ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজার-৩ আসনের সব ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ -কাজল

বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত বিএনপির প্রার্থী সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল অভিযোগ করেছেন, আগে ১৯টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এখন কোন কেন্দ্রই ঝুঁকিমুক্ত নেই। আওয়ামী লীগের নৌকা সমর্থকরা পুরো এলাকাকে আতঙ্কের ভয়ানক জনপদে পরিণত করেছে। মহিলা ভোটারদের আতঙ্কিত করতে চাচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নিশ্চিত ভরাডুবি দেখে এসব করা হচ্ছে।
শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন ডেকে এসব অভিযোগ করেন লুৎফুর রহমান কাজল।
তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসীল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত ২৫ মামলায় আমাদের তিন হাজারের অধিক আসামী করা হয়েছে। দেড়শতাধিক লোক গ্রেফতার করা হয়েছে। আমাদের গণজোয়ার ও জনপ্রিয়তায় আওয়ামী লীগ পাগল হয়ে গেছে। মিথ্যা অভিযোগে মামলাগুলো করছে। জনগণ ভোট দিতে পারলে ব্যালট বিপ্লব হবে।
সব বাধা উপেক্ষা করে জনগণকে ৩০ ডিসেম্বর ভোট বিপ্লব ঘটানোর আহবান জানান বিএনপির প্রার্থী লুৎফুর রহমান কাজল।

সংবাদ সম্মেলনে লুৎফুর রহমান কাজলের পেশকৃত পুরো বক্তব্য:
জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে আপনাদের সাথে আজ মিলিত হয়েছি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আন্দোলনের অংশ হিসাবে বিপন্ন গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কক্সবাজার-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এর মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অবতীর্ন হয়েছি। নির্বাচন শুরু হওয়ার আগ থেকে এই পর্যন্ত বিভিন্ন ভাবে আপনাদের প্রেরণা ও সহযোগীতায় কৃতার্থ হয়েছি। এই জন্য আপনাদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আপনাদের লিখনী, বিভিন্ন ভাবে আপনাদের প্রচারে আমি প্রেরণা ও প্রত্যয়ে সমৃদ্ধ হয়েছি। আমার প্রতি আপনাদের নিরন্তর ভালবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে।

জাতির বিবেক সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আমরা আশাবাদী ছিলাম, নির্বাচনের তফশীল ঘোষণার পর থেকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরীতে নির্বাচন কমিশন সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন। কিন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়, নির্বাচন কমিশনের সেই ধরণের কোন ভূমিকা আজও পরিলক্ষিত হয়নি। ফলে নির্বাচনের মাঠ ছিল স¤পূর্ণ অসমতল। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ বিভাগের ভুমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। গত ১০ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারনা শুরু হওয়ার পর থেকে ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারনায় মহাজোটের প্রার্থী নৌকার সমর্থকদের উপর সশস্ত্র হামলা, বাড়ীঘর ভাংচুর, দোকানপাট ভাংচুর, নেতা-কর্মীদের মারধর, নির্বাচনী অফিস ভাংচুর, পোষ্টার ছিড়া, মাইকিং এর গাড়ীকে বাঁধা দেয়া, মাইক ও মাইকিং এর গাড়ী ভাংচুর ইত্যাদি ছিল প্রতিদিনের নিত্য নৈমিত্যিক ঘটনা। শুধু তাই নয়, কক্সবাজার সদর-রামু তে প্রায় আড়াই হাজার নেতা-কর্মী, সমর্থককে মিথ্যা অভিযোগে আসামী করে ২৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ইতিমধ্যে কক্সবাজার জেলা বি.এন.পির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মমতাজুল ইসলাম, ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা বি.এন.পির সাধারণ সম্পাদক শওকত আলম, কক্সবাজার পৌর বি.এন.পির সহ-সভাপতি আবুল কাশেম, রামু উপজেলা বি.এন.পির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান, ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা যুবদলের সভাপতি মোহাম্মদ আজমগীর, জেলা যুবদল নেতা জাহেদুল ইসলাম জাহেদ, সৌদিআরব মক্কা প্রবাসী বি.এন.পির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুশুক্কুর, ইসলামপুর বি.এন.পি নেতা জসিম উদ্দিন, পোকখালী ইউনিয়ন বি.এন.পির সাধারণ স¤পাদ মোহাম্মদ সেলিম, ঈদগাঁও ভাদিতলার জিয়াবুল হক, ইসলামাবাদ সাতজুলাকাটার আলমগীর, জালালাবাদ লরাবাগের সাদেকুর রহমান, পি.এম.খালী মধ্যম নয়াপাড়ার দেলোয়ার হোসেন, পি.এম.খালী ছনখোলা ১নং ওয়ার্ডের ডাঃ আব্দু শুক্কুর, ঈদগাঁও মধ্যম ভোমরিয়াঘোনার এহছান, দক্ষিণ মিঠাছড়ী ইউনিয়নের কাইম্যারঘোনর শাহজাহান, দক্ষিণ মিঠাছড়ী ইউনিয়নের পানেরছড়ার মোস্তাক আহম্মদ, দক্ষিণ মিঠাছড়ীর সওদাগর পাড়ার মনজুর আলম, কাউয়ারখোপের উখিয়ারঘোনর শাহীন, কাউয়ারখোপ বইলতলীর ছব্বির হোসেন, ফতেখারকুল মেরংলোয়ার ছৈয়দ আলম, ফতেখারকুল সিপাহীরপাড়ার এনামুল হক, দক্ষিণ মিঠাছড়ী চরপাড়ার রবিউল হাসান, দক্ষিণ মিঠাছড়ী পানেরছড়ার শেখ আব্দুল্লাহ ভুট্টো, দক্ষিণ মিঠাছড়ী পানেরছড়ার জাহেদ উল্লাহ জিহাদ, ফতেখারকুল মেরংলোয়ার জহির আলম, কাওয়ারখোপের লামার পাড়ার এনামুল হক, উত্তর ফতেখারকুলের সাংবাদিক আবুল কাশেম, ঝিলংজা হাজীপাড়ার জাহেদুর রহমান, কচ্ছপিয়া তিতারপাড়ার ফরিদুল আলম, কচ্ছপিয়া দুছরির শাহ আলম, কচ্ছপিয়া ফাক্রিকাটার সাইফুল ইসলাম, ক”ছপিয়া ফাক্রিকাটার মোহাম্মদ শফি, দক্ষিণ ডিক ফতেখারকুলের এনামুল হক, কলাতলী উত্তর আদর্শ গ্রামের নাছির উদ্দিন সহ দেড়শতাধিক ব্যাক্তি গ্রেপ্তার হয়ে জেলে রয়েছেন। ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে কেন্দ্রের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ এবং সম্ভাব্য পোলিং এজেন্ট, সক্রিয় অন্যান্য দায়িত্বশীলদের সনাক্ত করে করে আসামী করা হয়েছে। যাতে নির্বাচনে প্রচারণা চালাতে আমি সংকটে পড়ে যায়। তাদেরকে পুলিশ গ্রেপ্তারের জন্য হন্যহয়ে খুঁজছে। ফলে ধানের শীষের এসব দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ গ্রেপ্তার এড়াতে এলাকা ছেড়ে গাঢাকা দিয়েছে। পুলিশের ভয়ে ভোটকেন্দ্র এলাকায় এখন ২৩দলীয় জোট তথা ধানের শীষ প্রতীকের কোন সক্রিয় নেতা-কর্মী নেই বললেই চলে। মূলত কক্সবাজার রামুতে ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তা রুখে দিতে নৌকা প্রতীকের মহাজোটের প্রার্থী অনুন্যাপায় হয়ে এসব মিথ্যা মামলা ও হামলার আশ্রয় নিয়েছে। ১০ডিসেম্বর হতে নির্বাচনী প্রচারনা আনুষ্টানিক ভাবে শুরু হওয়ার পর থেকেই মহাজোটের প্রার্থী নৌকার সমর্থকেরা এমন কোন ইউনিয়ন, গ্রাম, ওয়ার্ড নেই যেখানে তারা হামলা করেনি। এর মধ্যে বিগত ১০/১২/২০১৮ইং তারিখ রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মাবুদের নেতৃত্বে ধেচুয়াপালং রাবেতা হাসপাতালের সামনে সশস্ত্র হামলায় ধানের শীষের ১২/১৩জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। একই ভাবে গত ১২/১২/২০১৮ইংরেজী তারিখ রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনুছ ভুট্টোর নেতৃত্বে ধানের শীষের নেতা-কর্মী সমর্থকদের উপর সশস্ত্র হামলায় রামু উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ স¤পাদক আনচারুল হক সহ ৭/৮জন কর্মী গুরুতর আহত হন। একই দিন রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ বাজার এলাকায় সয়ং নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমলের উপস্থিতিতে ৩০/৩৫জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী ধানের শীষের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা করে। এ হামলায় রামু উপজেলা বি.এন.পির সাংগঠনিক স¤পাদক কাজী আব্দুল্লাহ আল-মামুন সহ ১০/১২জন ধানের শীষের নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হন। একই দিন রাত ৮টার দিকে ফতেখারকুল ইউনিয়নে নৌকার সশস্ত্র সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা হামলা করে রামু উপজেলা বি.এন.পির সাধারণ স¤পাদক মেরাজ আহমদ মাহিন সহ ১৭/১৮জনকে আহত করে। হামলাকারীরা রামু চৌমুহনীতে স্থাপিত ধানের শীষের নির্বাচনী কার্যালয়টি ভাংচুর করে। ১৩/১২/২০১৮ইংরেজী গভীর রাত্রে রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ধানের শীষের নির্বাচনী অফিসটি নৌকা প্রতীকের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ভাংচুর করে ও অফিসের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এসময় নৌকা প্রতীকের সন্ত্রাসীরা এলাকায় ব্যাপক ত্রাস সৃষ্টি করে। গত ২১/১২/২০১৮ইংরেজী তারিখ কক্সবাজার শহরের ঝাউতলা গাড়ীর মাঠে স্থাপিত ধানের শীষের নির্বাচনী অফিসে এসে নৌকা প্রতীকের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা জনৈক শীর্ষ আওয়ামীলীগ নেতার নেতৃত্বে মিছিল সহকারে বিকেল ৪.৩০ঘটিকার দিকে অফিস ভাংচুর করে। পরে ভাংচুরকৃত অফিসের মালামাল ট্রাকে করে প্রকাশ্য দিবালোকে লুট করে নিয়ে যায়। এখানে বিস্ময়কর বিষয় হল, ধানের শীষের অফিস ভাংচুর করে নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা নিয়ে গেলেও এ বিষয়ে অভিযুক্ত করে ধানের শীষের ২১৯জন নেতা-কর্মীকে আসামী করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। একই ভাবে প্রত্যেক দিন কক্সবাজার এবং রামুতে নৌকা প্রতীকের সন্ত্রাসীরা ধানের শীষের নিরিহ নেতা-কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা চালিয়ে ধানের শীষের প্রচারণাকে প্রতিনিয়ত বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা করেছে। গত ২৬/১২/২০১৮ইংরেজী ঈদগাঁও হাইস্কুল মাঠে অনুষ্টিত আমার পথ সভায় যাতে কোন লোক সমাগম না ঘঠে সে জন্য ঈদগাঁও হাইস্কুল মাঠের আশে পার্শে^র সড়ক গুলোতে নৌকা প্রতীকের সন্ত্রাসীরা ধানের শীষের নিরিহ কর্মী-সমর্থকদের বাঁধা দিয়েছে। গত২৭/১২/২০১৮ ইংরেজী তারিখ কক্সবাজার পৌরসভায় জেলা বি.এন.পির অফিসের সামনে অনুষ্ঠিত শেষ পথ সভায় না আসার জন্য ধানের শীষের নেতা-কর্মীদেরকে পুলিশ ও নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা পথে পথে বাঁধা দিয়েছে। যারা সন্ত্রাসীদের বাঁধা না মেনে পথসভায় আসার চেষ্টা করেছে তাদেরকে গুলি ও বেদম মারধর করে গুরুতর আহত করেছে। এভাবে কক্সবাজার-৩ সংসদীয় আসনের পুরো এলাকাটিকে নৌকা প্রতীকের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এক আতংকময় ভয়ংকর জনপদে পরিনত করেছে। এতে ভোটারদের মনে ভীতি সঞ্চার হয়েছে। বিশেষ করে মহিলা ভোটারেরা চরম আতংকিত হয়ে পড়েছেন। নৌকা প্রতীকের সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য হল ৩০ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন কোন ভোটার যাতে ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে না আসে। ভোটকেন্দ্র ভোটার শুন্য থাকলে সেই সুযোগে নৌকা প্রতিকের সন্ত্রাসীরা অনেকটা বিনা বাঁধায় ভোটডাকাতি করে নিয়ে নিতে পারবে। আমার ধারণা, এটা ভোট ডাকাতির জন্য তাদের পূর্ব পরিকল্পনার অংশ। কারণ নৌকা প্রতীকের মহাজোটের প্রার্থী ও তার নেতা-কর্মীরা ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছে সুষ্ট, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে কক্সবাজার-৩ আসনে তাদের নিশ্চিত ভরাডুবি হবে। মহাজোট প্রার্থীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে এআসনের ১৬৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৬৯টি ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে সংর্শ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।

গণতন্ত্র সুরক্ষার অতন্দ্র প্রহরী গনমাধ্যমের বন্ধুগণ,
একজন ভোটারের সুষ্ট ভাবে ভোট প্রয়োগ রাষ্ট্রে তার মালিকানা নিশ্চিতের প্রমান বহন করে। আর যদি এই ভোট যেনতেন ভাবে ডাকাতী করে নেয়া হয়, তাতে প্রতিটি মানুষের রাষ্ট্রের মালিকানা খর্ব হয়। তাই সচেতন প্রতিটি নাগরিকের উচিত নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভোট প্রয়োগের ব্যবস্থাকে ভীতিমুক্ত করে নির্বাচনের সুষ্ট ও অবাধ পরিবেশ সৃষ্টিতে সকলকে সহায়তা করা। সচেতন দায়িত্বশীল পেশার মানুষ হিসাবে আপনারাও ইতিমধ্যে নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। নিশ্চয় সেই পর্যবেক্ষণে স্বাধীন দেশে গণতন্ত্রের এই নাজুক অবস্থা দেখে আপনাদের বিবেক ও নাড়া দিয়েছে। এজন্য আমি অতীতের ন্যায় আপনাদের কাছ থেকে সক্রিয় সহযোগীতা প্রত্যাশা করছি। বিপন্ন গণতন্ত্র পূনরুদ্ধারের অভিযাত্রায় আপনাদেরকে আমি সারথী হিসাবে সব সময় পেয়েছি। মানুষ মনে করেছিল, নির্বাচন হয়ত উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্টিত হবে। কিন্ত তা নাহয়ে এখন এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে সম্মানিত ভোটারদের অনুরোধ করব, আপনারা আপনাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার জন্য ৩০ডিসেম্বর ভোট কেন্দ্রে আসবেন এবং যে কোন প্রতিকুল পরিবেশ উপেক্ষা করে ভোট কেন্দ্রে ভোট প্রয়োগ করেই বাড়ী ফিরবেন। ২৩ দলীয় ঐক্যজোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সর্বস্থরের নেতা-কর্মীসহ ধানের শীষ প্রতীকের সক্রিয় সমর্থকদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, যেকোন পরিস্থিতিতে আপনারা সু-সংগঠিত থেকে ২৯ডিসেম্বর বিকাল থেকেই পালাক্রমে নিজ নিজ ভোট কেন্দ্রের সমন্বিত দায়িত্ব পালন করবেন এবং কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষরিত ভোটের ফলাফল হাতে না আসা পর্যন্ত সবাই নিজ নিজ ভোট কেন্দ্রে অবস্থান করবেন। মাঠ প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার, সেনা বাহিনী, ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ও জুডিসিয়্যাল বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট সহ নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সবাই জাতির গর্ব ও দেশের স¤পদ। নির্বাচনে আপনাদের নিরপেক্ষ ও ইতিবাচক ভুমিকা বিপন্ন গণতন্ত্র পূনরুদ্ধার ও দেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করতে সহায়ক হবে। তাই আপনারা সকলে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীল ব্যাক্তি হিসাবে নির্বাচনে আপনাদের উপর অর্পিত পবিত্র দায়িত্ব সুষ্ট, সুন্দর ও নিরপক্ষ ভাবে পালন করবেন বলে আমি দৃঢ় আশাবাদী। আপনাদের দায়িত্ব পালনে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কোন ধরণের ত্রুটি হলে জাতি মহা সংকটে নিপতিত হবে। দেশে সৃষ্টি হবে, আস্থাহীন এক অস্থিতিশীল পরিবেশ। তখন আপনারা আপনাদের বিবেকের কাছেই হয়ত দোষী সাব্যস্থ হবেন।

রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসাবে খ্যাত গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ,
আপনাদের প্রতি আমার সর্নিবন্ধ অনুরোধ আপনাদের লিখনীতে, আপনাদের কথায়, আপনাদের সার্বিক প্রচারে সম্মানিত ভোটাদেরকে নিজ নিজ ভোট কেন্দ্রে এসে মূল্যবান ভোট প্রয়োগ করার জন্য উৎসাহিত ও প্রেরণা যোগাবেন। আপনাদের চোখ, কান খোলা রেখে নির্বাচনের প্রকৃত অবস্থা জাতির সামনে যথার্থভাবে তুলে ধরবেন বলে আমি প্রত্যাশা করি। জাতির এই ক্রান্তি লগ্নে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারে আপনাদের বলিষ্ট ভুমিকা থাকা দরকার। জাতি সেটাই আপনাদের কাছ থেকে সবসময় প্রত্যাশা করে।
নির্বাচনের প্রকৃত কোন তথ্য, দৃশ্য, অবস্থা, কোন কারণে আপনাদের নজর এড়িয়ে গেলে সেটা হবে পুরো জাতির জন্য অভিশাপ। যদি অনিচ্ছাকৃত ভাবে নির্বাচনের সঠিক ও প্রকৃত অবস্থা গণমাধ্যমে উঠে না আসে এবং একপক্ষীয় কোন তথ্য প্রচার হতে থাকে সেটার মাশুল গণমাধ্যমকেও হয়ত এক সময় দিতে হতে পারে।
২৩দলীয় ঐক্যজোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন একটি জোটের সাথে ক্ষমতাহীন গণমানুষের আর একটি জোটের সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে জেনেও আন্দোলনের অংশ হিসাবে এই নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আগামী ৩০ডিসেম্বর সে আন্দোলনের চুড়ান্ত একটি ক্ষণ। এখানে বিপন্ন গণতন্ত্র পূনরুদ্ধারের লক্ষ্যে নির্বাচনে অংশ নেয়ার মাধ্যমে যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে সেটা সুষ্ট, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা তার চুড়ান্ত বিজয় নিয়ে আসব ইনশাআল্লাহ।
না হয়, বিপন্ন গণতন্ত্র পূনরুদ্ধার ও ভূলন্টিত মানবাধিকার প্রতিষ্টার অভিযাত্রা আবারও হোঁচট খাবে। জাতি চেয়ে আছে, কখন তারা স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে মুক্ত পরিবেশে স্বাধীনভাবে ভোট প্রয়োগসহ সকল মৌলিক ও ন্যায্য অধিকার ভোগ করার সুযোগ পাবেন। এই নির্বাচন সেই সুযোগের দ্বারকে উন্মোক্ত করে দেবে বলে আমরা আশা করছি।

গণমাধ্যমের বন্ধুগণ,
কক্সবাজার সদর-রামু বাসীর আমি দীর্ঘদিন যাবত একজন নগন্য খাদেম হিসাবে কাজ করে আসছি। আমি অতি সাধারণ একজন মানুষ। আপনাদের একজন পরিক্ষিত বন্ধু। বিপন্ন গণতন্ত্র পূনরুদ্ধার, ভুলন্টিত মানবাধিকার সুরক্ষার বিপ্লবী কাফেলায় আমিও একজন সক্রিয় অংশিদার। ৩০ডিসেম্বর রোববারের ভোট বিপ্লবে আমি বি.এন.পি, ২৩দলীয় ঐক্যজোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এর মনোনীত কক্সবাজার-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হয়েছি। আপনাদের মাধ্যমে কক্সবাজার-৩ আসনের সম্মানিত ভোটারদের কাছে ধানের শীষ প্রতীকে তাঁদের মূল্যবান ভোটটি প্রদান করে এই ভোট বিপ্লবকে তরান্বিত করার জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছি। ধানের শীষের পক্ষে সম্মানিত কক্সবাজার সদর ও রামু বাসীর মূল্যবান ভোট এ এলাকাবাসীর সকল ন্যায্য ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সম্ভাবনাকে আরও উজ্জল করবে ইনশাআল্লাহ।
বন্ধুগণ, বরাবরের মতই আপনাদের কাছ থেকে এই কঠিন সময়ে জাতিকে মহাসংকট থেকে উদ্ধারের জন্য আপনাদের বলিষ্ট ও সাহসী ভূমিকা প্রত্যাশা করছি। আসুন, আমরা সকলে ৩০ডিসেম্বর রোববার নিজ নিজ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে স্বাধীন ভাবে ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে এ ভোট বিপ্লবে অংশনিয়ে ইতিহাস রচনা করি। দীর্ঘক্ষণ আমার বক্তব্য শুনে আমি ও আমার জোটকে কৃতার্থ করেছেন। সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, সবার জন্য শুভ কামনা সবসময়।

সংবাদ সম্মেলনে নেজামে ইসলামী পার্টি ও ইসলামী ঐক্যজোটের জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইয়াছিন হাবীব, জেলা বিএনপির নেতা এডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সুবেদার মেজর (অব.) আবদুল মাবুদ, সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন জিকু চেয়ারম্যান, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী পৌর কাউন্সিলর নাসিমা আকতার বকুল, সদ্য কারামুক্ত বিএনপি নেতা আবুল কাশেম, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর প্যানেল মেয়র জিসান উদ্দিন জিসান, জেলা ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিমুর রহমান ফাহিমসহ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, কক্সবাজার সদর উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন এবং রামু উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়েই কক্সবাজার-৩ আসনটি গঠিত।
এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৪ হাজার ৩৬ জন। ভোটকেন্দ্র সংখ্যা ১৬৮টি।
সদর উপজেলায় ১০৮টি ভোট কেন্দ্রের বিপরীতে এক লাখ ৩৫ হাজার ১৪ জন পুরুষ ও এক লাখ ২১ হাজার ৪ জন নারী মিলিয়ে ভোটার রয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার ১৮ জন।
রামু উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ৬১ ভোট কেন্দ্রের বিপরীতে ৮১ হাজার ৪১০ জন পুরুষ ও ৭৬ হাজার ৬০৮ নারীসহ ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৫৮ হাজার ১৮ জন।

 

পাঠকের মতামত: