ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

লামায় মাঠ গোছাচ্ছে আওয়ামী লীগ, তৎপরতা নেই বিএনপি’র

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ::    একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সারা দেশে বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ। তার বাহিরে নেই বান্দরবান ৩০০নং আসনের ৭টি উপজেলা। যদিও এখনো কোন দলই তাদের প্রার্থী চুড়ান্ত করেনি কিন্তু স্ব-স্ব প্রার্থীর সমর্থক ও দলের কর্মীরা বসে নেই। পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে মাঠ গোছাচ্ছে এবং দলীয় আভ্যন্তরিক সাংগঠনিক কাঠামো ঠিক করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

জেলার সবচেয়ে জনবহুল লামা উপজেলায় নির্বাচনী আমেজ পড়েছে সবচেয়ে বেশী। গুরুত্ব বিবেচনা করে জেলা ও উপজেলা নেতারা দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা করছে। নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেলেও বিএনপি’র তেমন কোন কর্মসূচী দেখা যায়নি।

বান্দরবান ৩০০নং আসন থেকে এবার আওয়ামীলীগ ৯, বিএনপি’র ১২ ও স্বতন্ত্র থেকে ১জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এবছরই বিগত সকল রেকর্ডকে ছাড়িয়ে সবচেয়ে বেশী মনোনয়ন ফরম নিয়েছে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই বিষয়টিকে দূর্বল সাংগঠনিক কাঠামোর বহিপ্রকাশ বলে বিবেচনা করেছেন।

উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে, বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমান লামা উপজেলা আওয়ামীলীগের মাঠ পর্যায়ের অবস্থান অনেক মজবুত। বর্তমান সরকারের হাত ধরে বান্দরবান ৩০০নং আসনের ৫ বারের এমপি ও প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং টানা ১০ বছর যে ইর্ষান্বিত উন্নয়ন করেছেন জনগণ তা বিবেচনায় আওয়ামীলীগকে পুণরায় ক্ষমতায় আনতে তাদের মূল্যবান ভোটটি নৌকায় দিবেন। এছাড়া উপজেলা থেকে শুরু করে ওয়ার্ড ও ইউনিট পর্যায়ে প্রতিটি স্তরে শক্তিশালী কমিটি রয়েছে তাদের। যেখানে মাঠ পর্যায়ের জনপ্রিয় মানুষ গুলোকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, লামা উপজেলা থেকে সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে নৌকার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বান্দরবান আসনটি ৬ষ্ঠ বারের মত নৌকাকে জয়যুক্ত করে প্রধানমন্ত্রী ও বীর বাহাদুরকে উপহার দিতে চাই।

এদিকে দলীয় প্রার্থী চুড়ান্ত হলে মাঠে নামতে চায় বলে মতপ্রকাশ করেছেন লামা উপজেলা বিএনপি’র দুই অংশের নেতারা। তারা জানান, নির্বাচন আচরণ বিধিমালা মেনে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। কেন্দ্র যাকে নমিনেশন দেবে তার পক্ষে কাজ করবেন বলেও তারা অভিমত ব্যক্ত করেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিএনপি’র দুইভাগে বিভক্তির বিষয়ে বলেন, সময়ে প্রয়োজন ও ধানের শীষের বিজয়ের জন্য একসাথে কাজ করবে তারা। বিএনপি’র নেতারা একটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচন আচরণ বিধিমালা মানছেনা বলেও জানান। নির্বাচনের জন্য তারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দাবী করেন। উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আমির হোসেন বলেন, জনগণ ভোট দিতে পারলে ৩০ ডিসেম্বর বুঝা যাবে কোন দলের জনপ্রিয়তা কতটুকু।

উপজেলা জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শরিক দল হিসেবে তারা আওয়ামীলীগ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন।

তফসিল ঘোষণার পর থেকে সব দলের সকল প্রকার পোস্টার, বিলবোর্ড, লিপলেট ও ব্যানার অপসারণের কথা থাকলেও লামা উপজেলায় কিছু কিছু স্থানে এখনো পোস্টার, বিলবোর্ড, লিপলেট ও ব্যানার দেখা যাচ্ছে। এইসব অপসারণের জন্য নির্বাচন কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেছে সাধারণ মানুষ। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নববিন্দু নারায়ণ চাকমা দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

সুষ্ঠ, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য উপজেলার সবকয়টি ভোট কেন্দ্র উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি পুলিশ ও বিজিবিকে সাথে নিয়ে পরিদর্শন করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে এই কর্মকর্তা জানান। সবধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক পুলিশ বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন, লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা।

পাঠকের মতামত: