ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

ইউএনএইচসিআর কর্তৃক কক্সবাজারের পাঁচটি কলেজে বাস হস্তান্তর

বার্তা পরিবেশক :: জাতিসংঘ শরনার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর তাদের চলমান স্থানীয় জনগোষ্ঠিকে সহায়তামূলক কর্মসুচির অংশ হিসেবে সম্প্রতি কক্সবাজার ও উখিয়ার কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ৫টি বাস হস্তান্তর করেছে। ২০১৭ সালে আগত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি স্থানীয় জনগনের নিস্বার্থ ও মানবিক আচরনের প্রতি সম্মান জ্ঞাপনের লক্ষ্যে সংস্থাটি উক্ত উদ্যোগটি গ্রহন করেছে।
একটি হস্তান্তর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাসগুলো প্রদান করা হয়। আনুষ্ঠানিকতায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শরনার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এবং অতিরিক্ত সচিব  মোহাম্মদ আবুল কালাম,  জেলা প্রশাসক  মোহাম্মদ কামাল হোসাইন, উখিয়া ও কক্সবাজারের ৫টি কলেজের অধ্যক্ষবৃন্দ এবং ইউএনএইচসিআর এর কর্মকার্তারা।
উক্ত অনুষ্ঠানে মতবিনিময়কালে জনাব কালাম বলেন, “আমি ইউএনএইচসিআর-কে ধন্যবাদ জানাতে চাই কারন প্রায় দশ লক্ষের মত রোহিঙ্গার আগমনের ফলে কক্সবাজার, উখিয়া ও টেকনাফের স্থানীয় জনগণের মধ্যে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে এর কিছুটা হলেও প্রশমন তারা করছেন। তাদের প্রতিশ্রুতি এবং সহযোগিতার জন্য তারা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের প্রতিশ্রুতি এবং সহযোগিতা যেন এখানেই শেষ হয়ে না যায় এবং যাতে সেটা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার উন্নয়নেও চলমান থাকে”।
জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ কামাল হোসাইন বলেন, “ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং স্থানীয় মানুষদেরকে নিরন্তর সহযোগিতা করার জন্য আমরা ইউএনএইচসিআর-কে ধন্যবাদ জানাই”।
“শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এগিয়ে আসতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত” জানালেন ইউএনএইচসিআর এর সিনিয়র ফিল্ড কোর্ডিনেটর অস্কার সানচেস পিনেরো, এসময় তিনি আরো বলেন, “অনেক শিক্ষার্থীরাই প্রতিদিন অনেক দূর যাতায়াত করে, এই বাস গুলো যেমন তাদের সময় অপচয় রোধ করবে তেমনি তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতেও ভুমিকা রাখবে।
“রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির আগমনে স্থানীয় জনগনের উপর যে প্রভাব হয়েছে সে বিষয়ে ইউএনএইচসিয়ার ও তার সহযোগী সংস্থাসমূহ অবগত আছে, তাই স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে আমরা যথাসাধ্য পদক্ষেপ গ্রহন করছি”।
এ প্রকল্পটি ইউএনএইচসিআর কর্তৃক ২০১৮ সাল হতে গৃহীত কুইক ইম্প্যাক্ট প্রকল্পসমূহের (Quick Impact Projects) অন্তর্ভুক্ত, যা স্থানীয় বেসরকারী সংস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং সরকারের বিভিন্ন বিভাগের সাথেও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। উদ্যোগটির মুল লক্ষ্য হল, স্থানীয় বাংলাদেশি যারা শরনার্থীদের আগমন ও সহাবস্থানে প্রভাবিত হয়েছে তাদের মোলিক চাহিদা যেমন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও কাঠামোগত সেবা নিশ্চিতকরণ।
বিগত বছরে গৃহীত ৪০টি কুইক ইম্প্যাক্ট প্রকল্পের (Quick Impact Projects) মাধ্যমে উখিয়া ও টেকনাফ অবস্থিত ১,৩্‌০০০ স্থানীয় জনগনকে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। স্থানীয় জনগন ও প্রশাসনের সাথে আলোচনার মাধ্যমে গৃহীত কুইক ইম্প্যাক্ট প্রকল্প (Quick Impact Projects) টি এমন ভাবে সাজানো হয়েছে যেন দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়
প্রকল্পের কাজের কিছু অংশ ছিল স্কুল কলেজসহ ৭০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন।
২০১৭ সালে যখন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আসছিল তখন এই স্থানীয় বাংলাদেশিরাই প্রথমে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি জীবন রক্ষার কাজে সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু এই বিশাল জনসংখ্যার আগমন এবং অবস্থানের ফলে স্থানীয়ভাবে বিশেষ করে পরিবহন, পানি সম্পদ, পরিবেশ এবং অবকাঠামোগত যে প্রভাবগুলো পড়ছে এ ব্যাপারে মানবিক সেবাকারী সংস্থাগুলো অবগত। ইউএনএইচসিআর তার সহযোগী সংস্থগুলোর সাথে নিরন্তরভাবে স্থানীয় জনগণের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে এর মাধ্যমে স্থানীয় জনগন নিজের চাহিদা পুরনের পাশাপাশি তাদের প্রতিষ্ঠিত সেবা প্রদান কেন্দ্রের মাধ্যমে শরণার্থীদেরও সাহায্য করতে পারেন।

পাঠকের মতামত: