ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

বৃহস্পতিবারের মধ্যে চূড়ান্ত হতে পারে মহাজোটের আসন বণ্টন

ডেস্ক নিউজ ::  আওয়ামী লীগের লোগোবিশাল জোট গড়েই নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের মাঠে আবারও মহাজোট নিয়েই আবির্ভূত হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন এ জোট। দলীয় মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। এখন চলছে জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে হিসাব-নিকাশ। শরিকরা যার যার আসন সংখ্যা বাড়াতে দর-কষাকষি চালাচ্ছে। তবে পর্দার আড়ালেই চলছে এসব কর্মকাণ্ড। আগামী বৃহস্পতিবারের (২২ নভেম্বর) মধ্যেই জোটের শরিকদের আসন বণ্টন চূড়ান্ত হতে পারে।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, জাতীয় পার্টি প্রথমে ১০০টি আসন দাবি করলেও তা থেকে প্রথমে ৫০ এবং সর্বশেষ ৪৬টি আসনে এসে অনঢ় রয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাদের সর্বোচ্চ ৩৬টি আসন দিতে চায়। গত দুই দিন ধরে এ নিয়ে দুই দলে আলোচনা চলছে। মূল জোট ১৪ দলের শরিকদের পক্ষ থেকে বেশি আসনের দাবি রয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে।
জাসদ (ইনু) এবারও আগের মতো ছয়টি আসন দাবি করছে। তবে, ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ তিনটি আসন দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। আসন ভাগাভাগি নিয়ে জানতে চাইলে জাসদ (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গত ২০১৪ সালের নির্বাচনে তারা ছয়টি আসন পেয়েছিলেন। এবার তার চেয়ে বেশি প্রত্যাশা করছেন। কিন্তু তাদের দুই জন সংসদ সদস্য এবার জাসদের (আম্বিয়া) অন্য অংশে অবস্থান নিয়েছেন বিবেচনায় তাদের আসন কম দেওয়া হতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জাসদের ওই অংশ নিবন্ধিত না। কাজেই তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে আবেদনও তৈরি করতে পারেনি। তাই তাদের অংশে কতজন এমপি এই বিবেচনায় জাসদকে আসন কম দেওয়ার বিষয়টি যৌক্তিক নয়।’ আসন নিয়ে তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে জাসদ অন্য অংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তারা পাঁচটি আসন প্রত্যাশা করছেন। তাদের দু’জন সংসদ সদস্য রয়েছেন। আরও তিনজন জেতার মতো প্রার্থী রয়েছেন। তিনি জানান, আসন নিয়ে তাদের সঙ্গে এখনও চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি।
ওয়ার্কার্স পার্টিও আগের মতোই ছয়টি আসন প্রত্যাশা করছে। দলটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তারা ১০টি আসন চেয়েছেন। এই ১০ জনই জেতার মতো প্রার্থী। আর জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা মনোনয়ন পেলে ওই আসন ওয়ার্কার্স পার্টি ছেড়ে দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তাদের সঙ্গেও আসন বণ্টন প্রসঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। আগামী বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।
গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদত হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তারা পাঁচটি আসন দাবি করেছেন। তবে এখনও এ নিয়ে আলোচনা এগোয়নি। দলটির একটি সূত্র জানায়, অন্তত দুটি আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন তারা। এর একটি কুমিল্লায় ডা. শাহাদতকে, অপরটি সুনামগঞ্জ-৪ আসনে। সুনামগঞ্জ-৪ আসনটি গণতন্ত্রী পার্টির নিজস্ব আসন বলে মনে করেন তারা।
এবার আসন চেয়েছে কমিউনিস্ট কেন্দ্রও। দলটির পক্ষ থেকে তিনটি আসন দাবি করা হয়েছে, যার একটি আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম এবং আরেকটি যুগ্ম আহ্বায়ক অসিত বরণ রায়ের জন্য। ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তাদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হবে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জোটের শরিকদের জেতার মতো প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। এ নিয়ে আগেও আলোচনা হয়েছে, এখনও আলোচনা চলছে। আশা করছি, এ সপ্তাহেই আসন বণ্টন চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’
এদিকে ১৪ দলের অন্য শরিক সাম্যবাদী দল, ন্যাপ (মোজাফফর) এবং বাসদসহ (রেজা) অন্য দলগুলো আসনের দাবি জানালেও সেগুলো আমলে নেওয়া হচ্ছে না বলে আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়। কয়েকদিন আগে ১৪ দলের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় সাধারণ সম্পাদক নির্ভর একটি দলের শীর্ষ নেতার ‘আমি একবার এমপি হতে চাই’ বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘জামানত হারাতে পারেন এমন কাউকে কোনোভাবেই মনোনয়ন দেওয়া হবে না।’

পাঠকের মতামত: