ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

মহেশখালীতে শাপলাপুর চ্যানেল থেকে বালি উত্তোলন বেড়িবাঁধ প্যারাবন হুমকির মুখে

মহেশখালী প্রতিনিধি ::  মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর চ্যানেলে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করায় নদীর দুই পাশে গড়ে ওঠা চর, প্যারাবন ও উপকূল রক্ষার বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। ভেঙে যাচ্ছে চর ও প্যারাবন। জোয়ারের পানির সাথে ভেসে যাচ্ছে নতুন প্যারাবন, বালিয়াড়ি। এতে উপকূলীয়বাসীর মাঝে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। বালিদস্যুর কবল থেকে উপকূলীয় এলাকাকে রক্ষা করতে এলাকাবাসী মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের সুশীল সমাজের কয়েকজন মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ একাধিক কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, কালারমারছড়া ইউনিয়নের চালিয়াতলি গ্রামের ৫/৬ জনের একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে শাপলাপুর চ্যানেলে স্যালো মেশিন ও ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে স্থানীয় জে এম ঘাটস্থ চায়না কোম্পানির নির্মাণাধীন একটি টার্মিনালে বালি সরবরাহ করছে। এছাড়া উত্তোলিত বালি বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে। বালি উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর মহেশখালী থানা পুলিশ নামেমাত্র উক্ত স্থানে অভিযান চালিয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। এর পর দুদিন কাজ বন্ধ করলেও পুনরায় বালি উত্তোলনের কাজ শুরু করেছে। ফলে ওই এলাকায় গড়ে ওঠা বালির চর ভেঙে যাচ্ছে।
পাশাপাশি উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী প্যারাবনও জোয়ারের পানির সাথে তলিয়ে যাচ্ছে। এভাবে বালি তোলা অব্যাহত থাকলে আগামী বর্ষা মৌসুমে উপকূলীয় এলাকা শাপলাপুরসহ পার্শ্ববর্তী বদরখালীর বিভিন্ন অংশ ভেঙে যাওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে শাপলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চকরিয়া নিউজকে জানান, শাপলাপুর চ্যানেল থেকে বালি তোলার বিষয়টি তিনি জানেন না এবং বিষয়টি তাকে কেউ জানায়নি। তবে চ্যানেল থেকে বালি তুললে তেমন ক্ষতি হবে না বলে জানান।
২ নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুচ ছালাম জানান, চ্যানেল থেকে বালি তোলার কারণে নদীর দুই পাড়ে ভাঙনের আশংকা রয়েছে। ইতোমধ্যে প্যারাবনের গাছ জোয়ারের তোড়ে ভেসে যাচ্ছে।
পরিবেশবাদী সংগঠন মহেশখালী উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি জে এইচ এম ইউনুচ চকরিয়া নিউজকে বলেন, মহেশখালী চ্যানেলের শাপলাপুর অংশে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি তোলার বিষটি শুনেছি। এ চ্যানেল থেকে বালি তোলা হলে নদীর দুই পাড়ে অবস্থিত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট তথা প্যারাবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি অবৈধভাবে বালি উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান। এদিকে বালি তোলা অব্যাহত থাকায় তা প্রতিরোধ ও বালি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলাকাবাসী গত ২৮ নভেম্বর মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহেশখালীকে পৃথক স্মারকলিপি দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মহেশখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামিরুল ইসলাম চকরিয়া নিউজকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এসিল্যান্ড মহেশখালীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত: