ঢাকা,রোববার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড়ের কবলে আ.লীগের নির্বাচনী প্রতিক নৌকা! চকরিয়া থেকেই ভরাডুবির যাত্র শুরু..

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :;   কক্সবাজার জেলার ৮উপজেলার মধ্যে গত ১৮মার্চ দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে বিদ্রোহী প্রার্থী ফজলুল করিম সাঈদীর কাছ থেকে ২৭হাজার ৭১৬ভোট কম পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। নির্বাচন বর্জনকারী দলের নেতাকর্মীরা জানান, কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছে আ.লীগের নির্বাচনী প্রতিক। চকরিয়া থেকেই নৌকার ভরাডুবির যাত্র শুরু। বাকী ৭ উপজেলার মধ্যে কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২১মার্চ উচ্চতর আদালত স্থগিত ঘোষানা করেছে। বাকি ৫ উপজেলা পরিষদ যথাক্রমে মহেশখালী, রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পেকুয়া উপজেলায় তৃতীয় ধাপে নির্বাচন অনুষ্টিত হবে আগামী ২৪মার্চ। কক্সবাজার সদর উপজেলায় নির্বাচন হবে আগামী ৩১মার্চ। সদ্য শেষ হওয়া চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় এমপিরা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট পেপারে শীল মারার সুযোগ না পাওয়ায় ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা চরম বেকায়দায় পড়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের মুখে দেখা দিয়েছে হাসির ঝিলিক। প্রশাসনের মনোভাবও কঠোর হওয়ায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে ফিরে এসেছে প্রাণের স্বস্থি।
এদিকে সদ্য সম্পন্ন হওয়া চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৯৮টি ভোট কেন্দ্রে ২লাখ ৮৪ হাজার ৫৫৫ জন ভোটারের মধ্যে মাত্র ৮৮ কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন, ৮৮ হাজার ৮৬৪ জন। ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিলেন, ১লাখ ৯৪ হাজার ৪৪১জন ভোটার। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত এত কম ভোটার ভোটে অংশ গ্রহণ করার দ্বিতীয় কোন রেকর্ড আর নেই।
উপজেলা পরিষদ সৃষ্টি হয়ে ছিল, এরশাদ সরকারের আমলে। প্রথম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন, সাবেক জেলা চেয়ারম্যান ও এমপি সালাহ উদ্দিন মাহমুদ। দ্বিতীয় নির্বাচনে নির্বাচিত হন মোহাম্মদ হোসেন বিএসসি। তৃতীয় নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন রেজাউল করিম। চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হন জাফর আলম। উলে¬খিত ৪টি নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি ছিল কল্পনাতীত। ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে না পারায় ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক জোট নির্বাচন বর্জন করায় পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ভোটাররা উপস্থিত হওয়ার সাহস পায়নি। যার কারণে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রশাসনের আন্তরিক ও সাহসী পূর্ণ ভূমিকার কারণে সুষ্ট নির্বাচন হলেও ভোটার অনুপস্থিতি কম হওয়ায় এ নির্বাচন প্রশংসিত হয়েছে।
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদী আনারস মার্কা নিয়ে ভোট পেয়েছেন, ৫৭ হাজার ৭০৫ টি। আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন, ২৯ হাজার ৯৮৯টি। শ্রমিক নেতা জহিরুল ইসলাম দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন,১ হাজার ৮১টি। ড্যামি প্রার্থী মোকতার আহমদ পেয়েছেন, মাত্র ৮৯টি। তাদের সর্বমোট প্রাপ্ত ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ৮৮ হাজার ৮৬৪টি।
পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে মকছুদুল হক ছুট্টো বই প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন, ২৭ হাজার ৯৫টি, আবু মুছা উড়োজাহাজ প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন, ১৯ হাজার ৩৩৭টি, বেলাল উদ্দিন শান্ত তালা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১৫ হাজার ৯০৫ ভোট, ছৈয়দ আলম চশমা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪৫৪টি, সিরাজুল ইসলাম আজাদ টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১১ হাজার ১০৭টি। তাদের সর্বমোট প্রাপ্ত ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ৮৭ হাজার ৮৯৪টি।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন হক জেসি কলসী প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৩৪ হাজার ২৯৪টি। সাফিয়া বেগম চম্পা ফুটবল প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২৯ হাজার ৯০৩টি আর জাহান আরা পারভীন হাঁস প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২১ হাজার ৮০৭টি। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পালাকাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্থগিত ভোট কেন্দ্রের ভোট প্রাপ্তির উপর নির্ভর করে কে বিজয়ী হবেন তা পরে জানা যাবে। তাদের ৩ জনের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা হচ্ছে ৮৬ হাজার ৪টি। এখানে রহস্য জনক কারণ লুকায়িত রয়েছে। চেয়ারম্যান পদে ৮৮ হাজার ৮৬৪টি ভোট প্রয়োগ হলেও ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা হচ্ছে ৮৭ হাজার ৮৯৪টি। আর মহিলা চেয়ারম্যান পদে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৮৬ হাজার ৪টি। চেয়ারম্যান পদে ২ হাজার ৮শ ৬০টি ভোট অতিরিক্ত কাষ্ট হলেও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ওই পরিমান ভোট কাষ্ট হয়নি। তাহলে কি পুরুষ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ পদের প্রার্থীকে এ পরিমান ভোট দেয়া হয়েছে তা তাদের ব্যালেট দেয়া হয়নি ?।

পাঠকের মতামত: