয়েছিলো। কৃষি অফিসকে সজাগ থাকতেও বলা হয়েছিলো। কিন্তু তামাক পরিশোধনে কাঠ পুড়ানোর বিষয়টি তার জ্ঞাতে নেই। এখন জানতে পেরেছেন সুতরাং আইনত ব্যবস্থা নেয়া হবে যথাযথভাবেই।
বাকঁখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম আতা এলাহী এ বিষয়ে চকরিয়া নিউজকে বলেন, তারা বনের কাঠ তামাক চুল্লিতে যায় কি-না সজাগ রয়েছে।
এদিকে সূশীল সমাজের দাবি, নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামুতে ৪টি তামাক কোম্পানীর উস্কানীতে তামাক চাষ হয়।
আর এ তামাক পরিশোধনে ব্যবহার করা হয় কাঠ । আর এ তামাক প্রক্রিয়াজাকরণে চুল্লীতে প্রতিবারে (একলোডে) ৪০ থেকে ৪৫ মণ কাঠ পোড়াতে হয়। আর এক সিজনে এভাবে ৮ বা ৯ লোড তামাক পোড়ানো হয় প্রতিটি চুল্লিতে। তারা আরো জানায়,এভাবে দু’উপজেলার ১৬ ইউনিয়নে ( রামুতে ৫ হাজার আর নাইক্ষ্যংছড়িতে ২ হাজার) অন্তত ৬ থেকে ৭ হাজার তামাক চুল্লীতে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার বনের মূল্যবান কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। যে গুলো প্রতিনিয়ত বাতাসে ছড়াচ্ছে কালো ধোঁয়া। এতে বাতাস ভারী হচ্ছে আশংকাজনকভাবে। ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তামাক ক্ষেত এলাকার শিশূ কিশোর, ছাত্র-ছাত্রী সহ সকল শ্রেণির মানুষ। অথচ বনবিভাগ আর প্রশাসন রয়েছে ঘুমে।

পাঠকের মতামত: