ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

লামায় আগুনে ৩১ দোকান পুড়ে ২ কোটি টাকার ক্ষতি

লামা প্রতিনিদি ::  বান্দরবানের লামা উপজেলায় আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ৩১টি দোকান। মঙ্গলবার ভোর রাতে উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়ন সদর বাজারে এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে প্রাথমিকভাবে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্র হয় বলে স্থানীয়দের ধারণা। খবর পেয়ে আলীকদম সেনাবাহিনীর জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল সাইফ শামীম পিএসসি, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা, পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র তাজুল ইসলাম, তাঁতী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিনসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এদিকে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তার আশ্বাস দেন।

সূত্র জানায়, উপজেলা সদর থেকে ৯ কিলোমিটার দূর রুপসীপাড়া ইউনিয়ন সদর বাজারের ব্যবসায়ী আবেদ আলীর ইলেকট্রিক দোকান থেকে মঙ্গলবার ভোর ৩টার দিকে হঠাৎ আগুন জ্বলে ওঠে। মুহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদস্যরা এক ঘন্টা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে আবেদ আলীর পার্টস দোকান, নজির আহমদের ৩টি মুদি দোকান, নুরুল আলমের মুদি দোকান, মোনতাজের সার কীটনাশক, ঔষধ ও মুদি দোকান, মো. শহিদের মুদি, কম্পিউটার ও চা দোকান, আকাশের ঔষধের দোকান, আরিফুল ইসলামের ঔষধের দোকান, আবদুল লতিফের কাঁচামালের দোকান, শাহ কামালের হোটেল, আবেদ আলীর ওয়ার্কশপ, কম্পিউটার দোকান, আবু জাফরের ২টি মুদি ও মুদি দোকান, আবেদ আলীর হার্ডওয়ার, ইউছুপের কম্পিউটার ও বসতঘর, মনতাজের কীটনাশকের দোকান সম্পূর্ণ এবং আবদুল হকের দুইটি মুদি দোকান ও বেলালের মুদির দোকান আংশিক পুড়ে যায়।

ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী মতিউর রহমান, আবেদ আলীসহ অনেকে বলেন, আমরা সর্বশান্ত হয়ে গেছি। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ার কারণে কোন মালামাল রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ব্যাংক ও এনজিও ঋণ নিয়ে ব্যবসা করি আমরা। এখন কিভাবে নিজের পরিবার চালাব ও ঋণের টাকা শোধ করব জানিনা।

রুপসীপাড়া বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুস সাত্তার গাজী বলেন, আগুনে আমার ফার্মেসিসহ মোট ৩১টি দোকান আগুনে পুড়ে গেছে। গভীর রাতে আগুন লাগার কারণে কোন মালামাল বের করা সম্ভব হয়নি। এতে ব্যবসায়ীরা সর্বশান্ত হয়ে গেছে। আমরা সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এর সহায়তা কামনা করছি। এদিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শাহ্ আলমসহ ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনে ভোর ৩টা ২০মিনিটে খবর দেয়া হয়। কিন্তু তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেন ৫টার সময়। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গেলে এতগুলো দোকান পুড়তো না। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদস্যদের অবহেলার কারণে ব্যবসায়ীদের এতবড় ক্ষতি হয়ে গেল।

লামা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স’র স্টেশন কর্মকর্তা নয়ন জীব চাকমা জানান, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। দোকানগুলো টিন ও কাঠের হওয়ায় মুহুর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে ৩১টি দোকান পুড়ে যায়।

আগুনে পুড়ে ৩১টি দোকান পুড়ে দুই কোটি টাকার ক্ষতি হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদেরকে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। পাশাপাশি মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ও সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: