ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রকৌশলীকে ‘থাপ্পড়’ মেরেছেন মেয়র নাছির?

নিউজ ডেস্ক ::
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের বিরুদ্ধে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের এক প্রকৌশলীকে থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠেছে। তবে থাপ্পড় মারার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেয়র নাছির।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগর ভবনে এই থাপ্পড় মারার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। ঘটনার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রাম সার্কেলে কর্মবিরতির কর্মসূচি পালন করছেন প্রকৌশলী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রাম সার্কেলের সহকারী প্রকৌশলী আশ্রাফুজ্জামানকে মেয়র থাপ্পড় মেরেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. রাশিদুল ইসলামকে চিঠি দিয়েছেন চট্টগ্রাম সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শামসুল আলম।

থাপ্পড় মারার অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়র নাছির দাবি করেন, সহকারী প্রকৌশলী আশ্রাফুজ্জামান তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করলে তিনি তাঁকে বকাঝকা করেন।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নগরের পোর্ট কানেকটিং (পিসি) সড়কের সম্প্রসারণের একটি জায়গা নিয়ে সিটি করপোরেশন ও গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। সিটি করপোরেশন সড়ক সোজা ও নালা নির্মাণ করার জন্য গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের জায়গা অনুমতি না নিয়ে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা। এ নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে তা নিরসনের জন্য গতকাল সন্ধ্যায় নগর ভবনে বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলীদের ভাষ্য, বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য সংস্থার চট্টগ্রাম সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শামসুল আলমের নেতৃত্বে ছয়জন নগর ভবনে যান। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তাঁরা নগর ভবনের সম্মেলনকক্ষে মেয়র নাছির উদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তখন মেয়র তাঁদের সঙ্গে কথা না বলে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলীকে রাস্তা সোজা ও নালা নির্মাণ করার নির্দেশ দেন। কেউ বাধা দিলে তাঁকে (মেয়র) অবহিত করতে বলেন। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তখন বিষয়টি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সহকারী প্রকৌশলী আশ্রাফুজ্জামানকে বলেন।

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শামসুল আলম মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, আলোচনার একপর্যায়ে মেয়র অভিযোগ করেন, গৃহায়ণের অনেক জায়গা তো অন্যের দখলে আছে। তখন আশ্রাফুজ্জামান বলেন, সিটি করপোরেশনের জায়গাও তো অবৈধ দখলে আছে। এটি বলার পরপরই মেয়র ক্ষিপ্ত হয়ে আশ্রাফুজ্জামানকে থাপ্পড় দেন। সেখানে থাকা কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ জোবায়েরও মারধর করেন। পরে তাঁরা চলে আসেন।

কাউন্সিলর জোবায়েরও তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম সার্কেলের অধীনে থাকা ১৬টি জেলায় কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে বলে জানান মো. শামসুল আলম। তিনি বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এই ঘটনার সুরাহা না হলে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সহকারী প্রকৌশলী আশ্রাফুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁকে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতি ও বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা সমিতিকে অবহিত করা হয়েছে।

থাপ্পড় মারার অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়র নাছির প্রথম আলোকে বলেন, যে জায়গাটি নিয়ে বিরোধ, সেখানকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছেন সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এখন সেখানে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী বাজার বসাতে চায়। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ তো তা পারে না। রাস্তা ও নালা যদি বাঁকাভাবে নির্মাণ করা হয়, তাহলে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকেই যাবে। এ জন্য জায়গাটির ওপর সোজাভাবে রাস্তা ও নালা করার জন্য কাজ করছে সিটি করপোরেশন। এতে বাধা দেয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ।

মেয়র নাছির আরও বলেন, ‘গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলী ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে আমাকে বলেছেন, করপোরেশনের জায়গাও দখল আছে। তখন তাঁকে বলি, একজন মেয়রের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয়, তা আপনার জানা নেই। এরপর অন্যরা তাঁকে নিয়ে যান।’

 

সুত্র- প্রথম আলো।

পাঠকের মতামত: