ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

মামলা করেও বন্ধ করা যাচ্ছেনা পাথর উত্তোলন

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ::   বান্দরবানের লামা উপজেলার প্রাকৃতিক ঝিরি-ঝর্ণা থেকে অবাধে পাথর উত্তোলন বন্ধের জন্য স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বান্দরবান সিনিয়র সহকারী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ইং বৃহস্পতিবার জনস্বার্থে মামলা দায়ের করেছেন লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা শিমুল জালাই ত্রিপুরা। দায়ের করা মামলার প্রায় ২১ মাস পেরিয়ে গেলে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি না থাকায় কয়েকজন বিবাদী পুণরায় অবাধে পাথর উত্তোলন করছে।

সিভিল অপর-২০/১৭ মামলায় বিবাদীরা হলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), লামা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), লামা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা, পাথর ব্যবসায়ী প্রদীপ কান্তি দাশ ও আলী হোসেন।

এদিকে উক্ত মামলার বিবাদী ও লামা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কান্তি দাশ কাউকে তোয়াক্কা না করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে পুণরায় লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কাঁঠালছড়া এলাকা থেকে পাথর উত্তোলন করে পরিবেশের বারটা বাজাচ্ছে। এছাড়া ব্রিকফিল্ডের নামে অবাধে পাহাড় কাটার অভিযোগও রয়েছে প্রদীপ কান্তি দাশের বিরুদ্ধে।

স্থানীয়রা বলেন, আইনের যথাযত প্রতিপালন না থাকায় অপরাধীরা আইন মানছেনা। কাগজে কলমে পাথর পাচার বন্ধ হলেও প্রদীপ সিন্ডিকেট প্রতিনিয়ত পাথর পাচার করছে। সবকিছু চলে ওপেনসিক্রেট সিস্টেমে। পার্বত্য এলাকাকে সরকার পর্যটন জোন ঘোষণা করেছে। এভাবে পাথর উত্তোলন হলে পাহাড় ও ঝিরি ঝর্ণার সৌন্দর্য্য হারিয়ে যাবে।

সূত্র জানায়, সেই সময় পাথর উত্তোলন বন্ধে “কেন স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন আদালত। বিবাদীদের নোটিশ প্রাপ্তির ১২ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে নোটিশে।

মামলার বাদী শিমুল জালাই ত্রিপুরা জানান, লামার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নে পাহাড়ী ঝিরি ও ঝর্ণা থেকে নির্বিচারে পাথর উত্তোলনের ফলে ঝিরি ঝর্ণাগুলোর পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। পাথর উত্তোলন বন্ধ করা না গেলে পানির জন্য এলাকায় হাহাকার সৃষ্টি হবে। এজন্য জনস্বার্থে পাথর উত্তোলন, পাচার বন্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আমি আদালতে মামলাটি করেছি। কিন্তু এখনো কোন সুরাহা হয়নি। এদিকে পাথর ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত পাথর নিয়ে যাচ্ছে।

লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, পাথর পাচারের খবর পেলে আমরা আইনী পদক্ষেপ নিচ্ছি।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি বলেন, বেশ কিছু স্থানে পাথর উত্তোলন হচ্ছে এমন সংবাদ আমাদের কাছে আছে। স্থান গুলো দুর্গম হওয়ায় দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া যাচ্ছেনা। কাঁঠালছড়া এলাকায় পাহাড় কেটে পাথর উত্তোলন ও ব্রিকফিল্ড তৈরির সংবাদ পেয়েছি। দ্রুত পদক্ষেপ নেব।

উল্লেখ্য, লামা ও আলীকদম উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঝিরি ঝর্ণা খোদাই করে নির্বিচারে প্রাকৃতিক পাথর উত্তোলনের মহোৎসবে মেতেছে সংঘবদ্ধ কয়েকটি চক্র।

পাঠকের মতামত: