ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

আরাকান আর্মির হামলায় মিয়ানমারে মেজরসহ ৪ সেনা সদস্য নিহত!

প্রতীকী ছবি

আহমদ গিয়াস : মিয়ানমারের বুচিদং-এ সেদেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক ভয়াবহ সংঘর্ষে একজন মেজরসহ চারজন সেনা সদস্যকে হত্যার দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এসময় নিজেদের পক্ষেও একজন সৈন্য আহত হওয়ার দাবি করে আরাকান আর্মি। শুক্রবার আরাকান আর্মির ফেসবুক পেজে এ খবর প্রকাশের কথা জানায় সেদেশের গণমাধ্যম ‘ইরাবতি’।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে শুক্রবার সেদেশের গণমাধ্যম ‘ইরাবতি’ জানায়, বৃহস্পতিবার বিকালে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তবর্তী রাখাইনের বুচিদং ও শিনের পেলেটওয়া অঞ্চলের মধ্যবর্তী এলাকায় এ সংঘর্ষ ঘটে। ঘটনার পর সেনাবাহিনীর নিহত এক মেজরের মৃতদেহ হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানায় গ্রামবাসী। গ্রামবাসীর মতে, এ সংঘর্ষে বিদ্রোহী আরাকান আর্মিরও অন্তত ডজনখানেক সদস্য নিহত হয়।
তবে কাচিনে অবস্থিত আরাকান আর্মির সদর দপ্তর থেকে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিতে তাদের পক্ষে একজন আহত ও সেনাবাহিনীর একজন মেজর ও আরো ৩ জন সৈনিককে হত্যার কথা জানানো হয়। প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব চলাকালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা হঠাৎ করে আরাকান আর্মির সদস্যদের উপর চড়াও হলে এ সংঘর্ষ শুরু হয় বলে দাবি করা হয়। তবে এ বিষয়ে মিয়ানমার আর্মির তরফ থেকে শনিবার পর্যন্ত কোন বক্তব্য আসেনি।
খবরে আরো বলা হয়, গত অক্টোবর মাস থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাথে সেদেশের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘর্ষ ক্রমশ: বেড়েই চলছে। এমনকি একই সময়ে একাধিক স্থানেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। আর এসব সংঘর্ষের ঘটনায় রাখাইনের এই স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী সাম্প্রতিককালে অনেক শক্তিশালী হয়ে ওঠেছে বলে ধারণা স্থানীয়দের। ইতোমধ্যে আরাকান আর্মি শিন রাজ্যে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
আরাকান আর্মি তাদের ফেসবুক পেইজে দাবি করেছে, তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনী-টাটমাডো’র ৫৪১ নং পদাতিক ব্যাটালিয়নের একজন কমান্ডার ও আরো তিনজন সৈন্যকে ‘খতম’ করেছেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে অস্বীকারকারী সেদেশের ৮টি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর একটি আরাকান আর্মি। আরাকান আর্মি এসব সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সম্মিলিত সংগঠন ‘নর্থান এলায়েন্সে’রও সদস্য।
আরাকানের ম্রো-অক রাজ বংশের পতনের’ ২৩৩তম বার্ষিকী স্মরণ করতে গিয়ে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পুলিশের গুলীতে প্রাণ হারায় ৭ জন রাখাইন জাতীয়তাবাদী। এরপরই আরাকান আর্মি সেনাবাহিনীর উপর হামলা জোরদার করে। পাশাপাশি কাচিন, টাং, শিনের অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথেও সংঘর্ষ চলছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর। এসব সংঘর্ষের কারণে রাখাইনসহ মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতি এখন অস্থিতিশীল।

পাঠকের মতামত: