ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম জি.এম রহিম উল্লাহর জানাজায় বক্তব্য নিয়ে এম.পি কমলের বিবৃতি

বার্তা পরিবেশক ::

কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জি.এম রহিম উল্লাহর নামাজে জানাজায় আমার বক্তব্য নিয়ে কতিপয় ব্যক্তি বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মূলতঃ যারা বিভ্রান্তি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা নিজেরাই অমানবিকতার এবং অনৈসলামিকতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। জনাব জি.এম রহিম উল্লাহর আকস্মিক মৃত্যুতে কক্সবাজার জেলার সর্বমহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। কক্সবাজারে জানাজায় সর্বদলের এবং মহলের প্রায় ৫০হাজারেরও অধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে।

জানাজায় অনেকের মধ্যে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান চেয়ারম্যান ও জেলা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লেঃ কর্ণেল (অবঃ) ফোরকান আহম্মদও বক্তব্য রাখেন। সবার বক্তব্যে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। জনাব জি.এম রহিম উল্লাহর সাথে আমার বিশ^বিদ্যালয় জীবনে পরিচয়। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে উপজেলা পরিষদের সভায় আমরা একসাথে কাজ করেছি। পারিবারিক অনেক বিষয়েও আমাদের মধ্যে কথাবার্তা হত।

আজকাল কত নেতারা রাতারাতি বড়লোক হয়ে যায়। তারও বড়লোক হওয়ার সুযোগ ছিল ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত। অবাকের বিষয় কক্সবাজার শহরে তার পরিবারের থাকার কোন জায়গা নাই। বাড়িওয়ালা নোটিশ দিয়েছে ৩(তিন) মাসের মধ্যে বাসা ছেড়ে দিতে হবে। চার সন্তান নিয়ে তার পরিবার যাবে কোথায়? থাকবে কোথায়? একজন উপজেলা চেয়ারম্যানের পরিবারের এত দূর্দশা সবার জন্য দুঃখজনক। ইসলামের খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) বলেছিলেন “আমার সময়ে সুদুর বাগদাদের একটি ছাগলও যদি খাদ্য চিকিৎসায় কষ্ট পায় মহান আল্লাহর কাছে সেজন্য আমাকে জবাবদিহি করতে হবে।” আমিও মনে করি আমার সময়ে যদি একজন জন প্রতিনিধির এত কষ্ট হয় মহান আল্লাহর কাছে তার জন্য আমাকে জবাবদিহি করতে হবে।

মরহুমের সাথে দেখা হলে সব সময় তার স্বাস্থ্যের কথা আমাকে বলতেন। মৃত্যুর ২দিন আগেও টেলিফোনে তার কথাবার্তায় মনে হয়েছে তিনি বুকের কষ্টে ভুগছেন। তিনি বলতেন আমার ২ বছরের ১ ছেলে সন্তান আছে। তুমি এম.পি থাকা অবস্থায় আমার যদি কখনো মৃত্যু হয় আমার নামে আমার গ্রামে হলেও একটি সড়কের নামকরণের ব্যবস্থা করিও। মানুষটির সাথে আমার রাজনৈতিক মতাদর্শের বিভক্তি থাকলেও আমরা একজন অন্যজনকে সম্মান করতাম।

জানাজায় আমার কথা নিয়ে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন তারা জনবিচ্ছিন্ন ও মনোনয়ন বঞ্চিত। তাদেরকে মানুষ কোন দিন জন সেবায় পায়নি। বিগত ১০ বছরের বন্যায় তাদেরকে মানুষ কখনো দেখেনি। আলেম ওলামাদের পক্ষে তারা কোনদিন কথা বলেনি। বঙ্গবন্ধু ও আমার পিতা আলেম সমাজকে খুব সম্মান করতেন। মানুষকে সম্মান করা আমার নৈতিক দায়িত্ব। যা বঙ্গবন্ধু ও আমার পিতা থেকে শিখেছি।

মাত্র সাড়ে ৪ বছরে শিক্ষার জন্য ১৯টি নতুন হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেছি। মসজিদ, মাদরাসা, মন্দির, কবরস্থান ও শ্মশানের উন্নয়নে কাজ করেছি। প্রায় ৮ হাজার ছেলে-মেয়েকে চাকুরী দিয়েছি। শত শত গরীব মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের চিকিৎসা করেছি। শত শত গরীব মেয়েদের বিবাহের দায়িত্ব নিয়েছি। হাজার হাজার মানুষের ঘর বেঁধে দিয়েছি। আমার এলাকার উপজেলা চেয়ারম্যান যে দলের হোক না কেন ঠিকানা বিহীন থাকবে এটা আমি মেনে নিতে পারি না।

আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তার পরিবারের জন্য ১টি জমির ব্যবস্থা করে দিব ইনশাআল্লাহ। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহতালাহ যাতে আমাকে সেই সুযোগ দেয় সকলের কাছে দোয়া কামনা করছি। এভাবে সকলের দায়িত্ব পালনে যাতে আল্লাহ আমাকে সুযোগ দেয় সেই কামনা করছি। ইতিপূর্বে পবিত্র কাবা শরীফের শ্রদ্ধেয় মুফতিকে সম্মান সূচক হিসেবে আমি আমার সীমিত সামর্থ্যরে মধ্যে অত্যন্ত মূল্যবান জমি দান করেছি।

তবে এ জানাজায় কিছু কিছু বক্তা মরহুমকে পুলিশী হয়রানীর যে অভিযোগ তুলেছে তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জনাব জি.এম রহিম উল্লাহর দায়িত্ব পালনে সরকারের কোন বাধা ছিল না এবং তিনি শান্তিপূর্ণভাবে প্রায় প্রতিদিন তার দাপ্তরিক কাজ কর্ম উপজেলা পরিষদে বসে চালিয়েছেন। বিরোধী দলের কয়েক নেতা জানাজার মাঠে উসকানীমূলক যে কথাগুলো বলেছেন তা মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত।

পাঠকের মতামত: