ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

রাফিয়া আলম জেবা : অদম্য এক পিইসি পরীক্ষার্থী লিখছে পা দিয়ে

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::   কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাহ ইউনিয়নের ভোমরিয়া ঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী রাফিয়া আলম জেবা। জেবা এ বছর চলমান পিইসি (প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী) পরীক্ষার্থী। অদম্য মনোবল তার। হার নামানা এক শিশু। স্বচক্ষে নাদেখলে বিশ্বাস করা যাবেনা। জেবা’র দূ’টি হাতই নেই। পায়ে লেখা শিখেছে। কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁহ আদর্শ কেজি স্কুল পিইসি পরীক্ষা কেন্দ্রে সম্পূর্ণ পায়ে লিখে পিইসি পরীক্ষা দিচ্ছে। ঈদগাঁহ ইউনিয়নের পশ্চিম ভোমারিয়া ঘোনা গ্রামের নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের কৃষক শাহ আলম ও গৃহিনী ছফুরা আক্তারের কণ্যা রাফিয়া আলম জেবা। ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর জেবা’র জন্ম। ভোমারিয়া ঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাব্বির আহামদ জানান, জেবা’র পড়া-লেখার প্রতি খুব আগ্রহ। এবারের সরকারি চুড়ান্ত মডেল টেষ্ট পরীক্ষায় জেবা পায়ে লিখে জিপিএ “এ” পেয়েছে। জেবা একজন জন্মগতভাবে পূর্ণ প্রতিবন্ধী হলেও কোন প্রতিবন্ধী ভাতা পায়না। সরেজমিনে প্রতিবন্ধী জরীপ করে তালিকাভুক্ত করা সমাজসেবা অফিসের নিয়মিত রুটিন কাজ হলেও কক্সবাজার সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসে পূর্ণ প্রতিবন্ধী রাফিয়া আলম জেবা’র কোন তথ্য নেই। তবে বিদ্যালয়ের অন্যান্য স্বাভাবিক শিক্ষার্থীর মতো জেবাও বিদ্যালয় থেকে নিয়মিত উপবৃত্তি পায়। কক্সবাজার সদর উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ বেলাল হোসাইন জানান, প্রতিবন্ধী হিসাবে বিধি মোতাবেক রাফিয়া আলম জেবাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রত্যেক পরীক্ষায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৩০ মিনিট সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়। প্রাথমিক শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও পশ্চিম চৌফলদন্ডী হাকিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দ্বীন মুহাম্মদ জানান, রাফিয়া আলম জেবা’র মতো শিক্ষার্থীরা সরকারি ও বিত্তশালীদের পৃষ্টপোষকতা পেলে শিক্ষায় অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারবে। অথচ আমাদের সমাজে এ ধরনের নাগরিকদের প্রতি প্রায়শ উদাসীনতা দেখানো হয়।
জেবা জিপিএ-৫ পেয়ে পিইসি উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য সকলের দোয়া ছেয়েছেন। রাফিয়া আলম জেবাকে দেখলে মনে হয়, জেবাই অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ। সাবাশ জেবা! পেছনে থাকাবনা। এগিয়ে যাও দূরন্ত গতিতে। সমস্ত প্রতিকূলতা হার মানুক, তোমার অদম্য সাহস, শক্তি, ইচ্ছা আর মনোবলের কাছে। অজস্র ভালোবাসা তোমার জন্য।

পাঠকের মতামত: