ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজার শহরে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়ক মেরামত কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন

durnitiএম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার  ॥

কক্সবাজার শহরের আলীর জাহাঁল স্টেশন থেকে রুমালিয়ার ছড়া (গরুর হালদা) পর্যন্ত ১৭০ মিটার প্রধান সড়ক সংস্কার কাজের স্বচ্ছতা ও স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সওজ এর অধীনে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারী বিনা নোটিশে প্রধান সড়ক বন্ধ করে সড়ক সংস্কার কাজ শুরু করেন সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার। সিডিউল বর্হিভুত নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে যেনতেন ভাবে রাতের আধাঁরে আরসিসি ডালাই কাজ চলছে। একই রাস্তায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ ইতোপূর্বে আরো ৬ বার মেরামত করেছে। এতে ব্যয় হয়েছে সরকারের কোটি কোটি টাকা। উন্নয়নের নামে সরকারী অর্থ লুটপাটকারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্তাব্যক্তি এবং সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসি।

জানা গেছে, পর্যটন শহরের প্রধান সড়কের বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গন ও খানাখন্দকে ভরে গেছে। গত বর্ষা মৌসুমে জনগণ চলাচলে চরম দূর্ভোগ সয়েছে। প্রধান সড়কের উন্নয়নের জন্য কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে আলীর জাহাঁল স্টেশন থেকে রুমালিয়ার ছড়া (গরুর হালদা) পর্যন্ত ১৭০ মিটার আরসিসি সড়ক উন্নয়নের জন্য গত বছর দরপত্র আহবান করলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নজরুল কনষ্ট্রাকশন কাজের দায়িত্ব পান। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা।

সরজমিনে দেখাগেছে, ১৯ ফেব্রুয়ারী সকাল ৬টার দিকে প্রধান সড়কের আলীর জাহাঁল স্টেশনে ও রুমালিয়ার ছড়া (গরুর হালদা) এলাকায় বিনা নোটিশে প্রধান সড়কে বাঁশ ও ড্রাম বসিয়ে জন এবং যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। চলছে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। সড়কটি সংস্কার করতে গিয়ে সিডিউল মোতাবেক ঠিকমতো রোলার ব্যবহার ও সড়ক পরিস্কার না করে নিম্নমানের মেগাডম এবং খোয়া-বালু দিয়ে কোনো রকমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি স্থানীয় পাথরও ব্যবহার করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সড়ক সংস্কারে আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ করা হয় গভীর রাতে। পরিমাণ মতো সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে না এবং বালির পরিমাণও অতিরিক্ত দেয়া হচ্ছে। আশ্রয় নেয়া হচ্ছে চরম দুর্নীতি আর অনিয়মের। এতে করে কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কাজের স্থায়িত্ব নিয়েও তারা শংকা প্রকাশ করেন এবং উন্নয়নের নামে সরকারী অর্থ লুটপাটকারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী তুলেন এলাকাবাসি।

স্থানীয় অধিবাসি তাহেরুল ইসলাম, মোঃ মুবিন ও আবদুস চবুর জানান, প্রধান সড়ক মেরামতের ব্যাপারে জরুরী কোন বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেনি সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এই কাজটি কখন শেষ হবে এবং সকল প্রকার যানবাহন বিকল্প কোন সড়কদিয়ে চলাচল করবে সেই বিষয়েও কোন উদ্যোগ না নেয়ায় পথচারীসহ পর্যটকরা চরমভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

কক্সবাজার শহরের প্রতিষ্ঠিত ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম বলেন, পৃথীবির কোথাও জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ মেরামতের নজির নেই। বিশ্বের উন্নত ও সভ্য দেশগুলোতে সড়ক মেরামত কালেজনসাধারণের চলাচলের জন্য বিকল্প সড়ক থাকে। কিন্তু এই সড়কটি মেরামতে তা মানা হয়নি।

তিনি আরো বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি মেরামত হচ্ছে এটা জনগণ খুশি। কিন্তু রাস্তা সংস্কার করতে গিয়ে যদি আরো দুর্ভোগ বেড়ে যায় তাহলে জনগণের করার কিছু থাকে না। এক অংশ করে পর্যাক্রমে সড়ক মেরামত কাজ সম্পন্ন করা যেত। এতে করে পর্যটকসহ স্থানীয় চলাচলে দুর্ভোগ অনেকটা কমে আসতো।

সড়ক মেরামতে অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে না দাবী করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নজরুল কনট্রাকশনের স্বত্ত্বাধিকারী মীর মোহাম্মদ আলী লেমন বলেন, সড়ক মেরামতের কাজটি আগামী একমাস অবিরাম চলবে। জনদুর্ভোগ হলেও জাতীয় স্বার্থে প্রধান সড়কের ওই দুই অংশ বন্ধ রাখা হয়েছে।

কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়–য়া জানান, সামান্য জনদুর্ভোগ হলেও ভগ্নসড়কটি মেরামত হচ্ছে বলে পথচারীদের দুর্ভোগ কমে যাবে।

পাঠকের মতামত: