ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় ঋণের আসল ও সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে বসতভিটা বিক্রি

ব্যাংক চেক ও খালী স্ট্যাম্প ফেরত দিতে আদালতের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::

চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা নাথপাড়া গ্রামের একটি হিন্দু পরিবার কতিপয় চক্রের ঋণের আসল ও সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে এবার বসতভিটা বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। টাকার বদলে বসতভিটা রেজিষ্ট্রি দিয়েও পাওনা থাকা এক লাখ ২০ হাজার টাকা চাইতে গিয়ে বর্তমানে পরিবারটির একটি ব্যাংক চেক ও একশত টাকা মুল্যমানের তিনটি খালী স্ট্যাম্প আটকে রেখেছে চক্রটি। অবস্থায় পরিবারটির গৃহকর্ত্রী বেবী বসাক বাদি হয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি এমআর মামলা রুজু করেছেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে নাথপাড়া গ্রামের মৃত স্বপন কান্তি দাশের ছেলে রিগ্যান কান্তি দাশ ও কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের মাছুয়াখালী এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলমের ছেলে মহিউদ্দিনসহ দুইজনকে।

মামলার শুনানী শেষে আদালতের বিচারক ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরউদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমান মামলার বিবাদিপক্ষকে বাদিপক্ষের কাছ থেকে নেয়া ব্যাংক চেক ও খালী স্ট্যাম্প ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। বাদিপক্ষের আইনজীবি চকরিয়া উপজেলা আদালতের আইনজীবি সাইদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আর্জিতে বাদি চকরিয়া পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের চিরিঙ্গা নাথপাড়া গ্রামের তপন বসাকের স্ত্রী বেবী বসাক জানান, পারিবারিক বিশেষ প্রয়োজনে কিছু পরিমাণ জমি বন্ধক রেখে অভিযুক্ত বিবাদিপক্ষ থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার ঋণ গ্রহন করেন। টাকা গ্রহনের সময় তাদেরকে ঢাকা ব্যাংক চকরিয়া শাখার (হিসাব নং ০৬২২০০২২০৫৯) নং একটি খালী চেক ও একশত টাকা মুল্যমানের তিনটি খালী স্ট্যাম জামানত হিসেবে দেয়া হয়। টাকা গ্রহনের পরবর্তী সময়ে বন্ধকীর বিপরীতে নেয়া আসল ও সুদের টাকার পরিমাণ প্রায় ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা দাঁড়ায়। উল্লেখিত অংকের টাকা একসঙ্গে পরিশোধ করতে গিয়ে চরম বেকায়দায় পড়ে যান বেবী বসাকের পরিবার।

মামলার আর্জিতে বেবী বসাক জানান, পরবর্তীতে বিবাদিপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাম নির্ধারণ করে পাওনা ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা ঋণ সম্বনয় করে তাঁর (বাদির) শ^াশুড় সোনা চন্দ্র বসাক প্রকাশ সোনা বসাকের নামীয় চকরিয়া পৌরসভার এক শতক নাল জমি বিবাদিপক্ষের নামে রেজিষ্ট্রি দেন।

এরপর বিবাদিপক্ষ কিছুদিন পর জমি বিক্রি বাবত বাদিপক্ষ থেকে অবশিষ্ট ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দেয়া কথা চুড়ান্ত করেন। কিন্তু টাকা চাইতে গেলে উল্টো অভিযুক্তরা নানা ধরণের তালবাহানা করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে টাকা নেয়ার সময় আমানত হিসেবে দেয়া বাদিপক্ষের একটি ব্যাংক চেক ও একশত টাকা মুল্যমানের তিনটি খালী স্ট্যাম্পও ফেরত দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। বাদির আশঙ্কা, বর্তমানে অভিযুক্তরা খালী ব্যাংক চেকটিতে বড় ধরণের একটি টাকার অংশ লিখে এবং খালী স্ট্যাম্প সমুহ পুরণ করে আমাকে নতুন করে হয়রাণি করার অপচেষ্ঠা করছে।

এ অবস্থায় সবকিছু হারিয়ে নিরুপায় হয়ে বেবী বসাক ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারী অভিযুক্ত দুইজনকে আসামি করে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি এমআর মামলা (নং ১২/১৯) রুজু করেছেন।

মামলার আর্জি শুনানী শেষে আদালতের বিচারক ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরউদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমান গত ৪ মার্চ মামলার বিবাদি রিগ্যান কান্তি দাশ ও মহিউদ্দিনসহ দুইজনকে বাদিপক্ষের কাছ থেকে নেয়া ব্যাংক চেক ও খালী স্ট্যাম্প ফেরত দিতে র্চাজ ওয়ারেন্ট জারী পুর্বক নির্দেশ দিয়েছেন। #

পাঠকের মতামত: