ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৮

নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের ভবনে লাগা ভয়াবহ আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাসহ অনেকে। এ ঘটনায় দগ্ধ ও আহত হয়েছেন অর্ধ শতাধিক। প্রায় ৫ ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত ৩টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ আজ দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত আমাদের মর্গে ৬৭টা লাশ পেয়েছি। আরো ১১টা লাশ আমাদের হাসপাতালে মর্গে আছে। এই নিয়ে মোট লাশের সংখ্যা ৭৮। এদের মধ্যে কিছু লাশের চেহারা দেখে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। কিছু লাশ শনাক্ত করতে ফিঙ্গারপ্রিন্টের প্রয়োজন হবে। আর কিছু ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে শনাক্ত করব।’

আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর থেকেই চলছে লাশের সন্ধান। একের পর এক ব্যাগ ভর্তি করে লাশ বের করা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্নেল জুলফিকার বলেছেন, এক একটি ব্যাগে একাধিক লাশ থাকতে পারে। তিন বলছেন ভেতরে আরো অনেক লাশ থাকতে পারে।

এর আগে রাজধানীর চকবাজার এলাকার নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের ওই ভবনে বুধবার দিবাগত রাত ১০টা ১০ মিনিটে আগুন লাগে।

বহু সময় বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বলতে দেখা যায়। ভবনটির ছাদেও আগুন জ্বলতে দেখা যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্ট্রেচারে করে ব্যাগ ভর্তি করে একের পর এক লাশ বের করে নিয়ে আসেন। অর্ধশতাধিক ঢাকা মেডিক্যাল বার্ন ইউনিটে ভর্তি। ৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

প্রাথমিক ধারণা গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত। নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের শতাধিক কর্মীসহ অনেকেই এখানে কাজ করছেন। নগরবাসী, দেশবাসী সবার দোয়া চাচ্ছি, যাতে করে সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করতে পারি।

এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের লক্ষ্য হলো আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা। যারা আহত হয়েছেন তাদের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর আমরা ঘটনার তদন্ত করব। কেন,  কীভাবে আগুন লেগেছে সে সম্পর্কে জানাতে পারব।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আমি বাসায় ছিলাম, আগুন আগুন বলে চিৎকার শুনে আমার ছোট মেয়েকে কোলে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যাই। এখানের অলিতে গলিতে বিভিন্ন ধরনের মালামাল ছিল। প্রায় সবই পুড়ে গেছে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৩ জুন নিমতলীর ৪৩/১ নবাবকাটরায় পাঁচতলা বাড়িতে স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ঘটনায় হারাতে হয় ১২৩ জনকে। আহত হয় কয়েক শ মানুষ। আপনজন হারিয়ে নিঃস্ব হতে হয় অনেক পরিবারকে। মূলত কেমিক্যাল গোডাউনের আগুনেই ওই দিনের অগ্নিকাণ্ডটি ঘটে। গোডাউনের অতি দাহ্য রাসায়নিক পদার্থের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।

পাঠকের মতামত: