ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

বাঁশখালীতে ইট ভাটায় পুড়ছে বনের কাঠ, হুমকির মুখে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

বাঁশখালী প্রতিনিধি ::  বাঁশখালীতে ইটভাটা গুলোতে কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে পাহাড়ি গাছ। এসব ইটভাটায় কয়লা এনে তা সামনে স্তুপ করে রাখলেও মাসের পর মাস কাঠ পুড়িয়ে চলছে ইট প্রস্তুতের কাজ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপজেলায় যেসব ইটভাটা রয়েছে এগুলোর অধিকাংশরই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নেই। অন্যদিকে এসব ইটভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা অভিযানে এলেও অদৃশ্য কারণে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।

তবে দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, ইটভাটার মালিকদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে অফিসে ডাকানো হয়েছে। তারা যদি কাগজপত্র দেখাতে না পারেন তাহলে তাদের জরিমানা করা হবে।

পরিবেশবিদরা বলছেন, ইটভাটাগুলোতে কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানোর ফলে একদিকে পাহাড় যেমন বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে তেমনি অপরদিকে এলাকার মানুষের মাঝে নানা ধরনের রোগব্যাধিও ছড়িয়ে পড়ছে।

বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠা ইটভাটাগুলোর মধ্যে রয়েছে, পুকুরিয়ায় ১টি, সাধনপুর লটমনি পাহাড়ে ৩টি, বাঁশখালী সাতকানিয়া সীমান্তের চূড়ামণি এলাকায় ২টি, বাহারছড়া ইউনিয়নের ইলশা গ্রামে ৩টি, চাম্বলে ১টি ও শেখেরখীলে ১টি।

পরিবেশবিদরা বলছেন, ইটভাটাগুলো অত্যন্ত কাছাকাছি ও লোকালয়ের পার্শ্ববর্তী হওয়ায় কালো ধোঁয়ায় পরিবেশের যেমন মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে তেমনি ধানি জমিতে গড়ে তোলায় ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। তবে এসব ইটভাটার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় জনগণ এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পান না বলে জানা যায়।
সূত্রমতে, ইটভাটায় একবার ইট পোড়াতে প্রায় কয়েক হাজার মণ কাঠ পোড়াতে হয়। এসব কাঠ জোগাড় হচ্ছে আশপাশের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকেই। যার ফলে উজাড় হয়ে যাচ্ছে পাহাড়ি অঞ্চল, বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে পাহাড়। পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন স্বত্ত্বেও অবৈধভাবে ইটভাটা গুলোতে পাহাড়ি কাঠ পুড়িয়ে যাচ্ছে যা প্রশাসনের নজরদারির বাইরে।

চাম্বল বনবিট কর্মকর্তা শেখ আনিসুজ্জামান বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ইটভাটাগুলোতে পাহাড় কাটা ও কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ ভাবে নিষেধ রয়েছে। তবে নিয়ম মেনে ইটভাটা তৈরি করলে এতে কোনো আপত্তি নেই। যে সমস্ত ইটভাটা পরিবেশ বান্ধব না এবং যারা পাহাড়ি মাটি ও কাঠ ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে কেউ যাতে পাহাড় থেকে মাটি ও কাঠ কাটতে না পারে সেজন্য কঠোর ভাবে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, যেসব ইটভাটা অবৈধ ভাবে পাহাড়ি কাঠ পুড়িয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ইটভাটাগুলো অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: